Samakal:
2025-12-13@19:14:44 GMT

খাদ্য সংকটে লোকালয়ে হাতি

Published: 1st, February 2025 GMT

খাদ্য সংকটে লোকালয়ে হাতি

কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে খাবার, চারণভূমি ও করিডোর ধ্বংস হওয়ায় প্রায়ই লোকালয়ে হানা দিচ্ছে হাতির পাল। হাতির ভয়ে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে বন এলাকার পাশে বসবাসরত জনগোষ্ঠী। বৈদ্যুতিক ফাঁদ পেতেও নিজেদের নিরাপদ রাখার চেষ্টা করছেন স্থানীয়রা। 
চকরিয়ায় সুরাজপুর-মানিকপুর, কাকারা, লক্ষ্যাচর, ফাঁসিয়াখালী, ডুলাহাজারা, খুটাখালী, বরইতলী ও হারবাং এলাকার লোকজন আতঙ্কে বসবাস করছেন। আতঙ্কে রয়েছেন চট্টগ্রাম বনাঞ্চলের আশপাশের লোকজনও। লোকালয়ে ঢুকে পড়া হাতি তাড়াতে তৎপর বনকর্মীরা। তার পরও হানা দিচ্ছে হাতির পাল। যে কারণে বিদ্যুতের তার দিয়ে ফাঁদ পেতে রাখছেন লোকজন। বৈদ্যুতিক ফাঁদে পা দিয়ে লামার কুমারী এলাকায় একটি হাতি মারা গেছে।
পরিবেশবাদীদের অভিমত,  খাবারের খোঁজে আগে আমন ও বোরো মৌসুমে ধানক্ষেতে নামতে পারত হাতির পাল। কিন্তু তামাকের আগ্রাসনে কমে গেছে ধান চাষ। এসব কারণে লোকালয়ে আসছে হাতি।
এদিকে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের যত্রতত্র বৈদ্যুতিক ফাঁদ পাতার কারণে হাতির অবাধ বিচরণ, প্রজনন ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। নির্ধারিত করিডোর দিয়ে হাতির পাল চলাচল করে থাকে। বেশির ভাগ করিডোরে স্থাপনা গড়ে তোলায় আগের মতো চলাচল করতে পারছে না হাতির পাল।
কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মেহেরাজ উদ্দিন জানান, কক্সবাজার উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম উত্তর-দক্ষিণ বন বিভাগের ১২টি করিডোর থাকলেও বর্তমানে বেশির ভাগ হাতি চলাচলের অনুপযোগী। তাঁর ভাষ্য, কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের সংরক্ষিত বনে উখিয়া-ঘুমধুম, তুলাবাগান, টেনারছড়ি, নাইক্ষ্যংছড়ি, রাজারকুল ও কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের তুলাতলি, ঈদগড়, ভূমুরিয়াঘোনা রাজঘাট, খুটাখালী মেধা-কচ্ছপিয়া, ছাইরাখালী, মানিকপুর করিডোরের বেশির ভাগ অংশ দখল হয়ে গেছে। এসব জায়গায় জনবসতি, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা গড়ে তোলায় হাতির চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।  খুটাখালী ও মেধাকচ্ছপিয়ার ওপর দিয়ে নির্মিত রেললাইনে হাতি পারাপারের জন্য আন্ডারপাস নির্মাণের কথা থাকলেও সেখানে কোনো আন্ডারপাস করা হয়নি। ফলে হাতি পারাপারে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন বিভাগের চুনতি, সাতগড়, বদ্দোয়ারা, শুকছড়ি, কোদালা, লারিশ্যা কোদালা করিডোরেরও চিত্রও একই রকম। চুনতি অভয়ারণ্যের রেললাইনে একটি আন্ডারপাস নির্মাণ করা হলেও তা দিয়ে হাতি চলাচল করতে পারছে না। ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে একটি হাতি ট্রেনের ধাক্কায় মারা গেছে।
ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মেহেরাজ উদ্দিন বলেন, সিএমসির সহযোগিতায় বনের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের অধীন পাঁচটি বন বিটের যেসব স্থানে বন্যহাতির আবাসস্থল ছিল, সেখানে কলাগাছ ও ঘাস রোপণের মাধ্যমে খাদ্যভান্ডার তৈরি করা হয়েছে। বন বিভাগের টহল দলের তৎপরতা অব্যাহত আছে। অনেক 
স্থান থেকে হাতি মারার ফাঁদ জব্দ করা হয়েছে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বন ব ভ গ র কর ড র

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ

‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।

অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।

শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।

কর্মসূচি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ