রাজধানীর হাতিরঝিল লেক থেকে এক স্কুলছাত্রীর গলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে দক্ষিণখান থানা পুলিশ। কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ শেষে হত্যার পর বস্তাবন্দী করে লাশ গুমের উদ্দেশে হাতিরঝিলে ফেলা হয়। এই ঘটনায় রবিন ও রাব্বি মৃধা নামে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিন পেশায় গাড়িচালক এবং রাব্বি নির্দিষ্ট পেশা নেই।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) রওনক জাহান। 

তিনি বলেন, নিহত কিশোরী গত ১৬ জানুয়ারি কেনাকাটা করার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। ১৯ জানুয়ারি দক্ষিণখান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার বাবা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ তারিখে একটি মামলা করেন নিহতের বাবা। নিহত দক্ষিণখানের একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত।

মামলার তদন্তে নেমে কিশোরীর মোবাইল ফোন নম্বরের সূত্র ধরে ৩০ জানুয়ারি রবিন নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রবিনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদ করে রাব্বি মৃধা নামের আরও এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। দুইজনকে গ্রেপ্তারের পর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়। দুই দিন রিমান্ডে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন আদালত। এরপর রবিন ও রাব্বিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। 

গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত ডিসি জানান, দুই যুবক পুলিশের কাছে স্বীকার করেন, ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর সঙ্গে অনলাইনে পরিচয়ের সূত্র ধরে মহাখালীর একটি ফ্ল্যাটে ডেকে আনা হয়। তারপর তারা পাঁচজন মিলে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। এতে তার মৃত্যু হলে মরদেহ হাতিরঝিলে ফেলে দেওয়া হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই রোববার ওই কিশোরীর মরদেহ হাতিরঝিল থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

ডিসি রওনক জাহান জানান, মেয়েটিকে হত্যার দায় স্বীকার করে আজ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন রবিন ও রাব্বি মৃধা। সন্ধ্যায় তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সারা দেশে ধর্ষণের ঘটনায় মহিলা পরিষদের উদ্বেগ-ক্ষোভ

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ ও দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। আজ বুধবার সংগঠনের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে এ উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।

অভিযুক্ত ব্যক্তিদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ এবং দলবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটছে এবং উদ্বেগজনকভাবে তা বাড়ছে। এর ফলে নারী ও কন্যাশিশুর সার্বিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।

বিবৃতিতে গত কয়েক দিনে সংবাদপত্রে প্রকাশিত ঘটনা তুলে ধরে বলা হয়, গত ২৯ এপ্রিল নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় স্থানীয় ছাত্রদল নেতা ফয়সাল এক তরুণীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। ২৬ এপ্রিল গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় এক নারী পোশাককর্মীকে বিয়ের কথা বলে অভিযুক্ত ফাহিম ওরফে সোহাগ এক বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যান। পরে সেখানে ফাহিম, রাইহান ও হাফিজুল ওই নারীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় এক ভণ্ড কবিরাজ ‘জিন তাড়ানোর’ নাম করে আদিবাসী মেয়েকে ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

২৫ এপ্রিল রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজারে কিশোর গ্যাং এক কিশোরীকে গলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ উঠেছে। মোহাম্মদপুরে ১২ বছরের এক শিশুকে পূর্বপরিচিত রমজান নামের এক ব্যক্তি ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ব্যক্তি দুই বছরে শিশুটিকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

১৪ এপ্রিল সাভারের বিরুলিয়ায় এক বৃদ্ধ এক শিশুকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে।

অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে মহিলা পরিষদ। বিবৃতিতে দেশে নারী ও মেয়েশিশুর প্রতি সহিংসতার বিষয়ে শূন্য সহিষ্ণুতার নীতি গ্রহণ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া এবং নারী ও কন্যার নিরাপত্তার বিষয়টিকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়। নারীর প্রতি সহিংসতা ও অপতৎপরতা প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলারও আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সারা দেশে ধর্ষণের ঘটনায় মহিলা পরিষদের উদ্বেগ-ক্ষোভ