নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো ধরনের দুর্যোগ-দুর্বিপাক ছাড়াই চলতি বোরো মৌসুমের ফসল ঘরে তুলতে পেরেছেন তাহিরপুরের কৃষকরা। এবার ভরা বর্ষার আগে গবাদি পশুর খাদ্য জোগানে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক বৈরিতা এবং ভূমি দখলের জেরে তাহিরপুরসহ সুনামগঞ্জ জেলার অনেক এলাকাতে কমে গেছে গোচারণভূমি। কান্দা নষ্ট হওয়ায় গবাদি পশুর খাদ্যের প্রাকৃতিক উৎসও নষ্ট হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় প্রতি মৌসুমে বোরো আবাদ ও ধান সংগ্রহের ব্যস্ততা শেষে গোখাদ্যের মজুত নিশ্চিত করতে খড়ের জোগান দেন স্থানীয় কৃষকরা। এর ওপরে নির্ভর করে বছরজুড়ে তাদের গবাদি পশু পালনের সাবলম্বিতা। ভরা বর্ষার আগে তাই পাকা ধান গাছ থেকে পাওয়া খড়ের মজুত নিশ্চিত করেন কৃষক।

বর্ষাকালে তাহিরপুর উপজেলাতে পানিতে ভরপুর থাকে। চারদিকে পানি থাকায় এ অঞ্চলের কোথাও গবাদি পশু চরানোর জন্য ভূমি পাওয়া যায় না। এমন সময় গবাদি পশুর যেন খাদ্য সংকট না হয় সেজন্য খড়ের মজুত জোগান দিতে হয় প্রান্তিক কৃষককে; যার কারণে বাড়িতে রেখে পশু পালন সহজ হয় তাদের জন্য।

গোখাদ্য হিসেবে পরিচিত কাটা ধান গাছের শুকনো খড় রোদে শুকিয়ে হাওর থেকে বাড়িতে এনে স্তূপ দিয়ে রাখা হয়। এ মৌসুমেও গোখাদ্যের সংকট মোকাবিলায় খড় সংগ্রহে ব্যস্ত হাওরাঞ্চলের কৃষক ও গেরস্ত।

হাওরে খড় সংগ্রহে ব্যস্ত কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জান যায়, অনেক বছর পর হাওরপারে এমন বৈশাখ পেয়েছেন তারা। জমির ধান দুর্যোগে নষ্ট হয়নি। মাঝে পোকার আক্রমণ হলেও সময় মতো বৃষ্টি হওয়ায় বিশেষ ক্ষতি হয়নি। ফসলের বাম্পার ফলনের পাশাপাশি ঝড়-বন্যার শঙ্কা কাটিয়ে গোলা ভরেছেন তারা। এখন ভরা বর্ষায় গবাদি পশু পালনের সবচেয়ে জরুরি কর্তব্য গোখাদ্যের মজুত নিশ্চিত করছেন।

শনির হাওরপার ভাটি তাহিরপুর গ্রামের পঙ্কজ রায় বলেন, তাঁর ৫টি গরু আছে। জমি চাষাবাদ করেন সোয়া দুই কিয়ার (৩০ শতকে এক কিয়ার)। এ জমি থেকে এবার ফসল পেয়েছেন প্রত্যাশিত। সেই সঙ্গে যে পরিমাণ খড় জোগান দিতে পেরেছেন তা এ পুরো বর্ষা নিশ্চিন্তে কেটে যাবে।

মাটিয়ান হাওরপারের আনন্দনগর গ্রামের কৃষক ওয়াসিম আহমদ জানান, বিগত বছরগুলোতে হাওরডুবি ও পরবর্তী সময়ে ভয়াবহ বন্যার কারণে গোখাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছিল। তখন তিনি ৭টি গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন। দেড় হাজার টাকা মণ খড় কিনতে বাধ্য হয়েছিলেন। এ বছর তাই পর্যাপ্ত মজুত নিশ্চিত করতে চান।

নোয়াল হাওরের কৃষক হুকুমপুর গ্রামের আবুল কালাম বলেন, এ বছর হাওরে বোর ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। ধান শুকিয়ে গোলায় তোলা শেষ। এখন গরুর খাবার জোগান দিতে ব্যস্ত।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ হ ওরপ র

এছাড়াও পড়ুন:

রংপুরে টাউন হল মিটিং করেছে এনআরবিসি ব্যাংক

এনআরবিসি ব্যাংকের রংপুর জোনের টাউন হল মিটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (৯ আগস্ট ২০২৫) রংপুরের একটি হোটেলে এ মিটিং হয। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. আলী হোসেন প্রধানিয়া।

মিটিংয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ড. মো. তৌহিদুল আলম খান, সিএফও হারুনুর রশীদ, রাজশাহী ও রংপুর জোনাল হেড অসীম কুমার দাসসহ শাখা ও উপশাখার সকল স্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. আলী হোসেন বলেন, “উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে ক্ষুদ্রঋণের প্রসারের মাধ্যমে এনআরবিসি ব্যাংক কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ভবিষ্যতে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষদের জন্য সিএমএসএমই খাতে ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধিতে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হবে।

এসময়, নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিয়মনীতি মেনে স্বচ্ছভাবে ঋণ প্রদান ও ঋণ আদায়ে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন এবং সুশাসন ফিরিয়ে এনে মুনাফা ও গুণগত সম্পদ বৃদ্ধির আহ্বান জানান তিনি। 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ড. মো. তৌহিদুল আলম খান বলেন, “ব্যাংকের বিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ করে বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।”
তিনি উদ্যোক্তা তৈরির উদ্যোগ বাড়ানো, গ্রাহকসেবার মানোন্নয়ন, সুশাসন, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠায় কর্মকর্তাদের সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ