নতুন কর্মসূচি ঘোষণা ম্যাটস শিক্ষার্থীদের
Published: 9th, February 2025 GMT
চার দফা দাবি আদায়ে নতুন কর্মসূচি দিয়েছেন মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচি অনুযায়ী আগামীকাল সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন তারা। এরমধ্যে দাবি আদায় না হলে দুপুর থেকে একযোগে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য এলাকায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন সাধারণ ম্যাটস শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মুজাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের দাবি পূরণে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে তিনদিন সময় নেওয়া হয়েছে। তবে আমাদের অন্য তিনটি দাবির বিষয়ে কোনো সুরাহা হয়নি। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমাদের অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরে যাব না। আমরা রাতেও শহীদ মিনারে অবস্থান করব এবং আগামীকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করব। যদি এই সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হয়, তাহলে আমরা আমরণ অনশনে যাব।
মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের একটি টিম যখন স্বাস্থ্য উপদেষ্টার ডাকে সাড়া দিয়ে মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে গিয়েছিল, তখন আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রেস ক্লাবে অবস্থানের উদ্দেশ্যে শাহবাগ থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। কিন্তু শাহবাগের দিকে যাওয়ার সময় আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ৬০ জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। সবমিলিয়ে ১২০ জনের মতো শিক্ষার্থী হামলায় আহত হন। তাদের মধ্যে অনেকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, যে পুলিশগুলো আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে, তারাই ফ্যাসিস্ট হাসিনার সময়ে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও গুলি চালিয়েছিল। আমরা এই হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম য টস শ ক ষ র থ অনশন অবস থ ন আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
সাহেবগঞ্জ এলাকায় ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকার ফসলি জমিতে ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ–দিনাজপুর সড়কের কাটামোড় এলাকায় এ কর্মসূচিতে অংশ নেন শতাধিক সাঁওতাল ও বাঙালি নারী–পুরুষ। পরে বিকেল চারটার দিকে কয়েকজনকে শরবত পান করিয়ে অনশন ভাঙান আমন্ত্রিত অতিথিরা।
সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির এ কর্মসূচিতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধা আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির, বিশিষ্ট আইনজীবী মোহাম্মদ আলী প্রামাণিক, ফারুক কবীর, সাঁওতাল নেতা স্বপন শেখ, প্রিসিলা মুর্মু, তৃষ্ণা মুর্মু, বিটিশ সরেন, গৌড় পাহাড়ি, রাফায়েল হাসদা, অলিভিয়া হেমব্রম, বার্নাবাস টুডু, লুইস মুর্মু, খিলন রবিদাস প্রমুখ। কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে।
গণ–অনশনে বক্তারা বলেন, গোবিন্দগঞ্জে ইপিজেড নির্মাণ করার মতো সরকারের অনেক জমি পতিত আছে। কিন্তু বিরোধপূর্ণ সাঁওতালদের রক্তভেজা তিন ফসলি জমিতেই কেন ইপিজেড করতে হবে? এ আন্দোলন ইপিজেডের বিরুদ্ধে নয়; বরং বাপ–দাদার জমি উদ্ধারের জন্য তাঁরা আন্দোলন করছেন। এসব জমি উদ্ধার করতে গিয়ে তিন সাঁওতালকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের আজও গ্রেপ্তার করা হয়নি। দোষী ব্যক্তিদের বিচার হয়নি।
বক্তারা বিরোধপূর্ণ জমিতে ইপিজেড নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ, তিন সাঁওতাল হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার, সাঁওতাল–বাঙালিদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও পৈতৃক জমি ফেরত দেওয়ার দাবি জানান। অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
রংপুর চিনিকল সূত্রে জানা যায়, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকায় রংপুর চিনিকলের আওতায় ১ হাজার ৮৪২ একর জমি আছে। এই জমিতে উৎপাদিত আখ রংপুর চিনিকলে মাড়াই হতো। চিনিকলে আখমাড়াই বন্ধ হলে সাঁওতালরা দফায় দফায় এই জমি দখল করেন। ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর চিনিকল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ এসব জমিতে উচ্ছেদে গেলে সাঁওতালদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে শ্যামল হেমব্রম, রমেশ টুডু ও মঙ্গল মার্ডি নামে তিন সাঁওতাল নিহত হন। সেই সঙ্গে অন্তত ২০ জন আহত হন।
এ পরিস্থিতিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন রংপুর চিনিকলের জমিতে ইপিজেড স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ জন্য বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেপজা) ইপিজেড বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এদিকে চিনিকলের জমিতে ইপিজেড নির্মাণের বিরোধিতা করে সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি।