শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিভিন্ন ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপোড়েন চলছে। এরইমধ্যে শুরু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সম্মেলন। সেখানে সীমান্ত হত্যা, বেড়া নির্মাণের বিষয়গুলোতে গুরত্ব দেওয়া হবে। 

এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‍নয়াদিল্লিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মহাপরিচালক পর্যায়ের এ বৈঠক শুরু হবে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার, যা শেষ হবে ২০ ফেব্রুয়ারি। 

শুক্রবার ভারত সরকার এক বিবৃতিতের এ তথ্য জানিয়েছে। 

গত আগস্টের আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রথম বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সম্মেলন শুরু হচ্ছে। 

বিজিবি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকবেন মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী এবং বিএসএফ এর পক্ষে নেতৃত্বে দেবেন মহাপরিচালক (ডিজি) দলজিৎ সিং চৌধুরী।

বিএসএফ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সীমান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনা জন্য এবং উভয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মধ্যে আরো ভালো সমন্বয়ের জন্য এই সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে।

সম্মেলনে সীমান্তে বেড়া নির্মাণ, ‘বেসামরিক লোকদের ওপর হামলা,’ সীমান্ত অপরাধ রোধে করণীয়, সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা কার্যকর বাস্তবায়নসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। 

গত বছরের মার্চে ঢাকায় সর্বশেষ এই দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের স্থল সীমান্তরেখার দৈর্ঘ্য ৪,২৪৬ কিলোমিটার যার ৯৪ শতাংশই ভারতের সঙ্গে। 

সম্প্রতি বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তের নো-ম্যানস ল্যান্ডে বিএসএফের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়। বিএসএফকে বেড়া নির্মাণে বাধা দেয় বিজিবি। এরপর বিজিবির সাথে স্থানীয় বাসিন্দারাও উপস্থিত হয়ে বেড়ার প্রতিবাদ করে। অপরপাশে ভারতীয় নাগরিকরাও বিএসএফের পক্ষ নিয়ে সীমান্তে উপস্থিত হয়। এ নিয়ে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়।

এছাড়া, ভারতের মালদার শুকদেবপুর সীমান্তে (চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত) বিএসএফ দেড় কিলোমিটার কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করে। এ ঘটনাতেও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। 

এর পরিপ্রেক্ষিতে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণসহ সীমান্তের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে ডেকে বাংলাদেশ উদ্বেগ জানায়। এরপরই ভারতও নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার নুরাল ইসলামকে তলব করা হয়। 

এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে দিল্লিতে বিজিবি-বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ের যে সীমান্ত সম্মেলন হতে যাচ্ছে, সেখানে সীমান্ত হত্যা ও মাদকের কারবারসহ যাবতীয় সমস্যা নিয়ে অতীতের তুলনায় ‘ভিন্ন সুরে’ কথা হবে।”

তিনি বলেন, “সীমান্ত হত্যা বন্ধ, ১৫০ গজের মধ্যে স্থাপনা নির্মাণ, নদী সমস্যাসহ বৈঠকে যেসব বেশি আলোচনা হয়েছে, সেসব বিষয় আমরা কোনো ছাড় দেব না। এবার কথা বলার টোন আলাদা হবে। ভারতীয় গণমাধ্যমে যে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করা হয়, সেই অপপ্রচার বন্ধ করা যায় কীভাবে সেটা নিয়েও আলোচনা হবে।”

ঢাকা/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এসএফ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক

জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে। 

ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। 

বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি। 

অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক। 

পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে। 

একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক। 

সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।

সুচরিতা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিলেট সীমান্তে বাংলাদেশে ঢুকে খুঁটি উপড়ে ফেলে বিএসএফ, স্থানীয়দের প্রতিবাদ
  • পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনে কর্মকর্তা নিয়োগ, বেতন ৫১,০০০ টাকা
  • জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক