‘খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে বিদেশ গেছেন, আর হাসিনা পালিয়ে’
Published: 14th, January 2025 GMT
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের বিদেশে চিকিৎসার জন্য গেছেন, আর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বিদেশে পালিয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রকাশনা বিষযয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব।
হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেছেন, ‘‘সমগ্র পৃথিবী দেখেছে, কাতারের রাষ্ট্রীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স বিমান যোগে বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে চিকিৎসার জন্য গিয়েছেন, আর স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এতেই বোঝা যায়, কার সম্মান কোথায়।’’
আজ মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় সাতক্ষীরার তালা উপজেলা বিএনপি আয়োজিত সদর ইউনিয়ন পরিষদ অডিটোরিয়ামে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল
তত্ত্বাবধায়ককে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে অ্যাম্বুলেন্সচালক আটক
কামড় খেয়ে জীবন্ত গোখরা নিয়ে হাসপাতালে সাপুড়ে
তালা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মৃণাল কান্তি রায়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, তালা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও কুমিরা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা, সিনিয়র সহ-সভাপতি এম মহিদুল হক লিটু, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেন, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, তালা উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মির্জা আতিয়ার রহমান, সদস্য সচিব মোস্তফা হোসেন মন্টু, তালা থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান হাফিজ, সদস্য সচিব এস কে ফারুক প্রমূখ।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিব বলেন, ‘‘দীর্ঘ ১৭ বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও শেখ হাসিনা। তিন বারের প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা কিন্তু মহান আল্লাহর রহমতে তারা সেটি পারেননি।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘আগামীতে তারেক রহমানকে নিয়ে বীরের বেশে বেগম খালেদা জিয়া দেশে ফিরবেন এবং সেই অপেক্ষায় রয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মী এবং সমগ্র দেশবাসী।’’
ঢাকা/শাহীন/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনে জোট গঠনে সতর্ক থাকার পরামর্শ হেফাজত আমিরের
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোট গঠনের ক্ষেত্রে সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী।
মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, আগামী নির্বাচনে এমন কোনো দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার চিন্তা করা যাবে না, যাদের ভ্রান্ত বিশ্বাস সম্পর্কে বুজুর্গানে দ্বীন ও পূর্বপুরুষেরা আগেই সতর্ক করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘জাতীয় উলামা মাশায়েখ সম্মেলন ২০২৫’–এ লিখিত বক্তব্যে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী এ কথা বলেন। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন হেফাজত আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও অসুস্থ থাকায় তিনি কথা বলেননি। তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হক আজিজ।
ইসলামের মূলধারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমন কোনো সিদ্ধান্ত না নিতে দলগুলোকে অনুরোধ জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে হেফাজত আমির বলেন, সহিহ আকিদার সব ইসলামি দলকে এক হওয়ার জন্য আগেও তিনি আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর আহ্বানে সাড়া দেওয়ার মতো তেমন পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, একদিকে যেমন ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার ষড়যন্ত্র চলছে, অন্যদিকে তেমনি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে বহু রকম চক্রান্ত লক্ষ করা যাচ্ছে। গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে এ রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, তা তিনি কল্পনাও করেননি।
অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে বাবুনগরী বলেন, ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের চুক্তি দেশের স্বাধীনতার অখণ্ডতার জন্য এবং ধর্মীয় কৃষ্টির জন্য এক অশনিসংকেত। এ চুক্তির তীব্র নিন্দা জানিয়ে তা বাতিল করার দাবিও জানান তিনি।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা খলিল আহমদ কুরাইশী। দেশের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, সামনে কালো তুফান দেখা যাচ্ছে। কালো তুফানের সঙ্গে মোলাকাত নয়, মোকাবিলা করতে হবে। জনগণকে ওলামাদের নেতৃত্ব কবুল করতে হবে। তখনই তুফানকে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহসভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, যারা ফ্যাসিবাদী আমলে পাখা দিয়ে নৌকাকে বাতাস করেছে, তাদের সঙ্গে কোনো ঐক্য হবে না। জুলাই আন্দোলন ছিল ভোটের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য। সামনে নির্বাচন। সেই নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা শুরু হয়েছে। সেই পাঁয়তারা রুখে দিতে হবে।
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ইসলামের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আলেমদের মতামত উপেক্ষা করলে হাসিনার মতো পরিণতি হবে।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক। এ সময় আরও বক্তব্য দেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আলেম এবং ওলামারা।
১৫ দফা প্রস্তাবনা
সম্মেলনে জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ১৫ দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। প্রস্তাবনা পাঠ করেন সংগঠনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া।
১৫ দফার মধ্যে আছে—ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের চুক্তি বাতিল করা, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীতের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল করা, ঘোষিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা; নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির মহড়া বন্ধ করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা; বিতর্কিত নারী কমিশনের সুপারিশ বাতিল ও শরিয়ার সীমারেখার আলোকে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।