ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলন হবে। এর আগে ভ্যান্স ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ক রুবিওর সঙ্গে জেলেনস্কির দেখা হতে পারে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে শান্তি আলোচনা শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন। এরপরই জেলেনস্কির এই সাক্ষাতের কথা জানা গেল। এর আগে আলোচনায় নিজেদের সম্পৃক্ততা না থাকলে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রস্তাবিত শান্তি চুক্তিতে ইউক্রেন রাজি হবে না বলে সতর্কতা দেন জেলেনস্কি।

মিউনিখের নিরাপত্তা সম্মেলনে রাজনৈতিক নেতা, সামরিক কর্মকর্তা ও কূটনীতিকেরা অংশ নেন। পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের পর শান্তি আলোচনা নিয়ে ট্রাম্পের ঘোষণায় ইউরোপীয় দেশগুলো উদ্বিগ্ন। তাদের আশঙ্কা ট্রাম্প রাশিয়ার প্রতি পক্ষপাত দেখাতে পারেন। ইউরোপীয় দেশগুলোর নিরাপত্তা হুমকিতে পড়তে পারে।

ট্রাম্প বুধবার পুতিনের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে জানান। এরপর ফোনালাপে তিনি জেলেনস্কিকে পুরো বিষয় বিস্তারিত জানান।

বিবিসির খবর বলছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, আলোচনায় নিজেদের সম্পৃক্ততা না থাকলে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রস্তাবিত শান্তি চুক্তিতে রাজি হবে না ইউক্রেন। জেলেনস্কি হুঁশিয়ারি বলেন, ‘স্বাধীন দেশ হিসেবে আমরা এটা মেনে নিতে পারি না।’

ট্রাম্প বৃহস্পতিবার বলেছেন, মার্কিন ও রুশ কর্মকর্তারা মিউনিখে শুক্রবার সাক্ষাৎ করবেন। ইউক্রেনকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে কিয়েভ বলেছে, মিউনিখে রাশিয়ার সঙ্গে কোনো আলোচনা হবে বলে তারা আশা করছে না।

মিউনিখে তিন দিনের সম্মেলনে রাশিয়ার কোনো কর্মকর্তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এই সম্মেলন মিউনিখের কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। তবে এখানে সম্মেলন হলেও অন্য কোথাও অন্য সভা হতে পারে।

বিবিসির খবর বলছে, গত বুধবার ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে জেলেনস্কি বলেছেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার বিষয়টি তাঁর অগ্রাধিকারের জায়গা, যা যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয়।

আরও পড়ুননিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেলেই আলোচনায় রাজি জেলেনস্কি১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

জেলেনস্কি বলেছেন, আলোচনার টেবিল থেকে তাঁদের বাদ রাখা হলে তাঁরা কোনো ধরনের চুক্তিতে সম্মত হবেন না। জেলেনস্কি মনে করেন, আলোচনার টেবিলে ইউরোপীয় প্রতিনিধিদেরও থাকা প্রয়োজন।

আলাদা এক বক্তব্যে জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্যপদ দেওয়া হলে তা জোটের অন্য সদস্যদেশগুলোর জন্য লাভজনক হবে। তবে এ ব্যাপারে জেলেনস্কি বিস্তারিত কিছু বলেননি।

যুদ্ধ বন্ধে প্রস্তুত থাকার বিষয়ে পুতিন যে দাবি করেছেন, তা বিশ্বাস না করার জন্য পশ্চিমা নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জেলেনস্কি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন বল ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ