‘টিউলিপ কীভাবে রাশিয়ায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন?’
Published: 19th, January 2025 GMT
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, টিউলিপ আরেকটি দেশের রাজনৈতিক দলের সদস্য। তিনি বাংলাদেশের নাগরিক নন, এমনকি কমন সিটিজেনও নন। তিনি কীভাবে প্রধানমন্ত্রী (ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) খালার সঙ্গে রাশিয়া গিয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন?
গতকাল শনিবার ‘প্রবাসী আয় বৃদ্ধিতে করণীয়’ শীর্ষক সেমিনার ও আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী দলের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, আর্থিক কেলেঙ্কারিসহ টিউলিপের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছিল। তিনি পদত্যাগ করতে দেরি করে ফেলেছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁকে এমপির পদ থেকেও সরে দাঁড়াতে হবে। এমনকি লেবার পার্টির সদস্য পদও হারাতে পারেন।
প্রবাসীদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়ে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বিদেশি হাইকমিশন ও ব্যাংকগুলোকে প্রবাসীদের সেবায় আরও বেশি আন্তরিক হতে হবে। এয়ারপোর্টের প্রবাসী লাউঞ্জে যে বার্গার দেওয়া হচ্ছে, তা তারা খেতে অভ্যস্ত কিনা সেটি বুঝতে হবে। প্রবাসীরা সোনার হরিণ। তাদের সঠিকভাবে লালন-পালন করা প্রয়োজন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অভিবাসন বিশ্লেষক ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। তিনি বলেন, দেশের চারদিকে যে চাকচিক্য দেখা যাচ্ছে তা অভিবাসীদের কারণেই সম্ভব হচ্ছে। রেমিট্যান্স যোদ্ধারাই দেশের রিয়েল হিরো।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেলাল হোসেন, ডিবেটিং সোসাইটির মডারেটর অধ্যাপক তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম ও অধ্যাপক কাজী আহসান হাবীব ও বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক তামান্না বেগম। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি।
সেমিনার শেষে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০২৪ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও রানার্স আপ বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের বিতার্কিকদের পুরস্কার ও সনদপত্র দেওয়া হয়।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘বন্দে মাতরম’ নিয়ে সরব মোদি কেন শেষ পর্যন্ত চুপসে গেলেন
ভারতের নির্বাচন কমিশন ও তার কাজ–সম্পর্কিত পাঁচটি প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে মুখোমুখি বিতর্কে বসার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন লোকসভার বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী। কিন্তু অমিত শাহ তা গ্রহণ করলেন না। নির্বাচন ঘিরে কমিশনের (ইসি) এখতিয়ার এবং ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন পদ্ধতি (এসআইআর) নিয়ে বিরোধীদের তোলা প্রশ্নের উত্তরগুলো তাই অনুচ্চারিতই রয়ে গেল।
এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর আজ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন দেয়নি। লোকসভার দুই দিনের বিতর্ক শেষেও তা পাওয়া গেল না। বিতর্ক ঘিরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জবাব কার্যত রাজনৈতিক হয়ে রইল।
লোকসভার শীতকালীন অধিবেশনের শুরু থেকেই বিরোধীরা এসআইআর নিয়ে আলোচনার দাবি তুলেছিলেন। অন্যদিকে সরকার চাইছিল জাতীয় গান ‘বন্দে মাতরম’–এর সার্ধশতবর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে আলোচনা করতে। বিরোধীরা সরকারের দাবি মেনে নেওয়ায় সরকারও বাধ্য হয় বিরোধীদের দাবি মানতে।
তবে আলোচনা শুধু ‘এসআইআর’–এর মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সরকার ঠিক করে, বিতর্কের বিষয়বস্তু হবে ‘নির্বাচনী সংস্কার’। সরকার জানায়, প্রথমে আলোচিত হবে ‘বন্দে মাতরম’, পরে নির্বাচনী সংস্কার।
বিরোধীরা বলেন, আরএসএসের সদর দপ্তর ও শাখাগুলোতেও ‘বন্দে মাতরম’ গান গাওয়া হয়নি। এমনকি বহু বছর আরএসএস শাখা ও সদর দপ্তরে স্বাধীন দেশের জাতীয় পতাকাও তোলা হয়নি।বিজেপি ও সরকার ‘বন্দে মাতরম’ বিতর্কে কোণঠাসা করতে চেয়েছিল প্রধানত কংগ্রেসকে। তাদের অভিযোগ ছিল, কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রধানত জওহরলাল নেহরু ‘বন্দে মাতরম’ গানের অঙ্গচ্ছেদের জন্য দায়ী এবং সেটি তিনি করেছিলেন মুসলিম লিগ ও মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর চাপে। তাদের মতে, ওটা ছিল কংগ্রেসের ‘মুসলিম তোষণের’ বড় প্রমাণ।
কিন্তু লোকসভা ও রাজ্যসভার বিতর্কে দেখা গেল, সব বিরোধী দল ‘বন্দে মাতরম’ প্রশ্নে কংগ্রেসের পাশে দাঁড়াল, এমনকি বিজেপির শরিক জেডিইউ পর্যন্ত। প্রত্যেকেই তথ্য দিয়ে জানাল, ‘বন্দে মাতরম’–এর প্রথম দুই স্তবক রেখে বাকিগুলো না গাওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল খোদ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। তাঁর সঙ্গে পূর্ণ সহমত হয়েছিলেন মহাত্মা গান্ধী, সরদার বল্লভভাই প্যাটেল, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, বাবাসাহেব আম্বেদকরেরা।
দ্বিতীয়ত, প্রত্যেক বিরোধী বক্তা এই বিতর্কে বিজেপিকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করান, স্বাধীনতা সংগ্রামে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) বিন্দুমাত্র ‘ইতিবাচক ভূমিকা’ না থাকার অপরাধে। এই অভিযোগেও বিজেপিকে বিদ্ধ হতে হলো যে তারাও বহু বছর পর্যন্ত ‘বন্দে মাতরম’ উচ্চারণ করেনি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভাষণ, যিনি ‘বন্দে মাতরম’-এর স্রষ্টা বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে ‘বঙ্কিমদা’, বিপ্লবী পুলিনবিহারী দাসকে ‘পুলিন বিকাশ’ ও সূর্য সেনকে ‘মাস্টার’ বলে অভিহিত করে ক্ষীণ ‘ইতিহাসজ্ঞানের’ পরিচয় দেওয়ার পাশাপাশি নিজেকে হাস্যাস্পদও করে তুলেছেন।বিরোধীরা বলেন, আরএসএসের সদর দপ্তর ও শাখাগুলোতেও ‘বন্দে মাতরম’ ওই গান গাওয়া হয়নি। এমনকি বহু বছর আরএসএস শাখা ও সদর দপ্তরে স্বাধীন দেশের জাতীয় পতাকাও তোলা হয়নি। একের পর এক বিরোধী নেতা বরং বলেছেন, কংগ্রেস নেতা–কর্মীরা যখন ‘বন্দে মাতরম’ গাইতে গাইতে ফাঁসির মঞ্চে এগিয়ে গেছেন, আরএসএস তখন ব্রিটিশ শাসকদের ‘পক্ষে’ কাজ করেছে।
অমিত শাহ ভোট চুরির অভিযোগ তুললেন জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরার বিরুদ্ধে