পূর্ব শক্রতার জেরে দনিয়া কলেজের শিক্ষার্থী খুন
Published: 1st, February 2025 GMT
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে দনিয়া কলেজের ছাত্র মিনহাজ হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পূর্ব শক্রতার জেরে এ ঘটনা ঘটে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের সংবাদ সম্মেলনে ডিবিপ্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক জানান, শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) পটুয়াখালী সদর থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে জেলা পুলিশের সহযোগিতায় মিনহাজ হত্যা মামলার পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি-ওয়ারী বিভাগের দল।
তারা হলো— মাহফুজ ওরফে মো.
ডিবি-ওয়ারী বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নিহত মিনহাজুল যাত্রাবাড়ী থানাধীন শনিরআখড়ার দনিয়া কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। গত ২৬ জানুয়ারি দনিয়া কলেজে অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মিনহাজুলের সাথে মাহফুজ ওরফে কিং মাহফুজসহ অন্য আসামিদের তর্কবিতর্ক হয়। পরে ২৮ জানুয়ারি বিকেলে মিনহাজ ও তার বন্ধু আহাদ দনিয়া কলেজের সামনে গেলে সেখানে মাহফুজসহ অন্য আসামিরা পরিকল্পিতভাবে সুইচ গিয়ার, চাকু, চাপাতি, রাম দাসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে মিনহাজুলকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। গুরুতর আহত মিনহাজুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহত মিনহাজুলের বড় ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে ‘কিং মাহফুজ’সহ ৯ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১০-১২ জনকে আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তকালে গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িতদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। গ্রেপ্তাররা মিনহাজকে পূর্ব শক্রতার জের ধরে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।
ঢাকা/মাকসুদ/এনএইচ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
যে কারণে ইরানের তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা
ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্যের এ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মধ্যে কয়েক দশক ধরে বৈরিতা চলছে। তবে এবারই প্রথম ইসরায়েল ইরানে হামলা চালানোর পর দুই পক্ষ সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। দুই পক্ষে পাল্টাপাল্টি হামলা তীব্র হতে থাকায় বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত শনিবার গভীর রাতে ইরানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েল একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ডিপোতে হামলা চালিয়েছে। একই সঙ্গে রাজধানী তেহরানে একটি তেল শোধনাগারেও আগুন ধরে যায়। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছেন।
বিশ্বের অন্যতম বড় গ্যাসক্ষেত্র ‘সাউথ পার্স’-এ ইসরায়েলের হামলায় আগুন লাগার পর ইরান আংশিকভাবে এ ক্ষেত্রে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। ইরান কাতারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করে থাকে।
ইসরায়েল নজিরবিহীনভাবে ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম আরও বাড়তে পারে। দুই দেশই একে অন্যের ভূখণ্ডে আরও বড় ধরনের হামলার হুমকি দিচ্ছে।
ইরান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস ও তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল মজুতের অধিকারী– এই তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের (ইআইএ) দেওয়া। ফলে দেশটির জ্বালানি অবকাঠামো দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু ছিল। তবে এতদিন ইসরায়েল ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা এড়িয়ে চলছিল, বিশেষ করে তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের চাপ ছিল। কিন্তু এবার তা বদলে গেছে।
গত শনিবার রাতে তেহরানের উত্তর-পশ্চিমে শাররান জ্বালানি ডিপো ও শহরের দক্ষিণে শার-রে অঞ্চলে অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ তেল শোধনাগারে বড় ধরনের আগুন লাগে। এ ছাড়া ইরানের দক্ষিণ বুশেহর প্রদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র সাউথ পার্স লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।
হামলায় সাউথ পার্সের ‘ফেইজ ১৪’ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে আগুন লাগে। ফলে এখানে দৈনিক ১ দশমিক ২ কোটি ঘনমিটার গ্যাস উৎপাদনকারী একটি অফশোর প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হয়ে গেছে।
ইসরায়েলের হামলার প্রথম দিনে তেল ও গ্যাস স্থাপনা বাদ পড়লেও বাজারে তেলের দাম প্রায় ৯ শতাংশ বেড়ে যায়। সোমবার বিশ্ববাজারে তেলের দামে আরও বড় উল্লম্ফন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের গবেষক অ্যালান এয়ার বলেন, ইসরায়েল চায়, ইরানের ওপর হামলায় যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়ে পড়ুক। তাদের লক্ষ্য, ইরানের এই সরকারের পতন ঘটানো। ইরানের সামরিক প্রতিক্রিয়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ, দেশের অভ্যন্তরে সম্মান রক্ষার বিষয় আছে। কিন্তু ইসরায়েলে বড় ধরনের ক্ষতি করার মতো ক্ষমতা ইরানের নেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের বন্ধুর সংখ্যা কম। আর থাকলেও ইসরায়েল পরিষ্কারভাবে দেখিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক মতামতকে পাত্তা দেয় না– বলেন তিনি।