সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রি, সিন্ডিকেট করে কৃষকদের কাছ থেকে বছরে প্রায় ৩৯ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় সাতক্ষীরা খামারবাড়ির উপপরিচালকের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুদক। মঙ্গলবার বিকেলে এ অভিযান চালানো হয়।

অভিযানটির নেতৃত্ব দেন দুদক খুলনা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রকিবুল ইসলাম ও সহকারী পরিচালক মো.

জাহিদ ফজল। 

খামারবাড়ির উপপরিচালক সাইফুল ইসলামের অফিসকক্ষে প্রবেশ করে তারা অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখেন এবং কাগজপত্র যাচাই করেন। এর আগে তারা পাটকেলঘাটার সার ব্যবসায়ী কেশব সাধুর গোডাউনে যান এবং ব্যবসার বৈধতা খতিয়ে দেখেন।

অভিযান শেষে দুদক খুলনা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রকিবুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের প্রতিবেদনে সাতক্ষীরায় সার ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বছরে ৩৯ কোটি টাকা লোপাট করছেন– এমন অভিযোগ উঠে আসে। সার ব্যবসায়ীরা সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি ২৭ টাকার সার ৩৮ টাকায় বিক্রি করছেন। 

দুদক ছদ্মবেশে বিষয়টি অনুসন্ধান করে অভিযোগের সত্যতা পায়। সারের ডিলার নিয়োগ নিয়েও বেশ কিছু অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে তারা সরেজমিন তদন্ত করেছেন। পরে আইননানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাতক্ষীরা খামারবাড়ির উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘দুদকের আভিযানিক দল সারের দাম বেশি নেওয়া, বিএডিসি ডিলার নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়টি আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন। বিভিন্ন কাগজপত্র খতিয়ে দেখেছেন। সারের দাম বেশি নেওয়ার ঘটনাটি আমরাও তদন্ত করে অভিযুক্ত ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।’ 

তিনি বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত ২৭ টাকার সার ৩৮ টাকায় বিক্রি করাটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও দেড় শ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থার উপপরিচালক মো. আজিজুল হক বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া আসাদুজ্জামান নূরের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকা। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।

২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একে একে মামলা ও গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফারইস্ট লাইফ ইনস্যুরেন্সের সাবেক চেয়ারম্যানসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
  • জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা