বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হাফেজ মো: হোসাইন আহম্মেদকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামিকে পাশে নিয়ে খুলনায় বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর ও লুটপাটের আরেক নাশকতা মামলার আসামির জামিন না দিলে রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি ডিপো বন্ধ করে দেয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে শ্রমিকদল নেতা এসএম আসলামের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে জেলাজুড়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। 
এস.

এম আসলাম বর্তমানে মহানগর শ্রমিকদলের আহবায়কের দায়িত্বে রয়েছেন। পূর্বে তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন। এদিকে মামলার আসামি নিয়ে দাবি জানানো ওই ব্যক্তি হলেন জাহিদ হোসেন।

যিনি গোদনাইল পদ্মা ডিপোর আওয়ামী লীগ পন্থী সাবেক শ্রমিক নেতা ছিলেন। তিনি হাফেজ হোসাইনের দায়েরকৃত মামলায় ৬০ নং আসামি। অন্যদিকে, নাশকতা মামলার জামিন চাওয়া ওই আসামি হচ্ছেন, আলী আজিম। তিনি খুলনার খালিশপুরের বাইতিপাড়া রোডস্থ ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির অফিস ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার ৭৪ নং আসামি।

জানা যায়, খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আলী আজিমের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে রোববার থেকে কর্মবিরতি শুরু করে ট্যাংকলরি শ্রমিকরা। আলী আজিম গত বছরের ২১ আগস্টে খুলনা নগরের খালিশপুর থানার ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় করা এক মামলার আসামি। 

তাঁকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে যৌথভাবে কর্মবিরতির ডাক দেয় খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়ন, পদ্মা মেঘনা ও যমুনা ট্যাংকলরি শ্রমিক কল্যাণ সমিতি ও জ্বালানি তেল-সম্পর্কিত অন্য দুইটি সংগঠন। কর্মবিরতিতে খুলনা নগরের খালিশপুর এলাকায় রাষ্ট্রায়ত্ত পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। ফলে খুলনা ও ফরিদপুর অঞ্চলের ১৫টি জেলায় তেল সরবরাহ ব্যাহত হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সিদ্ধিরগঞ্জের এসও রোড এলাকায় অবস্থিত পদ্মা ডিপোর সামনে কিছুসংখ্যক ব্যক্তিদের নিয়ে প্রতিবাদ করেন আসলাম। এসময় বিএনপি নেতা আসলামের পাশে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি জাহিদ হোসেনকে বক্তব্য রাখতে দেখা যায়।

এসময় এসএম আসলাম গ্রেফতারকৃত আওয়ামী লীগ পন্থী শ্রমিক নেতা আলী আজিমের মুক্তির প্রতিবাদে ডিপো বন্ধ করে দেয়। সেই সঙ্গে মুক্তি না দিলে হরতালের হুঁশিয়ারির পাশাপাশি তেল সেক্টর অচলেরও হুমকি দেন।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ আসল ম ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ

‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।

অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।

শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।

কর্মসূচি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ