ব্র্যাক ব্যাংককে দেশসেরা ক্রেডিট রেটিং দিয়েছে এসঅ্যান্ডপি
Published: 28th, January 2025 GMT
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংস আবারও ব্র্যাক ব্যাংককে দেশসেরা ক্রেডিট রেটিং দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ব্র্যাক ব্যাংককে ‘স্থিতিশীল’ আউটলুকের সাথে ‘বি+’ রেটিং দিয়েছে।
ব্যাংকিং খাতে নানাবিধ চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিং ব্র্যাক ব্যাংকের শক্তিশালী অবস্থানের ওপর আস্থা রেখে স্থিতিশীল’ আউটলুকের সাথে ব্যাংকটির ‘বি+’ ক্রেডিট রেটিং বজায় রেখেছে। এই রেটিংটি বাংলাদেশের সার্বভৌম রেটিংয়ের সমতুল্য এবং এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংস কর্তৃক রেট করা বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।
ব্র্যাক ব্যাংক সম্পর্কে এসঅ্যান্ডপি প্রকাশিত এক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয় যে, শক্তিশালী ব্রাঞ্চ নেটওয়ার্ক এবং অনলাইন ব্যাংকিংয়ের প্রসারে লক্ষ্যণীয় সাফল্য অর্জন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক। ব্যাংকটির রিটেইল রেমিট্যান্স এবং রপ্তানিমুখী ক্লায়েন্ট বেজ এটিকে বাংলাদেশের বিদ্যমান দুর্বল অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে উদ্ভূত চ্যানলেঞ্জগুলো যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে সহায়তা করেছে।
আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের এসএমই ও রিটেইল ব্যাংকিংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে ব্যাংকটি তাদের শক্তিশালী ও সুদৃঢ় অবস্থান বজায় রাখবে। ব্র্যাক ব্যাংকের অ্যাসেট কোয়্যালিটি দেশের বিদ্যমান ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাভারেজের চেয়েও বেশ ভালো। এই সুবিধাটিকেও ব্যাংকটি ভালোভাবে কাজে লাগাতে পেরেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয় যে, ব্র্যাক ব্যাংকের ‘স্থিতিশীল’ আউটলুক ব্যাংকটির প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন। আমরা আস্থার সাথে উল্লেখ করেছিলাম যে, ব্র্যাক ব্যাংক বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জিং ব্যবসায়িক পরিবেশে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ সঠিকভাবে মোকাবিলা করার মাধ্যমে আগামী ১২ থেকে ১৮ মাস নিজেদের শক্তিশালী আর্থিক অবস্থান ধরে রাখবে এবং সেটিই করতে সক্ষম হয়েছে ব্যাংকটি।
বিশ্বের সবচেয়ে স্বনামধন্য এজেন্সি থেকে পাওয়া দেশসেরা ক্রেডিট রেটিং সম্পর্কে মন্তব্য করে ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন বলেন, “আমাদের এই অর্জন শক্তিশালী ক্যাপিটাল বেজ, অ্যাসেট কোয়্যালিটি, সুশাসন এবং পর্যাপ্ত তারল্য বজায় রাখার ব্যাপারে আমাদের অবিচল প্রতিশ্রুতির স্বীকৃতি। স্বনামধন্য আন্তর্জাতিক এজেন্সি থেকে পাওয়া এই দেশসেরা ক্রেডিট রেটিং দেশের ব্যাংকিং খাতের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের সুনাম বৃদ্ধি করতেও ভূমিকা রাখবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।”
এসঅ্যান্ডপি ছাড়াও ব্র্যাক ব্যাংককে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ক্রেডিট রেটিং দিয়েছে ক্র্যাব (এএএ) এবং মুডি‘স (বি২)।
ঢাকা/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।