সৈয়দপুরে রাতের অগ্নিকাণ্ডে ৩০টি ঘর পুড়ে ছাই, নিঃস্ব আটটি পরিবার
Published: 11th, February 2025 GMT
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের ব্রহ্মোত্তর পশ্চিমপাড়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে আটটি পরিবারের ৩০টি ঘর পুড়ে গেছে। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে আটটায় বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা জানান, সেকেন্দার আলীর বাড়ি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। অগ্নিকাণ্ডে আসবাব, ইলেকট্রনিকসামগ্রী, ধান, চাল, টাকাসহ সব ধরনের মালামাল পুড়ে যায়। এ ছাড়া দুটি গরু ও দুটি ছাগল পুড়ে মারা গেছে। তবে কোনো হতাহত হয়নি।
আগুন লাগার খবর পেয়ে সৈয়দপুর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ছুটে আসে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছিল না তারা। খবর পেয়ে পার্শ্ববর্তী রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের একটি দল অগ্নিকাণ্ডের ৩০ মিনিট পর ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সবার সম্মিলিত চেষ্টায় প্রায় দুই ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ক্ষতিগ্রস্ত সেকেন্দার দাবি করেন, তাঁর দুটি আধা পাকা টিনশেড ঘরসহ ঘরে থাকা মালামাল পুড়ে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তাঁর ভাই সাইদুল ইসলামেরও সমপরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। বাদশা মিয়ার পরিবারের প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। একইভাবে প্রতিবেশী আবদুল কাদের ও তাঁর সন্তানদের সাতটি থাকার ঘর, দুটি রান্নাঘর, ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও একটি গরু আগুনে পুড়ে যায়। এতে তাঁদের প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লানচু হাসান চৌধুরী বলেন, আগুনের ভয়াবহতায় আটটি পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় কম্বল ও শুকনা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষার গতিপথ ও উন্নয়ন নিয়ে ঢাবিতে সেমিনার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ‘বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুত্থান ও শিক্ষার গতিপথ: প্রত্যাশা অর্জন ও আগামী দিন’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টায় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) এলিভেট টকের উদ্যোগে শহীদ ড. সাদাত আলী সম্মেলন কক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিনুর রশিদের সঞ্চালনায় সেমিনারে বক্তব্যে দেন, ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো: আবদুস সালাম, ড. মো. আহসান হাবীব, ড. মো. শাহরিয়ার হায়দার, ড. সায়রা হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) সম্পাদক মাহাদী হাসান।
আরো পড়ুন:
জবি দ্বিতীয় ক্যাফেটেরিয়া দ্রুত চালুর দাবি
জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা
এ সময় অধ্যাপক ড. মো. আবদুস সালাম বলেন, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অনেকগুলো স্বপ্নের বীজ বপন করেছিল। তারমধ্যে অন্যতম একটি ছিল, শিক্ষার মানোন্নয়ন। কিন্তু দুঃখের বিষয় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সেই শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা আশা রেখেছিলাম নতুন একটা শিক্ষানীতি প্রণয়ন হবে। কিন্তু তারা সেখানে এখন পর্যন্ত হাত দেয়নি।”
শিক্ষার বাজেট নিয়ে তিনি বলেন, “সর্বশেষ যে বাজেট হয়েছিল, সেখানে শিক্ষার বাজেট বৃদ্ধি করা হয়নি। এত স্বল্প বাজেট দিয়ে শিক্ষার মান কখনো বৃদ্ধি করা সম্ভব না। এমনকি শিক্ষকদের মর্যাদার বিষয়ে অনেকদিন থেকে আমরা সংগ্রাম করছি। শিক্ষকদের পরিপূর্ণ মর্যাদা ছাড়া শিক্ষার মান উন্নয়ন কল্পনা করা যায় না।”
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবর্তন নিয়ে অধ্যাপক ড. মো. আহসান হাবীব বলেন, “শিক্ষককে আমরা কিভাবে দেখব? আমরা দেখেছি কোভিডের পরে শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুমে সঠিক আচরণ করছে না। কিভাবে কথা বলতে হয় বা কি আচার-আচরণ করতে হয়, তা তারা ভুলে গেছে। আমরা হয়ত জেনারেশন গ্যাপে আছি বা হয়তো তারা অনেক অ্যাডভান্স হয়ে গেছে। তবে ২৪ এর অভ্যুত্থানে আমরা তাদের এক হয়ে লড়াই করতে দেখেছি।”
তিনি বলেন, “আমাদের কারিকুলামে ও বই লেখায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকতে হবে। শিক্ষার্থীরা কি চায়, কেনো চায়- তা তাদের তুলে ধরার সুযোগ করে দিতে হবে। কোনো ধরনের পলিটিক্যাল বাঁধা ছাড়া সব জায়গায় স্টুডেন্ট ভয়েস রেইজ করার সুযোগ করে দিতে হবে।”
ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো: শাহরিয়ার হায়দার বলেন, “শিক্ষার্থী এবং আমাদের মধ্যে ভালো বন্ধন তৈরি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরীক্ষার রেজাল্টের সময় সি প্লাস বা বি গ্রেড পেলে সে আমাকে অন্য চোখে দেখছে। শিক্ষার্থীদের কাছে আমরা জানতে চাই না, তারা আসলে কি চায়? এজন্য আমাদের এজন্য ক্লাইমেট সার্ভে করা দরকার। তাহলে আমরা তাদের চাওয়া পাওয়া সম্পর্কে জানতে পারব। এমনকি শিক্ষার্থীরা এখনো জানে না কিভাবে অন্য লিঙ্গের বন্ধুদের সঙ্গে আচরণ করতে হবে। এ বিষয়ে মাইক্রো কোর্স চালু করা দরকার।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী