চারিদিকে ষড়যন্ত্রের আগুন জ্বলছে: গোলাম পরওয়ার
Published: 19th, January 2025 GMT
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘‘আমাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে আমাদের সন্তানরা। তাদের সেই মর্যাদা আমাদের রক্ষা করতে হবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘২০১৪ সালের নির্বাচন ছিল ভোটারবিহীন, ১৮ সালে হয় নিশিরাতের নির্বাচন, আর ২৪ সালে হয় ডামি নির্বাচন। সুতরাং এমন নির্বাচন আর দেশবাসী দেখতে চায় না। ডামি নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন দেখেছিল। এদেশের ছাত্র-জনতার মাধ্যমে আল্লাহ তাদের সেই অপশাসন থেকে দেশবাসীকে রক্ষা করেছেন।’’
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর ডিগ্রি কলেজ মিলনায়তনে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবে জামায়াত: গোলাম পরওয়ার
জামায়াতের লড়াই চালু থাকবে: ডা.
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ এ দেশের মালিক ছিল না। তারা দেশের মালিক থাকলে দেশ ছেড়ে পালাত না। বাড়িওয়ালা বাড়ি ছেড়ে পালায় না বরং ভাড়াটিয়া খেলাপি হলে পালিয়ে যায়। শেখ হাসিনা দেশ থেকে চলে গেলেও দেশকে শান্তিতে রাখতে দিচ্ছে না। চারদিকে ষড়যন্ত্রের আগুন জ্বলছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ওপর অবিচার করা হয়েছে কিন্তু আমরা বলি আওয়ামী লীগের ওপর সুবিচার করা হোক। কেননা সুবিচার করা হলেও তাদের শাস্তি হবে। তাদের বিচার হতে হবে এ জন্য যে, আর কেউ যেন এমন দুর্বৃত্ত না হতে পারে।’’
ডুমুরিয়া উপজেলা আমীর মাওলানা মুখতার হুসাইনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের জেলা সহকারী সেক্রেটারি মুন্সী মঈনুল ইসলাম ও অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম। বক্তৃতা করেন, উপজেলা সেক্রেটারি সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি আব্দুর রশিদ ও মাওলানা ফরহাদ আল মাহমুদ, কর্মপরিষদ সদস্য আলমগীর হোসেন প্রমুখ।
এ আগে সকালে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার শহীদ আব্দুল মোতালেব একাডেমি মিলনায়তনে অনুরূপ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন।
সেখানে জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘‘আমরা একটি ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ গড়তে চাই। দুর্নীতিবিহীন দেশ গড়তে চাই। এ জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।’’
জামায়াতের দেওয়া ৪১ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আনুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে। আমরা দেশবাসী শুধু জামায়াতে ইসলামী নয়; দেশের আপামর জনগণ জাতি-ধর্ম-দলমত নির্বিশেষে এ দেশে যাদের জন্ম হয়েছে; দেশটাকে যারা ভালবাসে, আমরা সবাই মিলে দেশটাকে গড়তে চাই। আমরা ইনসাফভিত্তিক উন্নয়ন উপহার দিতে চাই।’’
ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসল ম উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন বাতিলের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান সিপিবির
আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ‘নির্বাচন বাতিল বা বিলম্বের ষড়যন্ত্র’ রুখে দিতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটি বলেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও শোষণমুক্ত সমাজ গড়তে হলে সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদবিরোধী আন্দোলনকে জোরদার করতে হবে।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মিরপুরের ঈদগাহ মাঠসংলগ্ন সেনপাড়ায় সিপিবি ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় এ আহ্বান জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর উত্তরের সভাপতি হাসান হাফিজুর রহমান এবং সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের এই শাখার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ফেরদৌস আহমেদ।
সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির। আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক লূনা নূর, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মোতালেব হোসেন ও মহানগর কমিটির সদস্য রিয়াজ উদ্দিন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী সাজ্জাদ জহির বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত চার মূলনীতি সমুন্নত রাখতে হবে। শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করতে শ্রমিক, কৃষক, যুব ও নারী সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে হবে। বামপন্থীদের সরকার গঠন করতে সব দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাঁদের নেতৃত্বেই আগামী দিনের ক্ষমতায় লড়াইকে অগ্রসর করতে হবে।
সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান ছিল, আজ তারাই রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন স্তরে পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেবল ক্ষমতার পরিবর্তন নয়, ব্যবস্থার পরিবর্তনই সময়ের দাবি। কমিউনিস্টরা সেই ব্যবস্থার পরিবর্তনের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আহ্বান জানাই, গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। আগামীকাল থেকেই আমরা জাতীয় নির্বাচনের কাউন্টডাউন (ক্ষণগণনা) দেখতে চাই।’
নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু না হলে জনগণের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়বে বলে উল্লেখ করেন রুহিন হোসেন। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে। কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি, লুটপাট ও শোষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা বদলের সংগ্রামকে জনগণের আন্দোলনে রূপ দেবে।’
সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দেশীয় দোসরদের হাতে দেশের সম্পদ লুট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সিপিবির ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এখনো অনিশ্চিত যে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না। কারণ, বর্তমান সরকার এখনো সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেনি। জনগণ আজ অর্থনৈতিক সংকট, বৈষম্য ও দুর্নীতির শিকার। একদিকে জনগণের ঘামঝরানো টাকায় দেশ চলছে, অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দোসররা দেশের সম্পদ লুট করছে। সমুদ্রবন্দর, গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগসহ জাতীয় সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। এটি দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।