দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন গ্রেপ্তার
Published: 15th, January 2025 GMT
দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইউলকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির দুর্নীতি বিরোধী কর্তৃপক্ষ। ঐতিহাসিক এ ঘটনার মধ্য দিয়ে দেশটিতে এই প্রথম দায়িত্বে থাকা কোনো প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তার করা হলো।
বিবিসি জানিয়েছে, এর আগেও একবার ইউন সুক-ইওলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তখন সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় বারের এই চেষ্টায় তাকে আটক করার খবর নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
ইউনকে গ্রেপ্তারের আগে তার নিরাপত্তাকর্মী ও সমর্থকদের বাধার মুখে পড়তে হয় তদন্তকারীদের। কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি।
আরো পড়ুন:
‘কমরেড’ পুতিনকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে যা বললেন কিম
ইউনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে দশটার দিকে একটি গাড়ীবহর প্রেসিডেন্টের বাসভবন থেকে বেরিয়ে গেছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম খবর দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই বহরেই প্রেসিডেন্টকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো।
তবে এক ভিডিও বার্তায় প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইউল বলেছেন, তিনি দুর্নীতি তদন্ত অফিসে (সিআইও) উপস্থিত হতে সম্মত হয়েছেন। এই সংস্থাই তার বিরুদ্ধে করা মামলার নেতৃত্ব দিচ্ছে।
তিন মিনিটেরও কম সময়ের ওই ভিডিওতে তিনি বলেন, দেশে আইনের শাসন ভেঙে পড়েছে। যে সংস্থাগুলো তার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে বা যে আদালতগুলো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করছে, তাদের এমনটি করার এখতিয়ার নেই।
গত ৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করেছিলেন ইউন। কিন্তু তীব্র প্রতিবাদ-প্রতিরোধের মুখে মাত্র ছয় ঘণ্টার মাথায় তিনি তা প্রত্যাহারে বাধ্য হন। স্বল্পস্থায়ী এই সামরিক আইন জারির জেরে গত ১৪ ডিসেম্বর ইউনকে দেশটির পার্লামেন্টে অভিশংসন করা হয়।
রাষ্ট্রদ্রোহ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে শুরু হয় ফৌজদারি তদন্ত। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তদন্তকারীদের তলবে হাজির হতে ইউন অস্বীকৃতি জানান। এর জেরে গত ৩১ ডিসেম্বর ইউনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন দক্ষিণ কোরিয়ার একটি আদালত।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জুলকারনাইনের ঘটনা
পবিত্র কোরআনের ১৮ তম সুরা আল কাহাফ। কাহাফ মানে গুহা। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ১১০। মক্কায় অবতীর্ণ এই সুরায়, গুহাবাসীদের বিবরণ স্থান পেয়েছে। জ্ঞানান্বেষণে এক আল্লাহ ভক্ত মহাপুরুষের সাক্ষাৎ এবং জুল কারনাইন ও ইয়াজুজ মাজুজের বিবরণ রয়েছে। সরল পথের আলোচনা করে মোহাম্মদ (সা.)-কে সান্ত্বনা দেওয়া হয়েছে।
জুলকারনাইন ছিলেন ন্যায়পরায়ণ ও সৎ বাদশাহ। তিনি পশ্চিম থেকে পূর্ব পর্যন্ত সফর করেছিলেন। দুই পর্বতের মাঝখানে তিনি এক জনগোষ্ঠীকে খুঁজে পান। তারা তাঁর কাছে ইয়াজুজ ও মাজুজের হাত থেকে রক্ষা পেতে একটি দেয়াল নির্মাণের আবেদন জানাল। জুলকারনাইন কাজটি করে দিতে সম্মত হলেন। তিনি তাঁর কাজ নিয়ে গর্ব দেখাননি।
কোরআনে আছে, ওরা বলল, 'হে জুলকারনাইন! ইয়াজুজ ও মাজুজ পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করছে; আমরা কি তোমাকে কর এই শর্তে দেব যে তুমি আমাদের ও ওদের মধ্যে এক প্রাচীর গ'ড়ে দেবে?' সে বলল, 'আমার প্রতিপালক আমাকে যে-ক্ষমতা দিয়েছেন তা-ই ভালো। সুতরাং তোমরা আমাকে শ্রম দিয়ে সাহায্য করো, আমি তোমাদের ও ওদের মাঝখানে এক মজবুত প্রাচীর গড়ে দেব। তোমরা আমার কাছে লোহার তাল নিয়ে আসো।' তারপর মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গা পূর্ণ হয়ে যখন লোহার ঢিবি দুটো পাহাড়ের সমান হলো তখন বলল, 'তোমরা হাপরে দম দিতে থাকো।' যখন তা আগুনের মতো গরম হলো তখন সে বলল, 'তোমরা গলানো তামা নিয়ে আসো, আমি তা ওর ওপর ঢেলে দেব।' এরপর ইয়াজুজ ও মাজুজ তা পার হতে পারল না বা ভেদ করতেও পারল না। সে (জুলকারনাইন) বলল, 'এ আমার প্রতিপালকের অনুগ্রহ। এখন আমার প্রতিপালকের প্রতিশ্রুতি পূর্ণ হবে তখন তিনি ওকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেবেন, আর আমার প্রতিপালকের প্রতিশ্রুতি সত্য।' সেদিন আমি ওদেরকে দলে দলে তরঙ্গের আকারে ছেড়ে দেব, আর শিঙায় ফুঁ দেওয়া হবে। তারপর আমি ওদের সকলকেই একত্র করব। আর সেদিন আমি জাহান্নামকে প্রত্যক্ষভাবে উপস্থিত করব অবিশ্বাসীদের কাছে, যাদের চক্ষু আমার নিদর্শনের প্রতি ছিল অন্ধ, আর যাদের শোনারও ক্ষমতা ছিল না। (সুরা সুরা কাহাফ, আয়াত ৯৪ থেকে ১০১)
আরও পড়ুনঅর্থ বুঝলে নামাজে অন্য চিন্তা আসে না২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪আবার সুরা শেষ হয়েছে বক্তব্য ও উপদেশ দিয়ে। কোরআনে আছে, যারা অবিশ্বাস করেছে তারা কি মনে করে যে, তারা আমার পরিবর্তে আমার দাসদেরকে অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করবে? আমি অবিশ্বাসীদের অভ্যর্থনার জন্য জাহান্নাম তৈরি রেখেছি।বলো, 'আমি কি তোমাদেরকে তাদের খবর দেব যারা কর্মে বড়ই ক্ষতিগ্রস্ত? ওরাই তারা, পার্থিব জীবনে যাদের প্রচেষ্টা পণ্ড হয়, যদিও তারা মনে করে তারা সৎকর্ম করছে। ওরাই তারা যারা অস্বীকার করে ওদের প্রতিপালকের নিদর্শনগুলো ও তাঁর সঙ্গে ওদের সাক্ষাতের বিষয়।' ওদের কর্ম তো নিষ্ফল। কিয়ামতের দিন ওদেরকে কোনো গুরুত্ব দেওয়া হবে না। জাহান্নামই ওদের প্রতিফল, যেহেতু ওরা অবিশ্বাস করেছে এবং আমার নিদর্শনগুলো ও রসুলদের হাসি-ঠাট্টার ব্যাপার হিসেবে নিয়েছে। যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে তাদের অভ্যর্থনার জন্য রয়েছে ফিরদাউসের উদ্যান, যেখানে তারা স্থায়ী হবে ও এর পরিবর্তে তারা অন্য কোনো স্থান কামনা করবে না। বলো, 'আমার প্রতিপালকের কথা (লেখার জন্য) যদি সমুদ্র কালি হয়, তবে আমার প্রতিপালকের কথা শেষ হওয়ার পূর্বেই সমুদ্র নিঃশেষ হয়ে যাবে, এর সাহায্যার্থে এর মতো (আর-একটি সমুদ্র) আনলেও।' বলো, 'আমি তোমাদের মতোই একজন মানুষ; আমার ওপর প্রত্যাদেশ হয় যে আল্লাহ্ই তোমাদের একমাত্র উপাস্য। সুতরাং যে তার প্রতিপালকের সাক্ষাৎ কামনা করে সে যেন সৎকর্ম করে ও তার প্রতিপালকের উপাসনায় কাউকেই শরিক না করে। (সুরা সুরা কাহাফ, আয়াত ১০২ থেকে ১১০)
চারটি ঘটনা থেকে চার রকম পরীক্ষার কথা জানা যায়। আসহাবে কাহাফের ঘটনা থেকে ধর্মবোধের পরীক্ষা, দুটি বাগানের মালিকের ঘটনা থেকে সম্পদের ওপর পরীক্ষা, হজরত মুসা (আ.) ও খিজির (আ.) জ্ঞান সম্পর্কে থেকে এবং জুলকারনাইনের ঘটনা থেকে ক্ষমতা নিয়ে পরীক্ষা।
আরও পড়ুনএকজন ব্যবসায়ী সাহাবির গল্প০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩