বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান গ্রেফতারআগরতলা বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে ভিসা সেবা চালু হচ্ছে কালফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিতরমজানে দুর্নীতিমুক্ত ত্রাণ প্যাকেজ চালু করবে পাকিস্তানরিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামানজেনিথ ইসলামী লাইফের সব সূচকেই প্রবৃদ্ধি১৫ বছরের জঞ্জাল পরিষ্কার করেই নির্বাচন হতে হবে: গোলাম পরওয়াররমজানে কম লাভ করে জনগণের পাশে দাঁড়াতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টারগুচ্ছভর্তি পরীক্ষায় থাকছে ২০ বিশ্ববিদ্যালয়জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কমে ৯.
উৎস: SunBD 24
এছাড়াও পড়ুন:
ইসলামের মৌলিক বিষয় কী কী
ইসলাম এমন এক পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা, যা মানুষকে আল্লাহর আনুগত্যে জীবন যাপন করতে শেখায়। এটি কেবল একটি ধর্ম নয়; বরং নৈতিকতা, সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি ও আত্মার পূর্ণ সমন্বিত এক দিকনির্দেশনা।
মহান আল্লাহ কোরআনে বলেন, “আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম, তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য ধর্মরূপে পছন্দ করলাম।” (সুরা মায়িদা, আয়াত: ৩)
ইসলামের মৌলিক বিষয়সমূহকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা হয়:
(১) বিশ্বাসের মৌলিক ভিত্তি (আকিদা)
(২) আমল বা কর্মভিত্তিক বিষয়সমূহ (ইবাদত, আচরণ ও নৈতিকতা)
এক. ইমান বা বিশ্বাসইমান ইসলামি জীবনের ভিত্তি। এটি ছয়টি মূল বিষয়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত, যাকে বলা হয় ইমানের ছয়টি স্তম্ভ:
১. আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস
২. ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস
৩. কিতাবসমূহের প্রতি বিশ্বাস
৪. রাসুলদের প্রতি বিশ্বাস
৫. পরকাল বা আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস
৬. তাকদিরের প্রতি বিশ্বাস। অর্থাৎ, ভালো-মন্দ উভয়টাই আল্লাহর নির্ধারণ করা।
রাসুল (স.) বলেছেন, “ইমান হল তুমি আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা, তাঁর কিতাব, তাঁর রাসুল, পরকাল এবং তাকদিরে বিশ্বাস রাখো।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৮)
এই ছয়টি বিষয়ে দৃঢ় বিশ্বাস ব্যতীত একজন ব্যক্তি মুসলমান হিসেবে গণ্য হতে পারে না।
আরও পড়ুনফিলিস্তিন ও ইসলাম: অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের ৫ দিক২০ আগস্ট ২০২৫দুই. ইসলামের পাঁচ স্তম্ভইসলামের দৃশ্যমান কাঠামো পাঁচটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। মহানবী (স.) বলেছেন, “ইসলাম পাঁচটি ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত:
(১) সাক্ষ্য দাও যে আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ তাঁর রাসুল;
(২) নামাজ কায়েম করা;
(৩) জাকাত প্রদান করা;
(৪) রমজানের রোজা রাখা;
(৫) এবং সামর্থ্য থাকলে হজ করা।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৮; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৬)
এই পাঁচটি স্তম্ভ মুসলিম জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এগুলোর মাধ্যমে একজন মুমিন আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণের ঘোষণা দেয়।
তিন. নামাজনামাজ ইসলামের মূল ইবাদত। এটি বান্দা ও আল্লাহর মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে। কোরআনে বলা হয়েছে, “নামাজ কায়েম কর; নিশ্চয় নামাজ অশ্লীলতা ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।” (সুরা আনকাবুত, আয়াত: ৪৫)
নামাজের মাধ্যমে আত্মা পরিশুদ্ধ হয়, মন প্রশান্ত হয় এবং সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়।
চার. জাকাতজাকাত ইসলামি অর্থনীতির নৈতিক ভিত্তি। এটি সমাজে সম্পদের ন্যায্য বণ্টন নিশ্চিত করে। কোরআনে আল্লাহ বলেন, “তাদের সম্পদ থেকে জাকাত গ্রহণ কর, এর দ্বারা তুমি তাদের পরিশুদ্ধ করবে ও পবিত্র করবে।” (সুরা তাওবা, আয়াত: ১০৩)
জাকাত সমাজে দরিদ্র-অসহায়দের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে এবং লোভ, অহংকার ও বৈষম্য দূর করে।
পাঁচ. রোজারমজান মাসের রোজা আত্মসংযম ও তাকওয়া অর্জনের অন্যতম উপায়। আল্লাহ বলেছেন, “হে মুমিনগণ, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর; যাতে তোমরা পরহেজগার হতে পারো।” (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৩)
রোজা শুধু ক্ষুধা-তৃষ্ণা থেকে বিরত থাকা নয়, বরং আত্মনিয়ন্ত্রণ, সহানুভূতি ও নৈতিক শুদ্ধতার অনুশীলন।
আরও পড়ুনউপহার দেওয়া সম্পর্কে ইসলাম১৩ আগস্ট ২০২৫ছয়. হজহজ জীবনের একবারের ফরজ ইবাদত, যদি আর্থিক ও শারীরিক সামর্থ্য থাকে। এটি মুসলমানদের ঐক্য, ত্যাগ ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীক।
আল্লাহ বলেছেন, “এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে আল্লাহর ঘরে হজ করা মানুষের ওপর কর্তব্য, যারা সেখানে পৌঁছাতে সক্ষম।” (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ৯৭)
সাত. নৈতিকতা ও আচরণইসলাম কেবল উপাসনার ধর্ম নয়; এটি নৈতিক আচরণেরও শিক্ষা দেয়। নবীজি (স.) বলেছেন, “আমি সুন্দর চরিত্র পূর্ণ করতে প্রেরিত হয়েছি।” (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ৮৯৫২)
সত্যবাদিতা, বিশ্বাসযোগ্যতা, দয়া, ধৈর্য, বিনয় ও ন্যায়পরায়ণতা একজন মুসলমানের মৌলিক গুণ।
আট. সমাজ ও মানবসম্পর্কইসলাম সমাজে ন্যায় ও সমতা প্রতিষ্ঠা করে। এখানে জাতি, বর্ণ, শ্রেণি বা ভাষার কোনো বৈষম্য নেই। আল্লাহ বলেছেন, “নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সর্বাধিক সম্মানিত সে-ই, যে সর্বাধিক পরহেজগার।” (সুরা হুজুরাত, আয়াত: ১৩)
ইসলাম নারী ও পুরুষ উভয়ের মর্যাদা নিশ্চিত করেছে, শ্রমিকের প্রাপ্যতা নির্ধারণ করেছে, প্রতিবেশীর অধিকার সংরক্ষণ করেছে।
নয়. জ্ঞানের প্রতি উৎসাহইসলাম জ্ঞানকে ইমানের অংশ হিসেবে বিবেচনা করে। প্রথম অবতীর্ণ আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, “পড়ো তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।” (সুরা আলাক, আয়াত: ১)
নবীজি (স.) বলেছেন, জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ।” (সুনান ইবনে মাজাহ, হাদিস: ২২৪)
ইসলাম জ্ঞানচর্চাকে আল্লাহর কিতাব, প্রকৃতি ও সমাজ—এই তিন দিক থেকে জানার মাধ্যম হিসেবে দেখে।
ইসলামের মৌলিক বিষয়সমূহ শুধু ধর্মীয় রীতিনীতি নয়, বরং আত্মিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিক সব বিবেচনায় মানবজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ভারসাম্য আনে। একজন প্রকৃত মুসলিম সেই, যে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখে, নবীজির (স.) নির্দেশনা মেনে
আরও পড়ুনকিশোরদের ইসলাম অনুশীলনে আগ্রহী করার উপায়২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫