যশোরে অবৈধভাবে সার মজুদ রাখায় ২ লাখ টাকা জরিমানা
Published: 14th, January 2025 GMT
যশোরের অভয়নগরে দুই সার ব্যবসায়ী অবৈধভাবে সার মজুদ রাখায় ভ্রাম্যমাণ আদালত দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছেন। এ সময় ৬৬৮ বস্তা সার জব্দ করা হয়।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলার চেঙ্গুটিয়া বাজারে অভিযান চালিয়ে এ জরিমানা করা হয়। আদালত পরিচালনা করেন অভয়নগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও আব্দুল্লা আল ফারুক।
জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন উপজেলার চেঙ্গুটিয়া বাজারের মেসার্স মোসলেম এন্টারপ্রাইজ ও নিউ মোল্যা এন্টারপ্রাইজে অভিযান পরিচালনা করেন। তাদের গোডাউনে বিভিন্ন প্রকার সার মজুদ করে রাখা হয়েছে বলে আগেই তথ্য ছিল।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, “মেসার্স মোসলেম এন্টারপ্রাইজে ৬৬ বস্তা ডিএপি, ২৫২ বস্তা এমওপি, ৮৩ বস্তা টিএসপি ও ২০ বস্তা ইউরিয়া সার মজুদ করে রাখে এবং নিউ মোল্লা এন্টারপ্রাইজের গোডাউনে ৮০ বস্তা ইউরিয়া সার, টিএসপি ৬৫ বস্তা, ৫৩ বস্তা ডিএপি এবং ৫২ বস্তা এমওপি সার মজুদ করে রাখে। গোপন সংবাদ পেয়ে ওই দুই প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করে আটক করা হয়েছে তাদের।”
ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওই দুই ব্যবসায়ীকে ২ লাখ টাকা জরিমানা, দুই প্রতিষ্ঠানের ৩টি গোডাউন সিলগালা ও ৬৬৮ বস্তা সার জব্দ করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- অভয়নগর উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল ফারুক, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন, নওয়াপাড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান দপ্তরি, অভয়নগর থানার এসআই আশিকুর রহমান।
এ ব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়দেব চক্রবর্তী বলেন, “কেউ অবৈধভাবে সার মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি না করতে পারে তার জন্য আমরা দৃষ্টি রাখছি। যদি কেউ এভাবে মজুদ করে তাহলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।”
ঢাকা/প্রিয়ব্রত/ইমন
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভারী বর্ষণে ভবদহের গ্রামে গ্রামে জলাবদ্ধতা
যশোরের মনিরামপুর, অভয়নগর, কেশবপুর এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে ভবদহ অঞ্চল গঠিত। এ অঞ্চলের অনেক গ্রাম বছরে চার মাস জলাবদ্ধ থাকে। সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণে যশোরের মনিরামপুর ও অভয়নগর উপজেলার ৩০টির বেশি গ্রামে পানি ঢুকেছে। এসব গ্রামের বেশিরভাগ ঘরবাড়ি, ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। নদী দিয়ে ঠিকমতো পানি নিষ্কাশিত না হওয়ায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
ভবদহ এলাকার পানি নিষ্কাশন হয় মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদ-নদী দিয়ে। পলি পড়ে নদীগুলো নাব্য হারিয়েছে। ফলে, ভারী বৃষ্টির পানি সহজে ও দ্রুত নিষ্কাশন হচ্ছে না।
যশোরের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটির আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, যশোরে জুন মাসে স্বাভাবিক গড় বৃষ্টিপাত ধরা হয় ২৯৮ দশমিক ৭ মিলিমিটার এবং জুলাই মাসে ৩০৪ দশমিক ১০ মিলিমিটার। গত জুন মাসে যশোরে ২৯৯ মিলিমিটার এবং চলতি জুলাই মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত ৫১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে, ভবদহ অঞ্চলের ৫২টি বিল প্লাবিত হয়েছে। বিল উপচে পানি ঢুকতে শুরু করেছে আশপাশের গ্রামগুলোতে।
সুন্দলী গ্রামের তন্ময় বিশ্বাস বলেছেন, “উঠোনে প্রায় হাঁটুজল। আরেকটু বাড়লে ঘরে জল উঠে যাবে। ঘরে জল উঠলে রাস্তায় ওঠা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।”
ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক রণজিত বাওয়ালী বলেছেন, “ভবদহের ২১ ভেন্ট স্লুইসগেটের মধ্যে মাত্র ছয়টি গেট খোলা হয়েছে। সবগুলো গেট খুলে দিলে আরো বেশি জল নামত। কিন্তু, পানি উন্নয়ন বোর্ড সব গেট খুলছে না। এলাকার বিলে টাইডল রিভার ম্যানেজমেন্ট (জোয়ারাধার) চালু না করলে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি নেই।”
পানি উন্নয়ন বোর্ডের যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জি বলেছেন, “নদীতে জোয়ারের সময় ভবদহ স্লুইসগেটের ২১ ভেন্টের ওপর চারটি বড় ও ১৫টি ছোট বৈদ্যুতিক যন্ত্র দিয়ে পানি সেচে বের করে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া, ভাটির সময় ছয়টি গেট খুলে দেওয়া হচ্ছে। গেটগুলো দিয়ে প্রচুর পানি বের হচ্ছে। এতে এলাকার পানি দ্রুত সরে যাবে।”
তিনি বলেন, “ভবদহ এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য সেনাবাহিনী আগামী মাসে ছয়টি নদীর ৮১ দশমিক ৫ কিলোমিটার খননে কাজ শুরু করবে। এছাড়া, আমডাঙ্গা খাল সংস্কারের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। দুই-এক মাসের মধ্যে আমডাঙ্গা খাল সংস্কারে কাজ শুরু হবে।”
ঢাকা/প্রিয়ব্রত/রফিক