বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের বিদেশে চিকিৎসার জন্য গেছেন, আর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বিদেশে পালিয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রকাশনা বিষযয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব। 

হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেছেন, ‘‘সমগ্র পৃথিবী দেখেছে, কাতারের রাষ্ট্রীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স বিমান যোগে বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে চিকিৎসার জন্য গিয়েছেন,  আর স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এতেই বোঝা যায়, কার সম্মান কোথায়।’’

আজ মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় সাতক্ষীরার তালা উপজেলা বিএনপি আয়োজিত সদর ইউনিয়ন পরিষদ অডিটোরিয়ামে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। 

আরো পড়ুন:

ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল 
তত্ত্বাবধায়ককে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে অ্যাম্বুলেন্সচালক আটক

কামড় খেয়ে জীবন্ত গোখরা নিয়ে হাসপাতালে সাপুড়ে

তালা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মৃণাল কান্তি রায়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, তালা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও কুমিরা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা, সিনিয়র সহ-সভাপতি এম মহিদুল হক লিটু, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেন, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, তালা উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মির্জা আতিয়ার রহমান, সদস্য সচিব মোস্তফা হোসেন মন্টু, তালা থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান হাফিজ, সদস্য সচিব এস কে ফারুক প্রমূখ।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিব বলেন, ‘‘দীর্ঘ ১৭ বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও শেখ হাসিনা। তিন বারের প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা কিন্তু মহান আল্লাহর রহমতে তারা সেটি পারেননি।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘আগামীতে তারেক রহমানকে নিয়ে বীরের বেশে বেগম খালেদা জিয়া দেশে ফিরবেন এবং সেই অপেক্ষায় রয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মী এবং সমগ্র দেশবাসী।’’
 

ঢাকা/শাহীন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ

‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।

অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।

শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।

কর্মসূচি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ