সোনারগাঁয়ে মাসব্যাপী লোকজ উৎসব শুরু ১৮ জানুয়ারি
Published: 15th, January 2025 GMT
সোনারগাঁয়ে আগামী ১৮ জানুয়ারি থেকে মাসব্যাপী লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব ২০২৫ শুরু হচ্ছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব উপলক্ষে মতবিনিময় সভায় ফাউন্ডেশনের পরিচালক কাজী মাহবুবুল আলম এ তথ্য জানান।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন এর পরিচালক কাজী মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ।সম্মানীয় অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মফিদুল রহমান।
বিশেষ অতিথি হিসাবে থাকবেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিয়া,নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার।
আবহমান গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করতে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন প্রতিবছরই মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের আয়োজন করে।
ফাউন্ডেশনের লাইব্রেরি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় ফাউন্ডেশনের পরিচালক কাজী মাহবুবুর আলমের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন-সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা রহমান, সহকারী কমিশনার ভূমি মন্জুরুল মোর্শেদ, নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খ সার্কেল আসিফ ইমাম, টুরিস্ট পুলিশের ইনচার্জ দেলোয়ার হোসেন, ফাউন্ডেশনের উপ পরিচালক এ কে এম আজাদ সরকার, সংরক্ষণ কর্মকর্তা নাসিম ইসলাম অভি, সোনারগাঁ থানার ওসি তদন্ত রাশেদ মিয়া, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিকস মিডিয়ায় সাংবাদিক বৃন্দ সহ ফাউন্ডেশনের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ।
দেশীয় সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্যে প্রতিবছরের মতো এবারও মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবে কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনী, লোকজীবন প্রদর্শনী, পুতুল নাচ, বায়স্কোপ, নাগরদোলা, গ্রামীণ খেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কারুশিল্পীদের তৈরি বাহারি পণ্যসামগ্রী ও উদ্যোক্তাদের কারুপণ্য প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে।
মেলা চলাকালীন ওই এলাকার যানজট, আইনশৃঙ্খলা ও খাদ্যের মূল্য তালিকা নিয়ে মতবিনিময় সভায় আলোচনা করা হয়।
ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা যায়, আগামী ১৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া মেলা ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এবার মেলায় সাধারণ স্টল ও কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনীর ৩২টি স্টলসহ সর্বমোট পালের সংখ্যা ১০০টি। এতে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রথিতযশা ৬৪ জন কারুশিল্পী সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন।
এ বছর মৌলভীবাজার ও ঝালকাঠীর শীতল পাটি, মাগুরার শোলাশিল্প, রাজশাহীর শখের হাঁড়ি ও মাটির পুতুল, রংপুরের শতরঞ্জি, সোনারগাঁ, টাঙ্গাইল ও ঠাকুরগাঁয়ের বাঁশ বেতের কারুশিল্প, ঐতিহ্যবাহী জামদানি, কাঠের চিত্রিত হাতি-ঘোড়া-পুতুল, বন্দরের রিকশা পেইন্টিং, কুমিল্লার, তামা-কাঁসা-পিতলের কারুশিল্প, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কারুশিল্প, কিশোরগঞ্জের টেরাকোটা পুতুল, বগুড়ার লোকজ খেলনা ও কুমিল্লার লোকজ বাদ্যযন্ত্রের শিল্পীসহ মোট ১৭ জেলার কারুশিল্পীরা মেলায় অংশ নেবেন। প্রতিবারের মতো এবারও মেলায় বিশেষ কর্মসূচি হিসেবে কারুশিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য ১৫টি স্টল দেওয়া হয়েছে।
মাসব্যাপী লোকজ উৎসব ২০২৫ এর প্রতিদিনের সান্ধ্যকালীন অনুষ্ঠানমালায় লোকজ মঞ্চে পালাক্রমে বাউলগান, পালাগান, ভাওয়াইয়া-ভাটিয়ালী গান, জারি-সারিগান, হাসন রাজার গান, শাহ আব্দুল করিমের গান, লালন সঙ্গীত, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গ্রামীণ খেলা, লাঠিখেলা, মুড়ি ওড়ানো, চর্যাগান, লোকগল্প বলা ইত্যাদি অনুষ্ঠান পরিবেশনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
দেশীয় সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবনে আয়োজিত মাসব্যাপী এ মেলায় কর্মরত কারুশিল্পীদের পণ্য, পুতুলনাচ, বায়োস্কোপ, নাগরদোলা, গ্রামীণ খেলাসহ বাহারি পণ্যসামগ্রী প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে। মেলা চলাকালে ওই এলাকার যানজট, আইন-শৃঙ্খলা ও খাদ্যের মূল্যতালিকা নিয়ে মতবিনিময় সভায় আলোচনা হয়। সোনারগাঁয়ের বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
এবারের মেলায় বিশেষ আকর্ষণ 'তারুণ্যের উৎসব-২০২৫' শীর্ষক 'ঐতিহ্যের আলিঙ্গণ' শিরোনামে বিশেষ প্রদর্শনী ও অনুশীলন চত্বর স্থাপন।ভৌগোলিক নির্দেশক বা জি.
মেলায় আগত শিশুদের জন্য লোককারুশিল্প উৎপাদন প্রক্রিয়ার অনুশীলন চত্বর স্থাপন।কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনীতে অংশ নেয়া ৬৪জন কারুশিল্পীকে সম্মাননা ও ক্রেস্ট প্রদানফাউন্ডেশন থেকে ইতোপূর্বে পদক ও সম্মাননাপ্রাপ্ত কারুশিল্পীদের আমন্ত্রণ।মেলায় স্টলগ্রহীতাদের মধ্য থেকে বিশেষভাবে স্টল সাজসজ্জায় বিবেচিত কারুশিল্পীদের পুরস্কার প্রদান।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ম সব য প
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে জামাল ভূঁইয়ার হাত ধরে ইস্পাহানি-প্রথম আলো আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল উৎসবের উদ্বোধন
চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়াম নতুন সাজে সেজে উঠেছে তৃতীয় ইস্পাহানি–প্রথম আলো আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। রঙিন বেলুন, ব্যানার ও ফেস্টুনে সজ্জিত স্টেডিয়ামের ভিতর-বাহির। ভেতরে ‘গোল…গোল…গোল’ থিম সংয়ের তালে তালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস, স্লোগান আর আনন্দঘন পরিবেশে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে পুরো চত্বর।
এমন উৎসবের আবহেই আজ সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে টুর্নামেন্টের তৃতীয় আসর। উদ্বোধনী ম্যাচে সমর্থকদের উল্লাসের পাশাপাশি হারের আক্ষেপ আর প্রতিদ্বন্দ্বিতার উত্তেজনা মিলিয়ে আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবলের চট্টগ্রাম পর্ব পেয়েছে বর্ণিল সূচনা।
সকালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান যেন পরিণত হয়েছিল তারার মেলায়। ঢাকা থেকে এসে জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া টুর্নামেন্টের তৃতীয় আসরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
উপস্থিত ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক চার অধিনায়ক—টুর্নামেন্ট কমিটির প্রধান আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু, টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান ইমতিয়াজ সুলতান জনি, চট্টগ্রামের সন্তান মামুনুল ইসলাম ও জাহিদ হাসান এমিলি। তাঁদের উপস্থিতিতে চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামের উৎসবমুখর পরিবেশে যোগ হয় বাড়তি উচ্ছ্বাস। জামালকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের সেলফি তোলা তোলার হিড়িক পড়ে। জাতীয় দলের অধিনায়ককে কাছে পেয়ে শিক্ষার্থীরা ছিলেন আপ্লুত।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন ইস্পাহানি গ্রুপের চেয়ারম্যান মির্জা সালমান ইস্পাহানি, ইস্পাহানি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মির্জা শাকির ইস্পাহানি, চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্যসচিব ও জেলা ক্রীড়া অফিসার আবদুল বারী, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরী। প্রথম আলোর প্রধান ক্রীড়া সম্পাদক উৎপল শুভ্রর সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন জামাল ভূঁইয়া।
ইস্পাহানির পতাকা উত্তোলন করেন মির্জা সালমান ইস্পাহানি। টুর্নামেন্টের পতাকা, প্রথম আলোর পতাকা ও চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার পতাকা উত্তোলন করেন অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে এসে নিজের ভালো লাগার কথা জানিয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে নিজের খেলার স্মৃতিচারণা করেন তিনি। এই মাঠে শেখ কামাল টুর্নামেন্টে খেলেছেন চট্টগ্রাম আবাহনীর হয়ে। জামাল বলেন, ‘এই মাঠে আছে আমার অনেক ভালো স্মৃতি। ইস্পাহানি-প্রথম আলোকে ধন্যবাদ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের সামনে এমন একটি মঞ্চ পেতে দেওয়ার জন্য।’
অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দেন তিনি, ‘ইস্পহানি-প্রথম আলো তোমাদের সামনে সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। সেটি কাজে লাগাতে হবে। মনের আনন্দের খেল, উপভোগ কর, নিজেকে মেলে ধর।’
নকআউটভিত্তিক টুর্নামেন্টের প্রথম দিনের প্রথম ম্যাচটা হয়েছে বেশ নাটকীয়। প্রথম ম্যাচেই পাওয়া গেছে টাইব্রেকারে উত্তাপ। ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি চট্টগ্রাম পিছিয়ে পড়েও খেলায় ফিরে টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলে হারিয়েছে বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশকে। খালেদ বিন সেলিম এগিয়ে নেন বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়কে। ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি চট্টগ্রামকে ম্যাচে ফেরান অধিনায়ক অন্তিম হোসেন সৈকত। এরপর টাইব্রেকারে জেতে ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি চট্টগ্রাম।
ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেয়েছেন জয়ী দলের অন্তিম হোসেন সৈকত। তাঁর হাতে ম্যাচ সেরার পুরস্কার তুলে দেন জামাল ভূঁইয়া, মির্জা সালমান ইস্পাহানি ও আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু। গত বছরও প্রথম ম্যাচে টাইব্রেকারে জিতেছিল ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি চট্টগ্রাম।
টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় আসরে এবার ঢাকার ২৮টি, চট্টগ্রামের ১০টি, খুলনা ও রাজশাহীর ৪টি করে মোট ৪৬টি বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নিচ্ছে। চট্টগ্রামে শুরু হওয়া টুর্নামেন্টের পর্দা নামবে ঢাকায়।
২৩ নভেম্বর রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে ও ২৫ নভেম্বর খুলনা মহিলা ক্রীড়া সংস্থা মাঠে ওই দুটি অঞ্চলের খেলা হবে। এরপর ২৮ নভেম্বর ঢাকায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মাঠে শুরু হবে ঢাকার আঞ্চলিক পর্বের খেলা।