Samakal:
2025-06-15@11:26:11 GMT

বোরোতে ঝড়-শিলাবৃষ্টির হানা

Published: 7th, April 2025 GMT

বোরোতে ঝড়-শিলাবৃষ্টির হানা

অতিমাত্রার প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব না থাকায় বোরোর উৎপাদন ঘিরে স্বপ্ন জেগেছিল তাহিরপুরের হাওরে। মৌসুমের শুরু থেকে সবই ছিল ঠিকঠাক। মাঠের ফসল গোলায় তোলার সময় যখন ঠিক, সে সময় একের পর এক ধাক্কা খাচ্ছে এখানকার প্রান্তিক কৃষকের স্বপ্ন।
সুনামগঞ্জের সবচেয়ে বড় ধান ও চালের জোগানদাতা হাওরবেষ্টিত তাহিরপুর উপজেলা। বোরো-আমন দুটিতেই অন্য এলাকাগুলোর তুলনায় অধিক জমি আবাদ করেন এখানকার কৃষক। তাই ধান ও চালের জোগানও তারাই দেন বেশি। চলতি বোরো মৌসুমের শুরু থেকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বোরো জমি প্রস্তুত ও আবাদ শুরু করতে বেগ পেতে হয়নি চাষিদের। যখন জমির ধান ঘরে তোলার সময়, তখন  সংকট যেন ঘিরে ধরেছে বোরোর বাড়ি তাহিরপুরকে।
উপজেলার হাওরাঞ্চলের চাষিদের পিছু ছাড়ছে না দুর্যোগ। এর মাঝে সবচেয়ে বিপাকে আছেন তাহিরপুরের বোরোচাষিরা। অনাবৃষ্টির কারণে হাওরের প্রাকৃতিক উৎসগুলো শুকিয়ে আছে। কৃত্রিম সেচের সুব্যবস্থা না থাকায় যথেষ্ট পরিমাণ সেচ দেওয়া যাচ্ছে না বোরো জমিতে। পানির সংকট থাকায় সপ্তাহখানেক আগে থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বোরো জমিতে শুরু হয় মাজরা পোকার আক্রমণ। এরই ধারাবাহিকতায় বিস্তার ঘটে ধানগাছের পাতা পোড়া রোগের। এরই মধ্যে এ সমস্যায় হিমশিম খাচ্ছেন স্থানীয় বোরোচাষিরা। 
এদিকে রোববার রাতে আকস্মিক ঘূর্ণিঝড় ও শিলাবৃষ্টির দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বোরো ফসলের ক্ষেত। উপজেলার নান্দিয়ার, পানা, বনুয়ার, মাটিয়ান, শনির, মহালিয়া, নোয়াল ও লতিবপুরের হাওরাঞ্চলে আঘাত হানে প্রবল বাতাসের ঝাপ্টা আর ঘূর্ণিঝড়। এর পর কিছু সময় পর থেকেই শুরু হয় প্রবল শিলাবৃষ্টি। রাতের ওই এক দফা আঘাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বোরো ফসলের।
নান্দিয়ার হাওরপার ছিলানি তাহিরপুর গ্রামের মাফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল জানান, এবার ৮ কিয়ার জমি (৩০ শতকে এক কিয়ার) বর্গাচাষে বড় ভাই শফিকুল ইসলামকে দিয়েছিলেন। সোমবার সকালে ১০ জন ধান কাটার শ্রমিক নিয়ে মাঠে গিয়ে স্তব্ধ হয়ে যান তিনি। মাঠে ফসলের বিধ্বস্ত অবস্থা দেখে কাজ না করেই ফিরে যান শ্রমিকরা। ঝড়ের ঝাপ্টা আর শিলার আঘাতে জমির অধিকাংশ স্থানের ধানগাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ছিলানি তাহিরপুর গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম, কামরুজ্জামান, আবদুল মতিন, নাজিম উদ্দিন ও এখলাছ উদ্দিনের অবস্থাও একই। তারা প্রত্যেকে পৃথকভাবে ৪ থেকে ৫ কিয়ার করে জমিতে বোরো আবাদ করেছিলেন। তাদের সবার জমির ধান নষ্ট হয়েছে। শিলার আঘাতে কোথাও কোথাও মাটি থেকে স্বমূলে উপড়ে এসেছে ধানগাছ।
পানা হাওরপারের কৃষক পাঠাবুকা গ্রামের কৃষক রিপসান হাবিব জানান, তিনি পানার হাওর ও লতিবপুরের হাওরে মোট ২৪ কিয়ার বোরো জমি চাষাবাদ করেছেন। সোমবার সকালে জমিতে না গেলে বুঝতেই পারতেন আগের রাতের শিলাবৃষ্টির তাণ্ডব কতটা ভয়াবহ ছিল। তার মোট আবাদ করা জমির মধ্যে প্রায় ৪ আনা অংশের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
শনির হাওরপারের ভাটি তাহিরপুর গ্রামের কৃষক এবাদুল ইসলাম বলেন, শনির হাওরের টানি জমিগুলোতে শিলাবৃষ্টির কারণে অন্তত দুই আনা জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাটিয়ান হাওর উন্নয়ন কমিটির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, মাটিয়ান হাওরের অন্তত ১০ ভাগ জমির বোরো ধান একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল ইসল ম র হ ওর ব দ কর উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপি নেতাকে মারধর: খুলনা সদর থানার সাবেক ওসি কারাগারে

খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফখরুল আলমের করা মামলায় সদর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

রোববার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন হাসান আল মামুন। খুলনা মহানগর দায়রা জজ মো. শরীফ হোসেন হায়দার তার জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এদিকে আদালত চত্বরে থাকা বিএনপি নেতাকর্মীরা মামুনকে লক্ষ্য করে ডিম ও পচা আম নিক্ষেপ করেন। তার শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা। পরে নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেন সেনা সদস্যরা। 

মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ কে এম শহিদুল আলম বলেন, মামলাটিতে উচ্চ আদালতের জামিনে ছিলেন হাসান আল মামুন। উচ্চ আদালতের নির্দেশে রোববার খুলনা মহানগর দায়রা জজ  আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় তার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। আমরা জামিনের বিরোধিতা করি। আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি কে ডি ঘোষ রোডের দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির সমাবেশে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এ সময় তৎকালীন ওসি মামুন নিজেই
ফখরুল আলমকে বেদম মারধর করেন। লাঠির আঘাতে ফখরুল আলমের একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট মামুনের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আদালতে মামলা করেন ফখরুল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ