মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে ডোনাল্ড লুর স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত পল কাপুর। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে পল কাপুরকে মনোনয়ন দিয়েছেন। মার্কিন সিনেটের চূড়ান্ত অনুমোদনের পর তিনি ওই পদে যোগ দেবেন।

ভারতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই এ কথা জানায়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর গত ১৭ জানুয়ারি দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ডোনাল্ড লুর মেয়াদ শেষ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিভাগ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, ভুটান, ভারত, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের দেখভাল করে থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্সের নেভাল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট স্কুলের অধ্যাপক পল কাপুর দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি, নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক হিসেবে পরিচিত। তিনি ২০২০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন। ওই সময়ে তিনি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া, ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল, যুক্তরাষ্ট্র–ভারত সম্পর্কের বিষয়ে নীতি প্রণয়ন বিভাগের কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে ডোনাল্ড লুর বিদায়২৬ জানুয়ারি ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্সের নেভাল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট স্কুলের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির হুভার ইনস্টিটিউশনে অতিথি ফেলো হিসেবে যুক্ত আছেন পল কাপুর। এ পর্যন্ত তাঁর নিরাপত্তা, জিহাদ ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক অন্তত চারটি বই প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তাঁর নিজের লেখা ‘জিহাদ অ্যাজ গ্র্যান্ড স্ট্র্যাটেজি: ইসলামিস্ট মিলিট্যান্সি, ন্যাশনাল সিকিউরিটি, অ্যান্ড দ্য পাকিস্তানি স্টেট’; ডেঞ্জারাস ডেটারেন্ট: নিউক্লিয়ার উইপন্স প্রলিফারেশন অ্যান্ড দ্য কনফ্লিক্ট ইন সাউথ এশিয়া। এ ছাড়া যৌথভাবে প্রকাশ হয়েছে ‘ইন্ডিয়া, পাকিস্তান অ্যান্ড দ্য বোম্ব: ডিবেটিং নিউক্লিয়ার স্ট্যাবিলিটি ইন সাউথ এশিয়া’ ও ‘দ্য চ্যালেঞ্জেস অব নিউক্লিয়ার সিকিউরিটি: ইউএস অ্যান্ড ইন্ডিয়ান পারস্পেকটিভস’।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ