এ বছরেই নির্বাচনসহ সাত বিষয়ে একমত
Published: 23rd, January 2025 GMT
বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন খেলাফত মজলিসের নেতারা। গতকাল বুধবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে এ বৈঠক হয়। বিএনপি ও খেলাফত মজলিস– দুই দলই দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে ২০২৫ সালের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করাসহ সাত বিষয়ে একমত হয়েছে।
চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে একসময়ের ‘জোটচ্যুত’ খেলাফত মজলিসের সঙ্গে বৈঠকে দলটির ৯ সদস্যের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ছিলেন। তারা প্রায় দুই ঘণ্টা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
বৈঠক শেষে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘যারা দীর্ঘদিন আমাদের আন্দোলনের সঙ্গী ছিল, জোটবদ্ধভাবে আন্দোলন করেছি, যুগপৎ আন্দোলন করেছি এবং ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনে ইসলামী দলগুলোর মধ্যে যারা সক্রিয় ছিল– তার মধ্যে খেলাফত মজলিস অন্যতম।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, তারা দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা করেছেন। দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণের লক্ষ্যে কী করণীয়, এ সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে একমত হয়ে আন্দোলন করেছি বহু বছর ধরে। এ আলোচনায় আমাদের মধ্যে তেমন কোনো দ্বিমত নেই, আমরা একমত হয়েছি।’
ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানের বৈঠকের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘তারা (জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন) তাদের রাজনৈতিক বিশ্বাস থেকে যা উচিত মনে করবে, নিশ্চয়ই তা করবে।’
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ‘সাতটি বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি, তা হলো জাতীয় ঐক্য সুসংহত করার জন্য আন্তঃদলীয় সংলাপ অব্যাহত রাখা; দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে ২০২৫ সালের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান; দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ; আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়া; ইসলামী মূল্যবোধ সমুন্নত ও ধর্মীয় সম্প্রীতির রক্ষার জন্য সবাইকে ইতিবাচক ভূমিকা রাখা; পতিত স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ যাতে মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে না পারে– সে জন্য জাতীয় ঐক্য অটুট রাখা। খুন, গুম, হত্যা, নির্যাতনে জড়িতদের দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করা; আওয়ামী সরকারের সময় আলেম-ওলামা ও নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা দ্রুত প্রত্যাহার করা।’
প্রসঙ্গত, ধর্মভিত্তিক দলগুলোর মধ্যে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে ছিল খেলাফত মজলিস। ২০২১ সালে তারা জোট ছেড়ে যায়। জোট ছাড়ার পর এই প্রথম তারা বিএনপির সঙ্গে আনুষ্ঠনিক বৈঠক করল। যদিও গত মাসে খেলাফত মজলিসের সম্মেলনে তারা বিএনপি মহাসচিবসহ নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
৮৭ কোটি টাকা মানিলন্ডারিং, গাজীসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা
সাবেক বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী এবং নারায়ণগঞ্জ (রূপগঞ্জ-১) এর সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী (৭৭) ও তার সাবেক পিএস এমদাদুল হক (৫২) সহ মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে সিআইডি।
মামলার অন্য অভিযুক্তরা হলেন- সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নীলা (৫৭), তোফায়েল আহমেদ আলমাছ (৫৫), মো. মাহাবুবুর রহমান জাকারিয়া মোল্লা (৪৮), মো. আনছার আলী (৫৫), আলফাজ উদ্দিন (৬৩) ও দিমন ভূঁইয়া (৫৫)।
প্রতারণাপূর্বক চাঁদাবাজীর মাধ্যমে ভুয়া দলিল তৈরি করে অবৈধভাবে মোট ২৪০১.৪৬ শতাংশ জমি (যার বর্তমান সরকারি বাজারমূল্য ৮৬ কোটি ৭৮ লাখ ৮৭ হাজার ৬৪৪ টাকা) জবর দখল, হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করায় তাদের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট রূপগঞ্জ থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ৪৩
মামলার এজাহার ও সিআইডি সূত্রে জানাগেছে, অভিযুক্তরা অজ্ঞাত ৭/৮ জন ব্যক্তির সহায়তায় একটি সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র গড়ে তোলে। অপরাধ চক্রটি পরস্পর যোগসাজশে গত ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি হতে ২০২৪ সালের ২০ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ভিকটিম মো. শাহ আলমের ১২৪ শতাংশ, আব্দুস সোবহান মিয়ার ১০ শতাংশ, নাঈম প্রধানের ১৮ শতাংশ, হাসিনা বেগমের ০৯ শতাংশ, আলেয়ার ৪৫ শতাংশ, ইয়াছিন প্রধানের ২৭.৫ শতাংশ, সানজুরা বেগমের ০৪ শতাংশ, মো. আশরাফ উদ্দিন ভুইয়ার ৭২ শতাংশমোস্তফা মনোয়ার ভুইয়ার ৩৪৬ শতাংশ, মো. হাবিব খানের ১৮৩.৫ শতাংশ, রাশিদা ভুইয়ার ১২৪ শতাংশ, আমজাদ আলী ভুইয়ার ৭৬০.৫ শতাংশ, মোবারক ভুইয়ার ৩১ শতাংশ, নূর-ই-তাছলীম তাপসের ৪৩০.৭ শতাংশ, মো. মাহবুবুল হক ভুইয়ার ৭১.৪৭ শতাংশ ও মোহাম্মদ মাহমুদুল হকের ৬৫ শতাংশসহ সর্বমোট ২৪০১.৪৬ শতাংশ জমি যার বর্তমান মূল্য (সরকারি দর অনুযায়ী) ৮৬ কোটি ৭৮ লাখ ৮৭ হাজার ৬৪৪ টাকা পরস্পর সংঘবদ্ধভাবে প্রতারণাপূর্বক চাঁদাবাজির মাধ্যমে ভুয়া দলিল সৃজন করে অবৈধভাবে স্থাবর সম্পত্তি জবর দখল করে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করেছে।
এ বিষয়ে সিনিয়র স্পেশাল জজ, মহানগর আদালত, ঢাকার পারমিশন পিটি. নং- ৬৮৪/২০২৫, তারিখ-৮ জুলাই ২০২৫ খ্রি. মুলে সম্পত্তি ক্রোক করা আছে, যার বর্তমান বাজার মূল্য ৪০০ (চারশত) কোটি টাকা।
ক্রোককৃত সম্পত্তির রিসিভার হিসেবে বিজ্ঞ সিনিয়র স্পেশাল জজ, মহানগর আদালত, ঢাকা সিআইডি প্রধান (এ্যাডিশনাল আইজিপি) কে নিয়োগ করেছেন। ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট এই মামলার তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অজ্ঞাত অপর সদস্যদের শনাক্তকরণ ও অন্যান্য আইনানুগ প্রক্রিয়ার স্বার্থে সিআইডির অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।
মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাবজাল বলেন, মামলাটি থানায় দায়ের হলেও তদন্ত করছে সিআইডি।