নিজের বিলাসবহুল বাড়িতে হামলার শিকার হয়েছেন বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খান। বান্দ্রার বাড়িতে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত হন এই তারকা। তার শরীরে ছুরির ছয়টি আঘাত রয়েছে। তার মধ্যে দুটো গভীর। গতকাল সকালে তার অস্ত্রোপচার হয়েছে। মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।

তেরো তলা ভবনটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর হওয়ার পরও সাইফের বাসায় দুর্বৃত্তের অনুপ্রবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ধারণা করা হচ্ছে, দিনের বেলায় সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে সাইফের বাসায় লুকিয়েছিল। তবে এখনো বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে মুম্বাই পুলিশ। সবকিছু মিলিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে সাইফের এই বাড়ি। সাইফ-কারিনা তাদের বাড়িটি কীভাবে সাজিয়েছেন, কত টাকা মূল্যে কিনেছেন— তা নিয়েই এই প্রতিবেদন।

 

আরো পড়ুন:

বিলাসবহুল গাড়ি রেখে সাইফকে কেন অটোরিকশায় হাসপাতালে নেওয়া হয়?

সাইফের হামলাকারী শনাক্ত, ভিডিও ভাইরাল

ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের তথ্য অনুসারে, বলিউডের ‘পাওয়ার কাপল’ কারিনা কাপুর খান ও সাইফ আলী খান মুম্বাইয়ের পশ্চিম বান্দ্রার সৎগুরু শরণ নামে একটি অ্যাপার্টমেন্টে বসবাস করেন। প্রায় এক দশক আগে সৎগুরু বিল্ডার্স থেকে এটি কিনেন সাইফ আলী খান।

১৩ তলা ভবনটির ৪টি ফ্লোর নিয়ে অ্যাপার্টমেন্টটি তৈরি করেছেন এই তারকা। ১০ হাজার স্কয়ার ফুটের অ্যাপার্টমেন্টে রয়েছে— পাঁচটি বেডরুম, জিমনেসিয়াম, মিউজিক রুম, ছয়টি বারান্দা। এই দম্পতির বাড়িতে বিশেষ একটি টেরেস এবং একটি সুইমিংপুল রয়েছে। তাদের অ্যাপার্টমেন্টটির সংস্কার কাজ সম্পন্ন হতে প্রায় চার বছর সময় লাগে।

 

সাইফের এই অ্যাপার্টমেন্টের প্রতি বর্গফুটের মূল্য ৭০ হাজার রুপি। এর আশেপাশের এলাকার প্রতি বর্গফুটের দাম ৫০-৫৫ হাজার রুপি (গড়)। এ তুলনায় সাইফের অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য বেশি বলেও এই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

দ্য ফ্রি প্রেস জার্নাল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সাইফ আলী খান অ্যাপার্টমেন্টটি কিনতে ১০০ কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৪০ কোটি ৩৯ লাখ টাকার বেশি) ব্যয় করেছেন।

 

বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে সাইফ আলী খানের মুম্বাইয়ের বান্দ্রার বাড়িতে দুর্বৃত্ত ঢুকে পড়ে। সে সময় বাড়ির সবাই ঘুমাচ্ছিলেন। গৃহপরিচারিকা লিমার চিৎকারে ঘুম ভাঙে সাইফের। পরে দুর্বৃত্তের সঙ্গে তার ধস্তাধস্তি হয়; একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে সাইফকে একাধিকবার আঘাত করে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় অভিনেতাকে মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

১২ ঘণ্টা পর নিভল কেরানীগঞ্জের বহুতল ভবনের আগুন

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে ‘জাবালে নুর টাওয়ার’ নামের বহুতল ভবনে লাগা আগুন ১২ ঘণ্টা পর নির্বাপণ করা হয়েছে। ভোর চারটার দিকে লাগা আগুন ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিটের চেষ্টায় নেভে সন্ধ্যা ছয়টায়। তবে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ওই ভবনে বসবাসরত ৪৫ জন বাসিন্দাকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আগানগর এলাকায় বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতুসংলগ্ন (বাবুবাজার সেতু) ওই ভবনের ভূগর্ভস্থ কাপড়ের গুদামে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে প্রথমে কেরানীগঞ্জ, সদরঘাট, লালবাগ, মিরপুর, সিদ্দিকবাজারসহ ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি ইউনিট তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। তবে আগুন নেভাতে বেগ পাওয়ায় দুপুর ১২টার দিকে আরও ছয়টি ইউনিটসহ মোট ২০টি ইউনিট অগ্নিনির্বাপণ কার্যক্রমে অংশ নেয়।

আরও পড়ুনকেরানীগঞ্জে ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১৪ ইউনিট, ৪২ জন উদ্ধার১২ ঘণ্টা আগে

সন্ধ্যা ছয়টার দিকে অগ্নিনির্বাপণ কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘ভোর ৫টা ৩৭ মিনিটে আগুনের খবর পাওয়ার পর আট মিনিটের মধ্যেই প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করে। পরে অন্যান্য ইউনিট যুক্ত হয়। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়। অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (গণমাধ্যম) শাহজাহান শিকদার জানান, গুদাম ও দোকানগুলোর তালা, শাটার ও কলাপসিবল গেট কেটে আগুন নেভাতে হচ্ছে। ভেতরে বিপুল পরিমাণ কাপড় ও দাহ্য সামগ্রী থাকায় এবং ঘন ধোঁয়ার কারণে অগ্নিনির্বাপণে বেগ পেতে হয়েছে। ভবন থেকে ৪৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভবনটির মালিক হলেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা জাতীয় পার্টির সভাপতি মো. ফারুক হোসেন এবং আবাসন ব্যবসায়ী নুরে আলম। ৪২ শতাংশ জমির ওপর জাবালে নুর টাওয়ারটি সাতটি পৃথক ভবনের সমন্বয়ে গঠিত। কিন্তু এগুলোর বেজমেন্ট (ভিত্তিমাত্র) একটি। ভবনের ভূগর্ভস্থ, প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় ঝুট কাপড়ের গুদাম ও দোকান রয়েছে। তৃতীয় তলা থেকে দশম তলা পর্যন্ত আবাসিক ফ্ল্যাট। অভিযোগ রয়েছে ভবনটি নির্মাণের সময় যথাযথ নীতিমালা অনুসরণ করা হয়নি। এ ছাড়া ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ও জরুরি বহির্গমনের (ইমার্জেন্সি এক্সিট) কোনো ব্যবস্থাও ছিল না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ভবনের ভূগর্ভস্থলে ঝুট কাপড়ের গুদামের এক ভাড়াটে বলেন, ‘তিন বছর আগে মাসে ২০ হাজার টাকায় ফারুক হোসেনের কাছ থেকে একটি গুদাম ভাড়া নিই। আজকের আগুনের ঘটনায় আমার গুদামের সব মালামাল পুড়ে গেছে। এতে আমার প্রায় ৩৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আজ দুপুরে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আফতাব আহমেদকে আহ্বায়ক করা হয়। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. উমর ফারুক বলেন, ভবনটি অনুমোদনহীন। তাঁদের গাফিলতি ও অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাতের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। অগ্নিকাণ্ডে যেসব পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সহায়তা করা হবে।

জাবালে নুর টাওয়ার ভবনটি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) জোন-৭–এর আওতাধীন। এ জোনের ইমারত পরিদর্শক বিটু কুমার বলেন, ‘আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আগামীকাল রোববার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী জাবালে নুর টাওয়ারের ব্যাপারে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ভবন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগে মালিক ফারুক হোসেন ও নুরে আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাঁরা বারবার সংযোগ কেটে দেন।

ঢাকার কেরানীগঞ্জে জাবালে নুর টাওয়ার নামের একটি বহুতল ভবনের ভূগর্ভস্থ গুদামে শনিবার ভোরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১২ ঘণ্টা পর নিভল কেরানীগঞ্জের বহুতল ভবনের আগুন