মির্জাপুরে ধর্ষণের শিকার নবম শ্রেণির ছাত্রী সন্তান প্রসব করেছে। তবে সন্তানের পিতৃপরিচয় আদায় করতে না পেরে বিপাকে পড়েছে ভুক্তভোগী পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে মহড়া ইউনিয়নের একটি গ্রামে। ধর্ষকের উপযুক্ত শাস্তি ও সন্তানের পিতৃপরিচয়ের দাবিতে টাঙ্গাইল নারী শিশু আদালতে মামলা করেছেন কিশোরীর বাবা।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২৪ সালের ১৪ এপ্রিল ভুক্তভোগী তার দাদিকে খুঁজতে গ্রামের পুড়া পুকুর পাড়ে যাচ্ছিল। এ সময় আব্দুল রশিদ (৫৫) নামে একজন মেয়েটিকে বাড়িতে ডেকে নেয়। তখন বাড়িতে রশিদ ছাড়া কেউ ছিল না। এই সুযোগে কিশোরীকে ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে। ওই কথা কাউকে বললে প্রাণে মারার হুমকি দেয় আব্দুর রশিদ। এরপর অনেকদিন কেটে গেলে কিশোরীর শারীরিক পরিবর্তন দেখে বাড়ির লোকজন তার কাছে বিষয়টি জানতে চান। পরে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে পরিবারের লোকজন জানতে পারেন সে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

ভুক্তভোগীর স্বজন অভিযুক্ত আব্দুর রশিদের সঙ্গে কথা বললে ওই কিশোরীকে সামাজিক মর্যাদা দিয়ে বিয়ে করতে রাজি হয়। তবে গর্ভের সন্তানের পিতৃপরিচয় দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এরই মধ্যে গত ২২ ডিসেম্বর একটি মেয়ে সন্তান প্রসব করে ধর্ষণের শিকার মেয়েটি। সন্তান প্রসবের পরও অভিযুক্ত রশিদ কিশোরীকে বিয়ে করতে রাজি আছে। তবে সন্তানের পিতৃপরিচয় দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পাঠায়।

গত ৫ জানুয়ারি কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে টাঙ্গাইল নারী ও শিশু আদালতে অভিযোগ দেন। বাদী বলেন, ‘আমি দরিদ্র অসহায়। আমার কুমারী মেয়ে সন্তান প্রসব করেছে। এই সন্তান নিয়ে পাড়া প্রতিবেশী এবং এলাকার মানুষ নানা ধরনের কথা বলে। সন্তানের লালন-পালন করা আমাদের পক্ষে খুব কঠিন। অতি কষ্টে আমরা শিুটির লালন-পালন করছি। আমার মেয়ের সর্বনাশকারীর উপযুক্ত বিচার চাই।’

মহেড়া ইউপি চেয়ারম্যান বিভাষ সরকার নুপুরের ভাষ্য, বিষয়টি লোকমুখে শুনেছেন। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ অভিযোগ দেননি। তবে এই ঘৃণ্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির শাস্তি হওয়া উচিত।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন

তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের। 

দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত। 

আরো পড়ুন:

রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন

টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়

প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।

তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।

গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে। 

সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়। 

ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে। 

২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ