গোপালগঞ্জে একটি বেসরকারি সংস্থার সভা চলাকালে সদস্যদের ওপর হামলা ও গায়ে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।

শনিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে গোপালগঞ্জ শহরের বেদগ্রাম বিশ্ব মুক্তবাণী সংস্থায় (ডগলাস) এ ঘটনা ঘটে।

এতে ওই সংস্থার কোষাধ্যক্ষ শ্যামল মণ্ডল (৪৯) অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। তাকে প্রথমে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।

শ্যামল মণ্ডল গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা করপাড়া ইউনিয়নের হাটবাড়িয়া গ্রামের নকুল বিশ্বাসের ছেলে।

বিশ্ব মুক্তবাণী সংস্থার (ডগলাস প্রকল্প) নির্বাহী পরিচাক শলোমন অপূর্ব বাড়ৈ বলেন, গোপালগঞ্জের বেদগ্রামে বিশ্ব মুক্তবাণী সংস্থার সামনে ও ভিতরে জায়গা দখল করার জন্য দীর্ঘদিন পাঁয়তারা করছেন এন্ড্রু বিশ্বাস। শনিবার ছিল কার্যনির্বাহী কমিটির নির্ধারিত সভা। এন্ড্রু সংস্থার বর্তমান কমিটির কার্যনির্বাহী কমিটির সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এন্ড্রু সভায় উপস্থিত ছিলেন না। সভা শুরু হওয়ার কিছু সময় পর এন্ড্রু সভা বানচাল করার জন্য ৪০ থেকে ৫০ জনকে নিয়ে সভাকক্ষে ঢোকেন। এক পর্যায়ে উপস্থিত সদস্যদের বেধড়ক মারধর শুরু করেন। আতঙ্কে সদস্যরা দৌড়ে বের হতে থাকেন। এ সময় সংস্থার কোষাধ্যক্ষ শ্যামলকে কক্ষে আটকে প্রথমে মারধর ও পরে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এতে গুরুতর অগ্নিদগ্ধ হন তিনি। সংস্থার সদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথম গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

সংস্থার সাধারণ সম্পাদক দানিয়েল বৈদ্য জানান, তিনি খুলনার ট্রাবোনাকাল গ্রেস এজি চার্চের পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করছেন। গত বৃহস্পতিবার এন্ড্রু, তার ভাগনে শুকলাল মজুমদার ও আকাশ মজুমদার খুলনায় এসে তাকে সভায় উপস্থিত না হওয়ার জন্য হুমকি দেন এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। তিনি গোপালগঞ্জে এলে দেখে নেবেন বলেও হুমকি দিয়ে আসেন তারা। এন্ড্রুর উদ্দেশ্য, এ সংস্থার জায়গা দখল করে সেখানে তার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। এন্ড্রুর নেতৃত্বে প্রভাস বাড়ৈ, দিলীপ বাড়ৈ, আইজ্যাক বাড়ৈ, জুয়েল বাড়ৈ, মিকাইল বাড়ৈ, লিটন বল্লভ, শুকলাল মজুমদারসহ ৪০-৫০ জন সভায় এসে হামলা করে।

এ বিষয়ে এন্ড্রু বিশ্বাসের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে জায়গা দখলের অভিযোগ সঠিক নয়। সংস্থার সাধারণ সম্পাদক দানিয়েল বৈদ্যকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার বিষয়ে তিনি আরও জানান, তিনি তার (দানিয়েল) বড় ভাই হিসেবে একটি থাপ্পড় মেরেছেন। তবে সভায় তার কোনো লোক হামলা করেনি দাবি করে তিনি বলেন, কারা তাদের ওপর হামলা করেছে বা পুড়িয়েছে তা আমার জানা নেই।

গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আব্দুলাহ রাজীব বলেন, শনিবার দুপুরে শ্যামল মণ্ডল নামের এক অগ্নিদগ্ধ রোগীকে জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। তার বুক, পেট, দুই হাতের সব জায়গা পুড়ে গেছে। রোগী যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন। তার অবস্থার অবনতি হলে পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির সাজেদুর রহমান বলেন, ৯৯৯-এর মাধ্যমে আমরা জানতে পারি বেদগ্রাম বিশ্ব মুক্তবাণী সংস্থার সভা চলাকালে হামলা ও একজনকে অগ্নিদগ্ধ করা হয়েছে। সেখানে এবং হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ প লগঞ জ গ প লগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

বাগেরহাটে চার আসন বহালের দাবিতে নতুন কর্মসূচি 

বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। আগামী শুক্র ও শনিবার (১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর) গণস্বাক্ষর সংগ্রহ এবং রবি ও সোমবার (২১ ও ২২ সেপ্টেম্বর) জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে অর্ধদিবস অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতা এম এ সালাম নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

এম এ সালাম বলেছেন, “বাগেরহাটের চারটি আসন অক্ষুণ্ন রাখার দাবিতে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। আদালতের প্রতি আমাদের আস্থা আছে, তবে জনগণের দাবি প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”

এর আগে আসন কমানোর প্রতিবাদে জেলা জুড়ে হরতাল, বিক্ষোভ ও মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। পাশাপাশি উচ্চ আদালতে রিট করা হয়েছে।

ঢাকা/শহিদুল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ