সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) এবারের সম্মেলন বাংলাদেশের জন্য ছিল অতি গুরুত্বপূর্ণ। পাঁচ দিনব্যাপী এ সম্মেলনে এবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি ছিল সবার বিশেষ আগ্রহ। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, বিভিন্ন নামি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে। তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন ড.

ইউনূস। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানেও আশিয়ান সদস্যভুক্ত দেশের প্রধানদের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। এ সম্মেলনে অধ্যাপক ইউনূসের অনেক ব্যস্ততম সময় পার করতে হয়েছে। এরই ফাঁকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন। সব মিলিয়ে অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে এই সফর।

রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। 

তিনি বলেন, ডব্লিউইএফ সম্মেলন প্রধান উপদেষ্টার প্রতি অতিথিদের একটি বিশেষ আকর্ষণ ছিল। ড. ইউনূস জুলাই অভ্যুত্থান ও দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেছেন। তাদের অবহিত করা হয়েছে- বর্তমানে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের সুবর্ণ সময় যাচ্ছে। তাদের তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। শিগগিরই বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল সুইজারল্যান্ডে যাবেন। আবার শিগগিরই জার্মানের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসবেন। তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। বিদেশি বিনিয়োগের দিকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

শফিকুল আলম বলেন, বিগত সরকারের আমলে যেসব অর্থপাচার হয়েছে, তার একটি অংশ সুইজারল্যান্ডে গিয়েছে। এ বিষয়ে সুইজারল্যান্ডের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। তারা সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন। এছাড়া অন্যান্য দেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত দেওয়ার বিষয়েও অধ্যাপক ইউনূস আহ্বান জানিয়েছেন। সবাই সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন। পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকারের একটি।
 
প্রেস সচিব বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সে ব্যাপারেও অধ্যাপক ইউনূস পরিষ্কার করেছেন। ফেসবুকে যাতে ভুল তথ্য প্রকাশিত না হতে পারে, সেটা মেটার প্রধান নির্বাহীর কাছে উপস্থাপন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।  

সম্প্রতি ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সাক্ষাৎকার বিষয়ে এক প্রশ্নের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আসাদুজ্জামান কামাল বাংলাদেশের কসাই। বুচার অব বাংলাদেশ। যারা তার খবরাখবর ছাপেন। তাদের মনটা কেমন আপনারা বোঝেন।’

শফিকুল আলম আরও বলেন, গত অক্টোবর থেকে প্রতি মাসে রপ্তানির পরিমাণ বাড়ছে। কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বিশৃঙ্খলা করছে। তাদের মালিকরা বিগত সরকারের আমলে ব্যাংক লুট করে বিদেশে পালিয়েছে। তাদের কারণে দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে। এটা দিয়ে বিদেশি বিনিয়োগের পরিবেশ নেই এটা বলার কোনো সুযোগ নেই। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র র ইউন স র একট

এছাড়াও পড়ুন:

পরাজয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ইরান: ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান যুদ্ধে ইরান পরাজয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তেহরানের ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ আলোচনায় ফিরে আসা উচিত।

সোমবার (১৬ জুন) কানানাস্কিসে জি৭ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এই মন্তব্য করেন।

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “আমি বলব ইরান এই যুদ্ধে জিতছে না... এবং তাদের অবিলম্বে কথা বলা উচিত, খুব দেরি হওয়ার আগেই।”

আরো পড়ুন:

খামেনিকে আঘাতে ট্রাম্পের ভেটো: ইসরায়েলে প্রতিক্রিয়া কেমন?

ইসরায়েলি হামলার পর পুনরায় সম্প্রচার শুরু করল ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি

কানাডায় প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসার আগে ট্রাম্প সাংবাদিকদের আরো বলেন, “আমরা সবসময় ইসরায়েলকে সমর্থন করে এসেছি এবং ইসরায়েল খুব ভালো করছে।”

এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী টেলিগ্রামে একটি পোস্টে বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি ‘সত্যিই কূটনীতিতে বিশ্বাস করেন ও যুদ্ধ বন্ধ করতে চান, তাহলে ‘ওয়াশিংটনের একটি ফোন কলই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে চুপ করানোর জন্য যথেষ্ট’।

তিনি বলেন, “এটি কূটনীতিতে ফিরে আসার পথ প্রশস্ত করতে পারে।”

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, “ইরান যুদ্ধ শুরু করেনি এবং আরো রক্তপাত চায় না। তবে ইরান তার ভূমি ও জনগণকে রক্ষা করার জন্য ‘সম্মানের সঙ্গে, শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত’ লড়াই করবে।”

 

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ২৪ জন নিহত এবং শত শত ইসরায়েলি আহত হয়েছে। ইরানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ২২৪ জন নিহত এবং ১,০০০ জনেরও বেশি ইরানি নাগরিক আহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ