মোহাম্মদ সালাহ রীতিমতো উড়ছেন। আর উড়তে উড়তে সাফল্যের পাখায় নতুন নতুন রেকর্ডও যুক্ত করে নিচ্ছেন। এই যেমন মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে লিলের বিপক্ষে গোল করে লিভারপুলকে জেতান ২-১ ব্যবধানে। আর এই গোলের মাধ্যমে স্পেশাল সালাহ ছুঁয়ে ফেলেন অন্যরকম একটি ফিফটি।

এটা ছিল লিভারপুলের জার্সি গায়ে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় তার ৫০তম গোল। তার আগে লিভারপুরের ইতিহাসে আর কেউ ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় ৫০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করতে পারেননি। সাবেক তারকা স্টিভেন জেরার্ড করেছিলেন সর্বোচ্চ ৪১ গোল।

৫০ গোলের মধ্যে সালাহ চ্যাম্পিয়নস লিগে করেছেন ৭৩ ম্যাচে ৪৫ গোল। তার মধ্যে ৩১ ম্যাচে ২০টিই করেছেন ঘরের মাঠে। এছাড়া অ্যানফিল্ডে ১৭টি গোলে করেছেন অ্যাসিস্টও। বাকি ৫ গোল করেছেন ইউরোপা লিগে। ৫০ গোল নিয়ে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় সালাহ আছেন নবম স্থানে।

আরো পড়ুন:

পিএসজিতে যাবেন সালাহ!

লিভারপুল ছাড়ার ইঙ্গিত দিলেন সালাহ

মাইলফলক ছুঁয়ে সালাহ বলেছেন, ‘‘আশা করছি ৫০ গোলের মাইলফলক ছোঁয়ার ক্ষেত্রে আমিই লিভারপুলের সবশেষ জন হব না। তবে এটা এমন একটা বিষয় যেটাতে আমি খুবই খুশি এবং গর্বিত। বিশেষ করে ম্যাচটি আমরা জিতেছি তাই। ম্যাচ জেতাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’’

‘‘আমি আসলে ম্যাচের আগে এই বিষয়টি নিয়ে ভাবিনি। লিলের অনেক ভালো গেম প্লান নিয়ে মাঠে নামে। তারা সবশেষ ২১ ম্যাচ ধরে অপরাজিত। সুতরাং তারা অনেক কঠিন প্রতিপক্ষ। আমি খুশি যে তাদের বিপক্ষে জিততে পেরেছি।’’ যোগ করেন সালাহ।

দারুণ ফর্মে থাকা সালাহ মৌসুম শেষে লিভারপুলে থাকবেন কিনা সেটা এখনও নিশ্চিত নন, ‘‘আমি আসলে এই বিষয়ে নিশ্চিত নই। আমি আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করবো।

তবে এই মৌসুমে সালাহর দুর্দান্ত পারফরম্যান্স লিভারপুলের কর্মকর্তাদের ওপর চাপ তৈরি করছে তাকে আরও এক মৌসুম রেখে দিতে। তার সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করতে।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র কর ড ৫০ গ ল কর ছ ন ইউর প

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ

‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।

অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।

শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।

কর্মসূচি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ