‘তিস্তায় তো হামার কপাল খাইচে বাহে। অন্তত দশবার বাড়ি ভাঙি নদীত গেইচে। জমি-জায়গাও শ্যাষ। এ্যালা মাইনসের কাম করি খাই। তারপরও চাই তিস্তা সমস্যার সমাধান হউক। তখন হামরা বাঁচি না থাকলেও নদীপারের মানুষ ভালো থাকপে।’ শত কষ্টের মাঝেও তিস্তা নিয়ে এমন স্বপ্নের কথা শোনালেন ষাটোর্ধ্ব রংপুরের গঙ্গাচড়ার বাগেরহাট আশ্রয়ণ কেন্দ্রের বাসিন্দা আব্দুস সবুর।
গতকাল সোমবার থেকে শুরু হওয়া দুদিনব্যাপী তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে নদীপারে অবস্থান কর্মসূচিতে স্ত্রী, দুই সন্তানসহ যোগ দেন তিনি। তাঁর মতো তিস্তার চরাঞ্চলে বসবাসকারী দিনমজুরসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ কাজকর্ম বন্ধ রেখে অনেক স্বপ্ন নিয়ে ৪৮ ঘণ্টার ওই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। রাতেও তারা সেখানে অবস্থান করবেন। সরেজমিন রংপুরের গঙ্গাচড়ার মহিপুর সেতু এলাকায় দেখা যায়, কর্মসূচি বাস্তবায়নে তিস্তার বুকে মঞ্চ, খাবার তৈরির ব্যবস্থা এবং রাত্রি যাপনের জন্য বড় বড় প্যান্ডেল করা হয়েছে।
মহিপুর বাজার সংলগ্ন পয়েন্টে অবস্থান নিতে সপরিবারে এসেছেন আব্দুস সবুর। তিনি জানান, লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের শংকরদহ এলাকার এক সময়ের সম্ভ্রান্ত কৃষক ছিলেন। এ পর্যন্ত ১০ বার নদীভাঙনের শিকার হয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। এখন তিনি স্ত্রী, দুই সন্তানসহ আশ্রয়ণ কেন্দ্রের বাসিন্দা।
পার্শ্ববর্তী জয়রামওঝা চরের বাসিন্দা সগির আলী বলেন, ‘এদ্দিন সবায় হামাক খালি আশা দিচে, কায়ও কোনো কাম করে নাই। এইবারের আন্দোলনে হামরা তিস্তাপারের সবায় থাকমো। মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।’
ইছলী চরের দিনমজুর আবুল কাশেম বলেন, ‘এমনিতে তো খ্যায়া-না খ্যায়া দিন কাটে হামার। দুইদিন না হয় সউগ কাম-কাজ বন্ধ থুইয়া এ্যটেকোনা থাকমো। তাও তিস্তার একটা হিল্লা হউক।’ একই ধরনের কথা বলেন কলাহাছি চরের দিন মজুর আশেক আলী, মনছুর আলী, লোকমান মিয়াসহ প্যান্ডেলে অবস্থানকারী অনেকে।
মহিপুর এলাকার কৃষক হারুন অর রশিদ জানান, তিস্তা নিয়ে আন্দোলনে যোগ দিতে দিনমজুররা মাঠের কাজ বন্ধ রেখেছেন। ফলে বর্তমান সময়ে আলু উত্তোলন, তামাক পাতা কাটা ও বোরো ধানের চারা রোপণে কৃষি শ্রমিক মিলছে না। এতে বেকায়দায় পড়েছেন কৃষকরা।
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু বলেন, তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা রাজনৈতিক দলের নয়। এটি রংপুর অঞ্চলের তিস্তাপারের বঞ্চিত মানুষের আন্দোলন। এই আন্দোলন জনদাবিতে পরিণত হওয়ায় এতে নদীপারের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ রয়েছে। আশা করছি, এ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিতে পারব, আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা দিচ্ছে না।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অবস থ ন
এছাড়াও পড়ুন:
বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি, স্নাতক/স্নাতকোত্তরে আবেদন
বেসরকারি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি জনবল নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। বাণিজ্যিক এ ব্যাংকটি ‘প্রজেক্ট অ্যাপ্রাইজাল অ্যানালিস্ট’ পদে কর্মী নিয়োগ দেবে। গত ৩০ এপ্রিল প্রকাশ করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত প্রার্থীরা মাসিক বেতন ছাড়াও প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাবেন। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক টেক্সটাইল প্রজেক্টস বিভাগে প্রজেক্ট অ্যাপ্রাইজাল অ্যানালিস্ট পদে কতজনকে নিয়োগ দেবে, তা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ নেই।
আবেদনে শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতক/স্নাতকোত্তর অথবা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি।
অন্যান্য যোগ্যতা: ব্যাংকিং, প্রকল্প মূল্যায়ন অথবা পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমে অভিজ্ঞতা থাকা। টেক্সটাইল উৎপাদন, যন্ত্রপাতি, খরচ বিশ্লেষণ এবং উৎপাদন ব্যবস্থা সম্পর্কে ভালো ধারণা।
অভিজ্ঞতা: ন্যূনতম ৫ বছর চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
বেতন: আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারণ করা হবে।
অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা: প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী প্রাপ্য হবেন।
প্রার্থীর বয়স: ৩৮ বছরের মধ্যে হতে হবে (১৪ মে ২০২৫ তারিখে)।
কর্মস্থল: দেশের যেকোনো স্থানে।
আবেদন যেভাবে—
কাজের ক্ষেত্র, আবেদনপদ্ধতিসহ অন্যান্য বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আগ্রহী প্রার্থীরা এখানে ক্লিক করুন।
আবেদনের শেষ তারিখ: আগ্রহী প্রার্থীরা আগামী ১৪ মে তারিখের মধ্যে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
আরও পড়ুন৯ ব্যাংকের ৯৭৪ পদের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ, দেখুন নির্দেশনা৮ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত৩০ এপ্রিল ২০২৫