সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে সাইবার বুলিং থাকছে না: ফয়েজ আহমেদ
Published: 14th, January 2025 GMT
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের নীতি পরামর্শক (সমন্বয় ও সংস্কার) ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানিয়েছেন, সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ নিয়ে যেসব উদ্বেগ আসছে, সরকার সেগুলো নিয়ে আলোচনা করছে। অধ্যাদেশটি সময় নিয়ে করা হবে। এ ছাড়া সাইবার বুলিং রাখার বিধান থেকে সরকার সরে এসেছে। এটা যৌন নিপীড়ন–সম্পর্কিত বিধান হবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত ‘ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ডেটা ভিশন: তারুণ্যের বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লব’ শিরোনামে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে ফয়েজ আহমেদ এসব কথা বলেন। আজ মঙ্গলবার বাংলামোটরে তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ আলোচনা সভা হয়।
অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৪–এর খসড়ার অনুমোদন দেয়। যেখানে সাইবার বুলিং, বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারসহ বেশ কিছু বিধান নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে।
ফয়েজ আহমদ বলেন, অধ্যাদেশে জব্দ, তল্লাশি ও গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে পুলিশ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে অবহিত করবে। বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের ধারাটি সংকুচিত করে শুধু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে হ্যাকিংয়ের বেলায় তা নিয়ে আসা হয়েছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া করেছিল। সে প্রসঙ্গে এই নীতি পরামর্শক বলেন, শুধু গোপনীয় উপাত্ত দেশের ভেতরে ডেটা সেন্টারে সংরক্ষণ করা বাধ্যতামূলক করা হবে।
অর্থ লেনদেন (পেমেন্ট) ব্যবস্থা পেপ্যাল বাংলাদেশে আসবে কি না, সে প্রসঙ্গে ফয়েজ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে ঠিকানা যাচাই ব্যবস্থা নেই। পেপ্যাল ঠিকানার পরিপ্রেক্ষিতে কাজ করে। পেপ্যালে টাকা আসার পাশাপাশি টাকা যেতেও দিতে হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশে সার্বক্ষণিক আর্থিক স্ক্যাম (প্রতারণা) পর্যবেক্ষণ করে না কোনো সংস্থা। এ বিষয়গুলোর সুরাহা না হলে পেপ্যাল আসা কঠিন; কিন্তু সরকার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম আইসিটি বিভাগের এই নীতি পরামর্শকের কাছে নিজের কিছু চাওয়া তুলে ধরেন। সেগুলো হলো আইসিটি খাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের আমলনামা করা ও লুটপাটের জন্য যেসব ধান্দাবাজির প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল, সেগুলো বাতিল করা; সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মুঠোফোনে সক্রিয় তরুণদের সেখানে উৎপাদনশীল কাজে লাগানো কি না, সে চিন্তা করা; আইসিটি বিভাগের উদ্যোগ ও সুযোগগুলো কী কী এবং তা কীভাবে পাওয়া যাবে, তার সহজবোধ্য প্রচারণা; এবং নতুন কোনো ভবন না করে আগের ভবনগুলোর ব্যবহার নিশ্চিত করা।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, জুলাই বিপ্লবে তথ্য প্রযুক্তির আশ্রয় নেওয়া হয়েছিল এবং এখানে যারা অংশ নিয়েছিলেন তাঁদের বেশির ভাগই ছিলেন তরুণ।
আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, কমিটির আইসিটি সেলের সদস্য মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব