মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওষুধ, রাসায়নিক ও কিট কিনতে সাতটি প্যাকেজে ৯ কোটি টাকার দরপত্র ডাকা হয়েছে। কয়েকজন ঠিকাদার অভিযোগ করেছেন, পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দিতে দরপত্রে অদ্ভুত শর্ত আরোপ করা হয়েছে। এতে অনেকে দরপত্র কিনলেও জমা দিতে পারেননি। এমনকি এক ঠিকাদারের প্রতিনিধিকে দরপত্র জমা দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ নভেম্বর মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাতটি প্যাকেজে ৯ কোটি ২২ লাখ টাকার দরপত্র ডাকা হয়। জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল গত ২ ডিসেম্বর। শর্তের বেড়াজালে বঞ্চিত হয়েছে অনেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

একাধিক ঠিকাদারের অভিযোগ, ৩ নম্বর প্যাকেজে পাঁচ কোটি টাকার রাসায়নিক ও কিট কেনার দরপত্র ডাকা হয়েছে। তবে তিন মাস আগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংকে পাঁচ কোটি টাকার আমানতের স্থিতি চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া চাওয়া হয়েছে পাঁচ কোটি টাকার ঋণপত্র (এলসি)। এমন অদ্ভুত শর্তের কারণে অনেকে দরপত্র জমা দিতে পারেননি। ১৩ জন ঠিকাদার দরপত্র কিনলেও জমা পড়েছে পাঁচটি। গত ২ ডিসেম্বর দরপত্র জমা দেওয়া শেষ হলেও এখনও ঠিকাদার চূড়ান্ত করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে তিন দফা বৈঠক হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রথম প্যাকেজে দুই কোটি টাকার ওষুধ কেনার দরপত্রে ৯টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্র কেনে। শর্তের কারণে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিতে পারেনি। দ্বিতীয় প্যাকেজে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকার সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি কেনার দরপত্র বেচা হয় ১২টি। এর বিপরীতে জমা পড়ে চারটি। ৪ নম্বর প্যাকেজে ৩০ লাখ টাকার গজ-ব্যান্ডেজ কেনার দরপত্র বেচা হয় ৯টি। এর বিপরীতে জমা পড়ে চারটি। ৫ নম্বর প্যাকেজে ২০ লাখ টাকার লিলেন কাপড় কেনার দরপত্র বেচা হয় ১০টি। এর বিপরীতে দরপত্র জমা পড়ে চারটি। ৬ নম্বর প্যাকেজে ১০ লাখ টাকার আসবাব কেনার দরপত্র বেচা হয় ১০টি। এর বিপরীতে দরপত্র জমা পড়ে চারটি। ৭ নম্বর প্যাকেজে ১২ লাখ টাকার যন্ত্রপাতি কেনার দরপত্র বেচা হয় ৯টি। এর বিপরীতে দরপত্র জমা পড়ে চারটি। এরই মধ্যে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি গত ১৫, ১৬ ও ২৩ ডিসেম্বর বৈঠক করেছে। গত রোববার ফের বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি।

একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি জানান, গত ২ ডিসেম্বর দরপত্র জমা দিতে যাওয়ার পথে হাসপাতালের গেট থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে একটি ভবনে এক ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। পরে ভয়ভীতি দেখিয়ে দরপত্র জমা দিতে দেয়নি প্রভাবশালীরা।

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা.

সফিকুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা (পিপিআর) মেনে দরপত্র ডাকা হয়েছে। প্রযুক্তিগত লোকবলের অভাবে ই-টেন্ডার করা সম্ভব হয়নি। যদি কোনো শর্ত ত্রুটিপূর্ণ মনে হয়, পিপিআর অনুযায়ী সংশোধনের জন্য আবেদন করতে পারবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।’ দরপত্র জমা দিতে বাধা দেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম ন কগঞ জ ক ন র দরপত র ব চ দরপত র ড ক

এছাড়াও পড়ুন:

এলএনজি আমদানি: ব্যয় হবে ১৬২০ কোটি ৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা

দেশের জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে গত কয়েক বছর ধরে স্পট মার্কেট থেকে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে এলএনজি আমদানি করছে সরকার।

এরই অংশ হিসেবে পৃথক তিনটি কোটেশনের মাধ্যমে আগামী মে, জুন ও জুলাই মাসের জন্য এই তিন কার্গো এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। এতে মোট ব্যয় হবে এক হাজার ৬২০ কোটি ৫ লাখ ২৮ হাজার ৬৬৪ টাকা।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় প্রস্তাব তিনটিতে অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় কমিটির সদস্য ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ল

নতুন বছরের আগ মুহূর্তে কেরোসিন-ডিজেলের দাম কমল

সভা সূত্রে জানা গেছে, ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট হতে ১ কার্গো (২২-২৩ মে ২০২৫ সময়ে ২০তম) এলএনজি আমদানির প্রত্যাশাগত অনুমোদনের জন্য সভায় উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে।

সূত্র জানায়, পেট্রোবাংলার মে মাসের জন্য ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২৩টি প্রতিষ্ঠানের  কাছ থেকে দরপ্রস্তব আহ্বান করা হলে ৫টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দাখিলকৃত ৫টি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুর ভিত্তিক আরামকো ট্রেডিং সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে প্রতি এই এক কার্গো এলএনজি সংগ্রহ করবে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১১.১৫ মার্কিন ডলার হিসেবে এক কার্গো সমান ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ৫৩৪ কোটি ৭৬ লাখ ১১ হাজার ৩৬০ টাকা।

সূত্র জানায়, একই প্রক্রিয়ায় জুন মাসের অন্য এক কার্গো এলএনজির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে এবং প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে দরপ্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স গানভর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড এই ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করবে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১১.২৭ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ৫৪০ কোটি ৫১ লাখ ৬৪ হাজার ১২৮ টাকা।

সভায় জুলাই মাসের জন্য ও এক কার্গো এলএনজি আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। পেট্রোবাংলা কর্তৃক ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য এমএসপিএ স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২৩টি প্রতিষ্ঠানের  কাছ থেকে দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে ৬টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দাখিলকৃত ৬টি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশের প্রেক্ষিতে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড নির্বাচিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এমবিটিইউ প্রতি এমবিবিইটএইউ ১১.৩৫৮৮ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে  ৫৪৪ কোটি ৭৭ লাখ ৫৩ হাজার ১৭৬ টাকা।

ঢাকা/হাসনাত/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সর্বোচ্চ দরদাতা ইজারা পাননি, গাবতলী হাটে খাস আদায় করছেন ‘পছন্দের’ ব্যক্তিরা
  • এবার আগেভাগেই বই ছাপার কাজ শুরু হচ্ছে, ২০২৭ সাল থেকে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমের চিন্তা
  • তিন প্রকল্প অনুমোদন, ব্যয় হবে ৩৯০ কোটি টাকা
  • বেজা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের দুই প্রস্তাব অন
  • অভিযোগের বিষয়ে এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি’র বক্তব্য 
  • এলএনজি আমদানি: ব্যয় হবে ১৬২০ কোটি ৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা
  • ‘নতুন শুরুর আশায়’ মাগুরা টেক্সটাইল মিলসের পুরোনা মেশিন বিক্রি
  • সোনাগাজীতে ইজারা চুক্তি না মেনে চলছে পশুর হাট