রাজনৈতিক ঐক্যে যাতে ফাটল না ধরে, সে আহ্বান জানিয়েছি
Published: 16th, January 2025 GMT
গণঅভ্যুথানের সাড়ে পাঁচ মাস পর রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিকভাবে এই ঘোষণাপত্রের কি প্রয়োজন ছিল। এই প্রশ্ন তুলে ধরেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ। তিনি উপদেষ্টাদেরকে বলেন, ফ্যাস্টিস্ট সরকারের পতনের পর আমাদের রাজনৈতিক ঐক্যতে যাতে ফাটল না ধরে সেদিকে দৃষ্টি রাখার জন্য উপদেষ্টাদেরকে আহ্বান জানিয়েছি।
আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সর্বদলীয় বৈঠক থেকে বের হয়ে ব্রিফিংয়ে সালাউদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন। এদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সর্বদলীয় বৈঠক হয়।
বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক কমিটিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত হন।
বৈঠক শুরুর আগে অনিশ্চয়তা থাকলেও শেষ পর্যন্ত বিএনপির প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধি দল বৈঠকে যোগ দেন।
বৈঠকে অংশ নেওয়া অন্য দলের নেতৃবৃন্দের মধ্যে আছেন- গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক মুহাম্মাদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল ও সংগঠনটির মূখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুদ।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আব্দুল কাদেরের নেতৃত্বে তিন সদস্য, ইসলামি আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমানের নেতৃত্বে দুই সদস্য, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম বৈঠকে অংশ নিয়েছেন।
এছাড়া যোগ দিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ মার্কসবাদীর সমন্বয়ক মাসুদ রানা ও জাতীয় গণফ্রন্টের কামরুজ্জামান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গণঅভ য ত থ ন র জন ত ক উপদ ষ ট সদস য স র সদস য ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
হাদিকে হত্যার চেষ্টায় নিন্দা ও উদ্বেগ এনসিপির
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর রাজধানীর বিজয়নগরে প্রকাশ্য দিবালোকে চালানো ন্যক্কারজনক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এনসিপির মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ওসমান হাদিকে গুলির বিষয়ে তদন্ত করবে ইসি
কুমিল্লায় নিজের পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন অপসারণ করলেন জামায়াতের প্রার্থী
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ হামলা শুধু একজন প্রার্থীর ওপর নয়, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার হওয়া গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার ওপরও সরাসরি আঘাত। এনসিপি গুরুতর আহত শরিফ ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনা করছে এবং দেশবাসীর কাছে তার জন্য দোয়া প্রার্থনা করছে।
এই হামলা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও নির্বাচনি পরিবেশের ভঙ্গুরতা সম্পর্কে গুরুতর প্রশ্ন তুলে দেয়। বিশেষভাবে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, শরিফ ওসমান হাদি হামলার আগে হুমকির কথা প্রকাশ্যে জানানোর পরও তার নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। এর আগে জাতীয় নাগরিক পার্টির কার্যালয়ের সামনে বারংবার ককটেল হামলা এবং একজন প্রার্থী হুমকি পাওয়ার পরেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের চরম ব্যর্থতা দায়িত্বহীনতা, অদক্ষতা ও উদাসীনতার নগ্ন উদাহরণ, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
একই সঙ্গে আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, দীর্ঘদিন ধরে নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন আওয়ামী লীগ জনগণের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালিয়েছে, সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলেছে, এবং তাদের অবশিষ্ট সন্ত্রাসী বাহিনী এখনো সক্রিয়ভাবে দেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। সরকার যদি অবিলম্বে আওয়ামী লীগের এই সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা না করে, তবে তারা আবারও গণতান্ত্রিক উত্তরণকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং দেশকে সহিংস অরাজকতার দিকে ঠেলে দেবে।
আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, এখন গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোর একে অপরকে দোষারোপ করে রাজনৈতিক লাভ তোলার সময় নয়; এখন সময় প্রকৃত অপরাধী ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি আনার। গণঅভ্যুত্থানের শক্তি যদি বিভক্ত হয়, তাহলে সুযোগ নেবে পতিত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ ও দেশবিরোধী চক্র, যারা অতীতেও হত্যা ও সহিংসতার মাধ্যমে রাজনীতিকে কলুষিত করেছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি দেশের নাগরিক সমাজ, তরুণ প্রজন্ম, পরিবর্তনের পথযাত্রায় থাকা সকল গণতান্ত্রিক শক্তি এবং সর্বোপরি দেশের আপামর জনগণকে সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। আমরা দৃঢ়ভাবে জানাতে চাই, যেকোনো হুমকি, ভয়ভীতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড উপেক্ষা করে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক উত্তরণ নিশ্চিত করতে এনসিপি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
অবিলম্বে এই হামলার বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত, হামলাকারীদের গ্রেপ্তার, হুমকির উৎস শনাক্ত করাসহ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা এবং সকল প্রার্থী ও নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি। শান্তি, নিরাপত্তা ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ রক্ষায় আমরা দৃঢ়ভাবে দেশবাসীর সাথে আছি এবং থাকব।
ঢাকা/রায়হান/রফিক