শেষ হল অপেক্ষার পালা। বহুল-প্রতীক্ষিত ফ্যামিলি গেম শো ‘ফ্যামিলি ফিউড বাংলাদেশ’র সম্প্রচার শুরু হচ্ছে আগামী ২৭ জানুয়ারি থেকে। টানটান উত্তেজনা ভরা ও পারিবারিক বিনোদন ভিত্তিক অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক হিসেবে নতুন ভূমিকায় হাজির হচ্ছেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও অভিনেতা তাহসান খান।

এ নিয়ে বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর রূপসী হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

তাহসান খান বলেন, ‘প্রথমবারের মতো এমন একটি আন্তর্জাতিক শো-তে আমি হোস্ট করতে পেরে অত্যন্ত সম্মানিত ও আনন্দিত।  আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই ও পারিবারিক সম্পর্ক এবং বন্ধনের গুরুত্ব তুলে ধরতে এ ধরনের শো আমাদের সমাজে ইতিবাচক এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করতে সাহায্য করবে।’

‘ফ্যামিলি ফিউড’ বাংলাদেশে থাকছে ২৪ টি পর্ব, প্রতি পর্বে দুটো পরিবার মুখোমুখি হবে। মোট তিনটি রাউন্ডে সার্ভে প্রশ্নের সেরা উত্তরগুলো অনুমান করে পয়েন্ট জিতে নেয়ার সুযোগ থাকছে। থাকছে নগদ পুরষ্কার ও বিশেষ উপহার। বিজয়ী টিম পাবে ‘ফাস্ট মানি’ নামের বোনাস রাউন্ড খেলার সুযোগ। দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন বিষয় থেকে শুরু করে নানারকম ট্রেন্ডি টপিক নিয়ে এসব প্রশ্ন করা হয়েছে- আর প্রশ্নের মধ্যে থাকছে দেশি টুইস্ট।

আনন্দ, উত্তেজনা ও বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতায় পরিপূর্ণ এই অনুষ্ঠানে থাকছে বেশ কয়েকটি স্পেশাল এপিসোড। এই স্পেশাল এপিসোডগুলোতে থাকবেন মনোজ প্রামাণিক, শাহনাজ খুশি, বৃন্দাবন দাশ, মৌসুমী মৌ ও মারিয়া কিসপট্টার মতো তারকারা।

২৭ জানুয়ারি থেকে একটি বেসরকারি টিভিতে প্রচারের পর শো-টি দেখা যাবে বঙ্গ অ্যাপে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ

‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।

অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।

শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।

কর্মসূচি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ