পারিবারিক কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সহকারী কোচের চাকরি ছাড়লেন সাবেক প্রোটিয়া ব্যাটার নিক পোথাস। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি চাকরি ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে লিখেছেন, ‘আই উইল মিস ইউ।’

নিক পোথাস ২০২৩ সালের বাংলাদেশের কোচিং স্টাফে যোগ দেন। ২০২৬ সালের মার্চ পর্যন্ত বিসিবির সঙ্গে চুক্তি ছিল তার। কিন্তু আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগেই দায়িত্ব ছেড়ে দিলেন এই কোচ। আপাতত পরিবারকে কিছু সময় দিতে চান বলেও উল্লেখ করেছেন পদত্যাগ বার্তায়।

ফেসবুকে পোথাস লিখেছেন, ‘সব ভালো জিনিসের মতো আমার এই অধ্যায়ও শেষ হতো। বাংলাদেশ ক্রিকেটের অনেকের সঙ্গে আমার অসাধারণ সময় কেটেছে। আমরা একসঙ্গে অনেক রেকর্ড গড়েছি, ইতিহাস গড়েছি এবং অসাধারণ স্মৃতি সঞ্চয় করেছি। এখন পরিবারের সঙ্গে কিছু ভালো সময় কাটানোর অপেক্ষা। এরপর দেখা যাবে পরের অধ্যায়ে কী আছে।’

বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য শুভকামনা জানিয়ে পোথাস লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেটে সামনে অসাধারণ একটা বছর অপেক্ষা করছে। দলের সকলের জন্য শুভকামনা। তোমাদের মিস করবো।’

নিক পোথাস বাংলাদেশ দলের সহকারী কোচ হিসেবে যোগ দেওয়ার আগে ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ মৌসুমে যথাক্রমে শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের হেড কোচ ছিলেন। তিনি অ্যাসিস্ট্যান্ট কোচ, ফিল্ডিং কোচের ভূমিকায়ও ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে তিনি আন্তর্জাতিক ওয়ানডে খেলেছেন এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রায় ১৬ হাজার রান করেছেন।

সম্প্রতি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাংলাদেশ দলের সহকারী কোচের দায়িত্ব নিয়েছেন। তবে ব্যাটিং কোচের দায়িত্বই পালন করছেন তিনি। এটাও পোথাসের চাকরি ছাড়ার কারণ হতে পারে। এছাড়া চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে ছাঁটাইয়ের পর বিদেশি কোচিং স্টাফদের মধ্যেও একটু অস্বস্তি ছিল। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ

‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।

অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।

শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।

কর্মসূচি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ