তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের নীতি পরামর্শক (সমন্বয় ও সংস্কার) ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানিয়েছেন, সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ নিয়ে যেসব উদ্বেগ আসছে, সরকার সেগুলো নিয়ে আলোচনা করছে। অধ্যাদেশটি সময় নিয়ে করা হবে। এ ছাড়া সাইবার বুলিং রাখার বিধান থেকে সরকার সরে এসেছে। এটা যৌন নিপীড়ন–সম্পর্কিত বিধান হবে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত ‘ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ডেটা ভিশন: তারুণ্যের বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লব’ শিরোনামে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে ফয়েজ আহমেদ এসব কথা বলেন। আজ মঙ্গলবার বাংলামোটরে তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ আলোচনা সভা হয়।

অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৪–এর খসড়ার অনুমোদন দেয়। যেখানে সাইবার বুলিং, বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারসহ বেশ কিছু বিধান নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে।

ফয়েজ আহমদ বলেন, অধ্যাদেশে জব্দ, তল্লাশি ও গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে পুলিশ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে অবহিত করবে। বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের ধারাটি সংকুচিত করে শুধু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে হ্যাকিংয়ের বেলায় তা নিয়ে আসা হয়েছে।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া করেছিল। সে প্রসঙ্গে এই নীতি পরামর্শক বলেন, শুধু গোপনীয় উপাত্ত দেশের ভেতরে ডেটা সেন্টারে সংরক্ষণ করা বাধ্যতামূলক করা হবে।

অর্থ লেনদেন (পেমেন্ট) ব্যবস্থা পেপ্যাল বাংলাদেশে আসবে কি না, সে প্রসঙ্গে ফয়েজ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে ঠিকানা যাচাই ব্যবস্থা নেই। পেপ্যাল ঠিকানার পরিপ্রেক্ষিতে কাজ করে। পেপ্যালে টাকা আসার পাশাপাশি টাকা যেতেও দিতে হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশে সার্বক্ষণিক আর্থিক স্ক্যাম (প্রতারণা) পর্যবেক্ষণ করে না কোনো সংস্থা। এ বিষয়গুলোর সুরাহা না হলে পেপ্যাল আসা কঠিন; কিন্তু সরকার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম আইসিটি বিভাগের এই নীতি পরামর্শকের কাছে নিজের কিছু চাওয়া তুলে ধরেন। সেগুলো হলো আইসিটি খাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের আমলনামা করা ও লুটপাটের জন্য যেসব ধান্দাবাজির প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল, সেগুলো বাতিল করা; সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মুঠোফোনে সক্রিয় তরুণদের সেখানে উৎপাদনশীল কাজে লাগানো কি না, সে চিন্তা করা; আইসিটি বিভাগের উদ্যোগ ও সুযোগগুলো কী কী এবং তা কীভাবে পাওয়া যাবে, তার সহজবোধ্য প্রচারণা; এবং নতুন কোনো ভবন না করে আগের ভবনগুলোর ব্যবহার নিশ্চিত করা।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, জুলাই বিপ্লবে তথ্য প্রযুক্তির আশ্রয় নেওয়া হয়েছিল এবং এখানে যারা অংশ নিয়েছিলেন তাঁদের বেশির ভাগই ছিলেন তরুণ।

আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, কমিটির আইসিটি সেলের সদস্য মো.

আজহার উদ্দিন অনিক, কমিটির সদস্য টিনা নন্দী প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী লীগের ভোট পেতে একটি দল তাদের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করে না: সালাহউদ্দিন আহমদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘একটি দল আওয়ামী লীগের ভোট প্রাপ্তির জন্য আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করে না।’

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সালাহউদ্দিন আহমদ এসব কথা বলেন। বিজয়ের মাস উপলক্ষে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, মিরপুর বাঙলা কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, তিতুমীর কলেজ, ঢাকার বিভিন্ন ইউনিটের নারীনেত্রী এবং ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ও বর্তমান নেতারা অংশ নেন।

একটি দলকে ইঙ্গিত করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ইনিয়ে-বিনিয়ে বলছে যে তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল। আমরা মাঝেমধ্যে জিজ্ঞাসা করি, সেই মুক্তিযুদ্ধ কি পাকিস্তানের পক্ষে ছিল? জনগণের সামনে কিছুদিন পরে তারা হয়তো বলবে যে তারাই একমাত্র মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, আমরা করিনি। এ রকম অনেক বক্তব্য আপনারা ভোটের ময়দানে শুনতে পাবেন। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ অনেক সচেতন। এখন আর ধর্মের বিড়ি বিক্রি করে বাংলাদেশের জনগণের সামনে ভোট চাওয়া যাবে না। তারপরও আমাদের মাঠে–ময়দানে পরিকল্পনা নিয়ে যেতে হবে।’

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘যারা নিজের দেশের নাগরিককে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে হত্যা করেছে, নারী–শিশুনির্বিশেষে শতসহস্র মানুষকে হত্যা করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে, এই ইতিহাস যেন আমরা ভুলে না যাই।’

বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত ‘শ্বেতপত্র’–এর কথা উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আওয়ামী লীগ যে পরিমাণ টাকা তছরুপ করেছে, সেটা দিয়ে বাংলাদেশের দুটি শিক্ষা বাজেট করা যায়। তিনটি স্বাস্থ্য বাজেট করা যায়। ব্যাংকিং ও নন–ব্যাংকিং ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর থেকে যে লুটপাট হয়েছে, রাজনৈতিক বিবেচনায় যে ঋণ দেওয়া হয়েছে, যেটি তছরুপ হয়েছে, সেটা দিয়ে ২৪টি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা যেত। ১৪টি মেট্রো সিস্টেম নির্মাণ করা যেত। বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে ব্যাংকিং লুটপাটের মধ্য দিয়ে, সেটা বিলিয়ন ডলারে না বলে অঙ্কে বোধ হয় ২৯ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা প্রসঙ্গেও অনুষ্ঠানে কথা বলেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক যাত্রাকে বিভিন্নভাবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শক্তিশালী করার জন্য গণতন্ত্রের উত্তরণ হতে হবে। সেই গণতান্ত্রিক উত্তরণের একটি সফল ঘোষণা গতকাল হয়েছে, যেটাকে আমরা তফসিল বলছি, নির্বাচনী তফসিল।’

কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘কেউ কেউ বলেছে নো পিআর, নো ইলেকশন। কেউ কেউ বলেছে আগে স্থানীয় সরকার ইলেকশন, না হলে নো ইলেকশন। আর কেউ কেউ বলেছে একই দিনে গণভোট আর নির্বাচন হলে আমরা মানি না। আমি কারও নাম নিতে চাই না। তারা গণতন্ত্রের বিপক্ষের শিবির। তারা নিজেদের মতো করে গণতন্ত্র চায়। তাদের গণতন্ত্রের সংজ্ঞা আলাদা।’

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা
  • হাদির ওপর হামলা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: সালাহউদ্দিন 
  • আওয়ামী লীগের ভোট পেতে একটি দল তাদের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করে না: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • মর্গ্যান গার্লস স্কুলে পরীক্ষাকালীন সময়ে জামায়াত প্রার্থীর সভা,  ক্ষোভ