অতিমাত্রার প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব না থাকায় বোরোর উৎপাদন ঘিরে স্বপ্ন জেগেছিল তাহিরপুরের হাওরে। মৌসুমের শুরু থেকে সবই ছিল ঠিকঠাক। মাঠের ফসল গোলায় তোলার সময় যখন ঠিক, সে সময় একের পর এক ধাক্কা খাচ্ছে এখানকার প্রান্তিক কৃষকের স্বপ্ন।
সুনামগঞ্জের সবচেয়ে বড় ধান ও চালের জোগানদাতা হাওরবেষ্টিত তাহিরপুর উপজেলা। বোরো-আমন দুটিতেই অন্য এলাকাগুলোর তুলনায় অধিক জমি আবাদ করেন এখানকার কৃষক। তাই ধান ও চালের জোগানও তারাই দেন বেশি। চলতি বোরো মৌসুমের শুরু থেকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বোরো জমি প্রস্তুত ও আবাদ শুরু করতে বেগ পেতে হয়নি চাষিদের। যখন জমির ধান ঘরে তোলার সময়, তখন সংকট যেন ঘিরে ধরেছে বোরোর বাড়ি তাহিরপুরকে।
উপজেলার হাওরাঞ্চলের চাষিদের পিছু ছাড়ছে না দুর্যোগ। এর মাঝে সবচেয়ে বিপাকে আছেন তাহিরপুরের বোরোচাষিরা। অনাবৃষ্টির কারণে হাওরের প্রাকৃতিক উৎসগুলো শুকিয়ে আছে। কৃত্রিম সেচের সুব্যবস্থা না থাকায় যথেষ্ট পরিমাণ সেচ দেওয়া যাচ্ছে না বোরো জমিতে। পানির সংকট থাকায় সপ্তাহখানেক আগে থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বোরো জমিতে শুরু হয় মাজরা পোকার আক্রমণ। এরই ধারাবাহিকতায় বিস্তার ঘটে ধানগাছের পাতা পোড়া রোগের। এরই মধ্যে এ সমস্যায় হিমশিম খাচ্ছেন স্থানীয় বোরোচাষিরা।
এদিকে রোববার রাতে আকস্মিক ঘূর্ণিঝড় ও শিলাবৃষ্টির দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বোরো ফসলের ক্ষেত। উপজেলার নান্দিয়ার, পানা, বনুয়ার, মাটিয়ান, শনির, মহালিয়া, নোয়াল ও লতিবপুরের হাওরাঞ্চলে আঘাত হানে প্রবল বাতাসের ঝাপ্টা আর ঘূর্ণিঝড়। এর পর কিছু সময় পর থেকেই শুরু হয় প্রবল শিলাবৃষ্টি। রাতের ওই এক দফা আঘাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বোরো ফসলের।
নান্দিয়ার হাওরপার ছিলানি তাহিরপুর গ্রামের মাফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল জানান, এবার ৮ কিয়ার জমি (৩০ শতকে এক কিয়ার) বর্গাচাষে বড় ভাই শফিকুল ইসলামকে দিয়েছিলেন। সোমবার সকালে ১০ জন ধান কাটার শ্রমিক নিয়ে মাঠে গিয়ে স্তব্ধ হয়ে যান তিনি। মাঠে ফসলের বিধ্বস্ত অবস্থা দেখে কাজ না করেই ফিরে যান শ্রমিকরা। ঝড়ের ঝাপ্টা আর শিলার আঘাতে জমির অধিকাংশ স্থানের ধানগাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ছিলানি তাহিরপুর গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম, কামরুজ্জামান, আবদুল মতিন, নাজিম উদ্দিন ও এখলাছ উদ্দিনের অবস্থাও একই। তারা প্রত্যেকে পৃথকভাবে ৪ থেকে ৫ কিয়ার করে জমিতে বোরো আবাদ করেছিলেন। তাদের সবার জমির ধান নষ্ট হয়েছে। শিলার আঘাতে কোথাও কোথাও মাটি থেকে স্বমূলে উপড়ে এসেছে ধানগাছ।
পানা হাওরপারের কৃষক পাঠাবুকা গ্রামের কৃষক রিপসান হাবিব জানান, তিনি পানার হাওর ও লতিবপুরের হাওরে মোট ২৪ কিয়ার বোরো জমি চাষাবাদ করেছেন। সোমবার সকালে জমিতে না গেলে বুঝতেই পারতেন আগের রাতের শিলাবৃষ্টির তাণ্ডব কতটা ভয়াবহ ছিল। তার মোট আবাদ করা জমির মধ্যে প্রায় ৪ আনা অংশের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
শনির হাওরপারের ভাটি তাহিরপুর গ্রামের কৃষক এবাদুল ইসলাম বলেন, শনির হাওরের টানি জমিগুলোতে শিলাবৃষ্টির কারণে অন্তত দুই আনা জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাটিয়ান হাওর উন্নয়ন কমিটির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, মাটিয়ান হাওরের অন্তত ১০ ভাগ জমির বোরো ধান একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ল ইসল ম র হ ওর ব দ কর উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
চব্বিশ নিয়ে যেন একাত্তরের মতো ‘চেতনা ব্যবসা’ না হয়: ফুয়াদ
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, ‘‘জুলাই, ২৪ নিয়ে যেন একাত্তরের মতো ‘চেতনা ব্যবসা’ না হয়। জুলাই থেকে শিখে আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়বো। যারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না তাদের বাস্তবতা অওয়ামী লীগের মতো হবে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) দুপুরে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের ড. আতহার উদ্দীন মিলনায়তনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে চিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে তিনি চিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন।
আমার বাংলাদেশ পার্টির পটুয়াখালী জেলা শাখার আহ্বায়ক প্রফেসর ড. এএসএম ইকবাল হোসাইনের সভাপতিত্বে চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. মেজর আব্দুল ওহাব মিনার ও সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী নাসীর। আলোচনা শেষে উপস্থিত সবাই জুলাই আন্দোলনের প্রদর্শিত চিত্র ঘুরে দেখেন।
ইমরান//