অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে সংস্কার প্রস্তাব জমা দিয়েছে চার কমিশন।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে কমিশন প্রধানরা এসব প্রতিবেদন জমা দেন।

বিকেল ৩টায় সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে সরকারের পক্ষ থেকে বিস্তারিত জানানোর কথা রয়েছে।

প্রতিবেদন জমা দেওয়া কমিশনগুলো হলো- ড.

বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, সরফরাজ হোসেনের নেতৃত্বাধীন পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশন, টিআইবির ড. ইফতেখারুজ্জামানের নেতৃত্বে দুর্নীতি দমন কমিশন এবং ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. আলী রিয়াজের নেতৃত্বে সংবিধান সংস্কার কমিশন।

এসব কমিশনের প্রতিবেদন পাওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করবে অন্তর্বর্তী সরকার। চলতি মাসেই এ আলোচনা শুরু হতে পারে। সংস্কার প্রস্তাব এবং এগুলোর বাস্তবায়ন নিয়ে ঐকমত্য হলে সংলাপ থেকে একটি রূপরেখা আসতে পারে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম বলেন, “হস্তান্তরের পর রিপোর্ট নিয়ে আলাপ হবে, পুরো জিনিসটি তারা বলবেন কী কী পাওয়া গেছে।”

পুলিশ, দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচনব্যবস্থা ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের জন্য সর্বশেষ সময় নির্ধারণ ছিল ১৫ জানুয়ারি। জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগের জন্য সময় বাড়ানো হয়েছে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।

রাষ্ট্র সংস্কারের ক্ষেত্রে বেশি মনোযোগ সংবিধান ও নির্বাচনব্যবস্থার দিকে। সংশ্লিষ্টরা জানান, গুরুত্বপূর্ণ এ দুই বিষয়ে কী ধরনের সংস্কার হবে তার ওপরই অনেকাংশে নির্ভর করবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পাওয়া নতুন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ।

এই কমিশনগুলোর প্রতিবেদন পাওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকার কমিশনগুলোর প্রধানদের নিয়ে ‘জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশন’ গঠন করতে যাচ্ছে। এই কমিশনের মাধ্যমে সংস্কারের পক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত গ্রহণ করার চেষ্টা হতে পারে। একই সঙ্গে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ নকশাও ঘোষণার সিদ্ধান্ত হতে পারে এ মাসেই।

গত ১৬ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেন, “জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা অন্তর্বর্তী সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব, তা বিবেচনা করে আমি এই কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করব। আমার সঙ্গে এই কমিশনের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।”

ঢাকা/হাসান/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলেছে দলটি।

আজ শুক্রবার রাতে এনসিপির এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহউদ্দিন সিফাত বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।

এনসিপির বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে এনসিপি। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লন্ডনে অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি ‘সংসদ নির্বাচন’ বিষয়ে দলটিকে আস্থায় আনতে সফল হয়েছে সরকার। জাতীয় ঐক্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রধান দাবি তথা বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মনে করে এনসিপি।

নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বলে বারবার প্রতীয়মান হচ্ছে—এ কথা উল্লেখ করে এনসিপি আরও বলেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, জুলাই সনদ কার্যকর করা এবং বিচারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণ-অভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত করবে এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন–আকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে।

জনগণের দাবি তথা জুলাই সনদ রচনা ও কার্যকর করার আগে নির্বাচনের কোনো তারিখ ঘোষিত হলে তা জনগণ মেনে নেবে না বলে উল্লেখ করেছে এনসিপি। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়গুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও জুলাই সনদ রচনা এবং কার্যকর করেই আসন্ন জুলাইকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করার উদ্যোগ নিতে সরকারকে জোর দাবি জানাচ্ছে এনসিপি।’

জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এনসিপি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগামীকাল ফের সংস্কারের সংলাপ
  • রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা মঙ্গলবার আবার শুরু
  • বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য, ভালো উদ্যোগ নিলেও বিরোধিতা আসে
  • লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি
  • ইউনূস-তারেকের বৈঠক দেশের মানুষের জন্য স্বস্তির বার্তা, আশার আলো
  • ড. ইউনূস ও তারেকের বৈঠক জাতির জন্য স্বস্তির বার্তা: ১২ দলীয় জোট
  • ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার ও জুলাই সনদ