ম্যাচ জেতানো নুনেজকে ‘শেষ ৩০ মিনিটের’ সেরা বললেন স্লট
Published: 19th, January 2025 GMT
একটা গোল যে কতটা আরোধ্য সেটা আরেকবার প্রমাণ করলেন দারউইন নুনেজ। শনিবার (১৮ জানুয়ারি, ২০২৫)ব্রেন্টফোর্ডের মাঠে লিভারপুল ম্যানেজার আর্নে স্লট হয়ত ধরেই নিয়েছিলেন নিশ্চিত দুটা পয়েন্ট হারাতে যাচ্ছে তার দল। তবে যোগ করা সময়ে নুনেজের জোড়া গোলে ব্রেন্টফোর্ডকে ২-০ গোলে হারিয়েছে লিভারপুল।
একঝাক ফরোয়ার্ডে ঠাসা লিভারপুলের প্রথম একাদশে জায়গা হয় না নুনেজের। তবে বদলি হিসেবে যখনই নামেন, নিজের ছাপ রেখে দলকে জেতাতে ভূমিকা রাখেন এই উরুগুয়ান। শেষ আড়াই বছরে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে বদলি হিসেবে নেমে সবচেয়ে বেশি গোলের সাথে জড়িত এই ২৫ বছর বয়সী স্ট্রাইকার। তাইতো নায়কোচিত পারফরম্যান্স করে ম্যাচ জেতানোর পর নুনেজকে ‘শেষ ৩০ মিনিটের’ সেরা হিসেবে অ্যাখ্যা দিলেন লিভারপুল ম্যানেজার স্লট।
নুনেজের শেষ মুহূর্তে গোল করার ক্ষমতাকে লিভারপুলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন স্লট। এই উরুগুয়ান ২০২২ সালের গ্রীষ্মে মার্সিসাইডের দলটিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে সবচেয়ে বেশি গোলে অবদান রেখেছেন বদলি হিসেবে। মোট ১১টি গোলে তিনি জড়িত, যার মাঝে ৭টি করেছেন নিজে এবং ৪টি করিয়েছেন সতীর্থদের দিয়ে।
আরো পড়ুন:
হোঁচট খেয়ে আর্তেতা দুষলেন ফুটবলার স্বল্পতাকে
ড্রয়ের পর লিভারপুল ম্যানেজার জানালেন, ‘এর বেশি চাওয়া যায় না’
নুনেজের প্রশংসা করতে গিয়ে নুনেজ বলেন, “সে (নুনেজ) যখনই মাঠে নামে সবসময় অনেক প্রভাব ফেলে। ম্যাচে শক্তি এবং তেজ এনে দেয়। তার বদলি হিসেবে গোল করার ক্ষমতা আমাদের জন্য অসাধারণ একটি সুবিধা। বেশিরভাগ ম্যাচে আমরা শেষ ৩০ মিনিটে প্রতিপক্ষের ১৮ গজের আশেপাশে বল নিয়ন্ত্রণে রাখি। নিঃসন্দেহে সে (নুনেজ) তখন সেরা।”
এই জয়ের ফলে লিভারপুল ২১ ম্যাচে ৫০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চূড়ায়। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আর্সেনালের চেয়ে ছয় পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছে। একই দিনে ঘরের মাঠে অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করা আর্সেনাল ২২ ম্যাচে ৪৪ পয়েন্ট নিয়ে আছে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল আর স ন ল
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।