কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দাফনের প্রায় ৩৮ দিন পর কবর থেকে তরিকুল শেখ (৩২) নামের এক ট্রাকচালকের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার কয়া ইউনিয়নের উত্তর কয়া বাইতু্ল মামুর কবরস্থান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। তিনি ওই এলাকার ছাবদুল শেখের ছেলে ছিলেন।

আদালতের নির্দেশে মরদেহটি উত্তোলন করা হয়। এসময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.

মহসিন উদ্দিন, কুষ্টিয়া সদর থানার উপপরিদর্শক মো. খায়রুজ্জামান ও নিহতের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ বলছে, গাঁজা না পেয়ে চালককে হত্যা করেছিলেন হেলপার আল আমিন।

স্বজনের ভাষ্য, পাওনা টাকার জেরে তরিকুলকে হত্যা করে দুর্ঘটনার নাটক সাজিয়েছিলেন হেলপার আল আমিন শেখ। তিনি খোকসার শিংগুড়িয়ার চরপাড়া এলাকার আক্কাস আলীর ছেলে।

তবে পুলিশ জানায়, নিহত তরিকুল শেখ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ট্রাকচালক ছিলেন। ২০২৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর তরিকুল মোংলার বন্দরে থেকে পঞ্চগড় যাচ্ছিলেন। পথে কুষ্টিয়ার বাইপাস সড়কের জগতি এলাকায় পৌঁছালে তার কাছে গাঁজা চান হেলপার আল আমিন। সেসময় গাঁজা না দেওয়ায় লোহার গ্রিসগান দিয়ে তরিকুলের মাথা, গলা, মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে হত্যা করেন তিনি। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে তিনি সড়ক দুর্ঘটনার নাটক সাজান এবং সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হিসেবে ওই দিনই ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহটি দাফন করা হয়। 

পুলিশ আরও জানায়, ঘটনার দুদিন পর ১৬ ডিসেম্বর হেলপার আল আমিন আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের হত্যার ঘটনা স্বীকার করেন। সেদিন নিহত তরিকুলের চাচা মো. আব্দুল্লাহ বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় হেলপার আল আমিনকে আসামি করা হয়। পর দিন পুলিশ মরদেহ উত্তোলনের জন্য আবেদন করে। আদালত ২২ ডিসেম্বর মরদেহ উত্তোলনের অনুমতি দেন। আর প্রক্রিয়া শেষে আজ মরদেহটি উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে মামলার বাদী মো. আব্দুল্লাহ বলেন, তারিকুলের কাছে ৫০ হাজার টাকা চান হেলপার আল আমিন। টাকা না পেয়ে তরিকুলকে লোহার গ্রিসগান দিয়ে হত্যা করে দুর্ঘটনার নাটক সাজিয়েছিলেন। পরে আসামি সত্যটা স্বীকার করেছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. খায়রুজ্জামান বলেন, গাঁজা না পেয়ে চালককে হত্যা করেছিলেন আল আমিন। আদালতের জবানবন্দিতে আসামি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। বর্তমানে আসামি কারাগারে রয়েছেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন উদ্দিন বলেন, আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে কবর থেকে মরদেহটি উত্তোলন করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দ র ঘটন মরদ হ ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্গাপূজায় অরাজকতা রোধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান মহিলা পরিষদের

প্রতিবছর বাঙালি হিন্দুদের সর্বজনীন দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে নানা সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটে। আসন্ন দুর্গাপূজায় যেন কোনো ধরনের অরাজকতা না ঘটে, সে জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন থেকে এ আহ্বান জানানো হয়। ‘বৈচিত্র্যকে সম্মান করি, সাম্প্রদায়িকতা পরিহার করি, সম্প্রীতি বজায় রাখি’ শিরোনামে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মহিলা পরিষদের উদ্যোগে ঢাকার পাশাপাশি দেশের সব জেলায় একযোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ফওজিয়া মোসলেমের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, সহসভাপতি মাখদুমা নার্গিস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদা রেহানা বেগম, আন্দোলন উপপরিষদ সম্পাদক রাবেয়া খাতুন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও আন্দোলন উপপরিষদ সদস্য বহ্নিশিখা দাশ পুরকায়স্থ বক্তব্য দেন। মহিলা পরিষদের প্রোগ্রাম অফিসার নুরুননাহার তানিয়া মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন।

সভাপতির বক্তব্যে ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে নারী-পুরুষনির্বিশেষে সবার জন্য সমতা, ন্যায়বিচার নিশ্চিতের মাধ্যমে মর্যাদাকে সর্বাগ্রে স্থান দেওয়া হয়েছে। এ দেশে নানা জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও সংস্কৃতির লোকের বসবাস। সবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাষ্ট্রের পাশাপাশি মানবাধিকার সংগঠন ও সুশীল সমাজকে নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব নিতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ভূমিকা আরও কার্যকর হওয়া আবশ্যক। রাষ্ট্রকাঠামো এমন হওয়া উচিত, যাতে সবাই মিলে নিজ নিজ উৎসব নির্বিঘ্নে পালন করতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিপিবির ১৩তম কংগ্রেস ১৯-২২ সেপ্টেম্বর, ঠিক হবে ‘রণকৌশল’
  • দুর্গাপূজায় অরাজকতা রোধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান মহিলা পরিষদের