মৎস্য সম্পদ সুরক্ষায় চট্টগ্রামের বহিঃনোঙ্গর ও তৎসংলগ্ন সমুদ্র এলাকায় চতুর্থ ধাপের ‘বিশেষ কম্বিং অপারেশন’ শুরু করেছে নৌবাহিনী। 

আজ বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) থেকে ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ এর আওতায় এই বিশেষ কম্বিং অপারেশ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে নৌবাহিনী। 

অপারেশনের আওতায় দেশের মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে উপকূলীয় জলাশয় ও নদী অববাহিকায় ১০ মিটারের কম গভীরতায় মৎস্য সম্পদ ধ্বংসকারী সকল অবৈধ জাল অপসারণে চারটি ধাপে এই অভিযান চলমান থাকবে। অভিযানে অংশ নিচ্ছে নৌবাহিনীর ১১টি জাহাজ।

বুধবার চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর ঈসা খাঁ ঘাঁটির মিডিয়া বিভাগ থেকে কম্বিং অপারেশনের বিষয় নিশ্চিত করে জানানো হয়, বাংলাদেশ নৌবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে সরকার কর্তৃক জারিকৃত ‘বিশেষ কম্বিং অপারেশন’ চারটি ধাপে আগমী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলমান থাকবে। 

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, খুলনা, মোংলা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, শরীয়তপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর ও ভোলায় নৌবাহিনীর ১১টি জাহাজ ও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বোটের মাধ্যমে ‘বিশেষ কম্বিং অপারেশন’ পরিচালনা করছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। 

ইতোমধ্যে নৌবাহিনীর দায়িত্বপূর্ণ এলাকাসমূহে অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ বেহুন্দি জাল, কারেন্ট জাল, মশারি জাল, চটজাল ও টংজাল উদ্ধার করে ধ্বংস করেছে। পাশাপাশি এসকল অবৈধ জাল ব্যবহার বন্ধে তৎসংলগ্ন এলাকাসমূহে জনসচেতনতা মূলক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।

নৌবাহিনী জানিয়েছে, চট্টগ্রামের বহিঃনোঙ্গর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় নৌবাহিনী জাহাজ ও বোটের মাধ্যমে ‘বিশেষ কম্বিং অপারেশন’ পরিচালনা করা হয়। এসময়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ জাল উদ্ধার এবং জনসচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয়। 

অভিযানে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিশেষ টিম, জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় মৎস্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করছেন। 

সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার ভোলা জেলার তজুমদ্দিন উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ছয়টি দোকান হতে অবৈধ ৩০ লক্ষ ৬৫০ মিটার চড়ঘেরা জাল, ৬ লক্ষ ১১ হাজার ৫০০ মিটার কারেন্ট জাল, ৩ হাজার ৪ শত মিটার বেহুন্দি জাল ও ২১ লক্ষ ৬০ হাজার মিটার পাইজাল জব্দ করা হয়। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ২ কোটি ৯ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা। 

এছাড়াও অন্যান্য স্থানে অভিযান চালিয়ে ৭ লক্ষ ৭৮ হাজার ৬৫০ মিটার জাল, ৯টি বেহুন্দি জাল ও অবৈধ মাছ উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য ৬ কোটি ১ লক্ষ ৬৯ হাজার ৭ শত টাকা। 

তৃতীয় ধাপে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় ২১ কোটি ৬২ লক্ষ ৬ হাজার ৭০০ টাকা মূল্যের অবৈধ জাল ও মাছ জব্দ করা হয়। উক্ত অভিযানে এ পর্যন্ত সর্বমোট ৭৬ কোটি ৩২ লক্ষ ৫ হাজার ১০০ টাকা মূল্যের অবৈধ জাল ও মাছ জব্দ করা হয়। 

অভিযানে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। বৈধ মৎস্য আহরণ নিশ্চিত করতে জেলেদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে। অবৈধ উপায়ে মৎস্য আহরণকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে নৌবাহিনী।

ঢাকা/রেজাউল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ ষ কম ব অব ধ জ ল মৎস য

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার

ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।

আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।

বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।

অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।

আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ