ডোনাল্ড লুর স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন পল কাপুর
Published: 13th, February 2025 GMT
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে ডোনাল্ড লুর স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত পল কাপুর। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে পল কাপুরকে মনোনয়ন দিয়েছেন। মার্কিন সিনেটের চূড়ান্ত অনুমোদনের পর তিনি ওই পদে যোগ দেবেন।
ভারতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই এ কথা জানায়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর গত ১৭ জানুয়ারি দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ডোনাল্ড লুর মেয়াদ শেষ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিভাগ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, ভুটান, ভারত, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের দেখভাল করে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্সের নেভাল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট স্কুলের অধ্যাপক পল কাপুর দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি, নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক হিসেবে পরিচিত। তিনি ২০২০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন। ওই সময়ে তিনি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া, ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল, যুক্তরাষ্ট্র–ভারত সম্পর্কের বিষয়ে নীতি প্রণয়ন বিভাগের কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে ডোনাল্ড লুর বিদায়২৬ জানুয়ারি ২০২৫যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্সের নেভাল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট স্কুলের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির হুভার ইনস্টিটিউশনে অতিথি ফেলো হিসেবে যুক্ত আছেন পল কাপুর। এ পর্যন্ত তাঁর নিরাপত্তা, জিহাদ ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক অন্তত চারটি বই প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তাঁর নিজের লেখা ‘জিহাদ অ্যাজ গ্র্যান্ড স্ট্র্যাটেজি: ইসলামিস্ট মিলিট্যান্সি, ন্যাশনাল সিকিউরিটি, অ্যান্ড দ্য পাকিস্তানি স্টেট’; ডেঞ্জারাস ডেটারেন্ট: নিউক্লিয়ার উইপন্স প্রলিফারেশন অ্যান্ড দ্য কনফ্লিক্ট ইন সাউথ এশিয়া। এ ছাড়া যৌথভাবে প্রকাশ হয়েছে ‘ইন্ডিয়া, পাকিস্তান অ্যান্ড দ্য বোম্ব: ডিবেটিং নিউক্লিয়ার স্ট্যাবিলিটি ইন সাউথ এশিয়া’ ও ‘দ্য চ্যালেঞ্জেস অব নিউক্লিয়ার সিকিউরিটি: ইউএস অ্যান্ড ইন্ডিয়ান পারস্পেকটিভস’।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।