রাজশাহীর সাংবাদিক মাসুমা ইসলাম আর নেই
Published: 18th, February 2025 GMT
রাজশাহীর সাংবাদিক মাসুমা ইসলাম মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মাসুমা এখন টেলিভিশনের রাজশাহী ব্যুরো অফিসের রিপোর্টার ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামে।
মাসুমা পড়ালেখা করেছেন রাজশাহীর নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে। শিক্ষাজীবন থেকেই তার সাংবাদিকতার শুরু, পরে এটিকেই পেশা হিসেবে নেন তিনি।
আরো পড়ুন:
ফেনীতে পিকআপে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কা, নিহত বেড়ে ৬
পিকআপকে ধাক্কা দিল কাভার্ড ভ্যান, নিহত ৫
২০২৩ সালের শেষের দিকে তিনি বিয়ে করেন মাসুমা। রাজশাহীতে স্বামীর সঙ্গেই থাকতেন তিনি। অফিস থেকে ছুটি নিয়ে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লায় শ্বশুরবাড়িতে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে যাচ্ছিলেন তিনি। কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নূরজাহান হোটেলের উল্টোদিকে বাস থেকে নেমে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ঠিক করার সময় দ্রুতগামী একটি বাস তাদের ধাক্কা দেয়। এতে অটোরিকশার চালক, মাসুমা ও তার স্বামী গুরুতর আহত হন। প্রথমে তাদের কুমিল্লা সদর হাসপাতালে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য মাসুমাকে ঢাকা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসায় উন্নতি না হলে তাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজ ভোর সাড়ে ৪টার দিকে মাসুমা মারা যান।
এখন টিভির রাজশাহী ব্যুরো প্রধান রাকিবুল হাসান রাজিব বলেন, “মাসুমার মরদেহ রাজধানীর বাবর রোডে মারকাজুল ইসলামে নিয়ে যাওয়া হবে। সকাল সাড়ে ১০টায় তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মরদেহ নাটোরের গুরুদাসপুরে নিয়ে যাওয়া হবে।”
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক দ র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
বিজিবিতে চাকরি পেলেন ফেলানীর ছোট ভাই
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত ফেলানী খাতুনের ছোট ভাই আরফান হোসেন (২১) বিজিবির সিপাহি পদে চাকরি পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাটে ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ সময় আরফান হোসেনের বাবা মো. নুরুল ইসলামও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর
কক্সবাজারে ৮০ শতাংশ মাদক আসে সাগরপথে: বিজিবি
এর আগে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৫ বিজিবি আয়োজিত সিপাহি নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হন আরফান হোসেন।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, ‘‘বিজিবি সর্বদা ফেলানীর পরিবারের পাশে আছে। ফেলানীর ছোট ভাই বিজিবি নিয়োগ পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শুরু করবেন। আমরা আশা করি, প্রশিক্ষণ শেষ করে তিনি একজন যোগ্য বিজিবি সদস্য হিসেবে দেশমাতৃকার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘সীমান্তে ফেলানী হত্যার মতো নৃশংস ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে বিজিবি সর্বদা সীমান্তে অত্যন্ত সতর্ক ও সচেষ্ট রয়েছে।’’
আরফান হোসেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনটারী গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা নুর ইসলাম দিনমজুর ও মা জাহানারা বেগম গৃহিণী। পরিবারের অন্য দুই ভাইয়ের মধ্যে জাহান উদ্দিন স্নাতক পড়ছেন এবং আক্কাস আলী পড়ছেন এইচএসসিতে। দুই বোন মালেকা খাতুন ও কাজলী আক্তারের বিয়ে হয়েছে।
আরফান হোসেন বলেন, ‘‘ফেলানী হত্যার পর সারা দেশের মানুষ যেভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, তখন থেকে ইচ্ছে ছিল; বিজিবিতে চাকরি করব। আজ সেই স্বপ্ন পূর্ণ হলো। আমি দেশের মানুষের জন্য কাজ করব।’’
ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, ‘‘ভারত থেকে ফেরার পথে আমার নাবালিকা মেয়েকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখে বিএসএফ। সেই দৃশ্য আজও ভুলতে পারিনি। তবে, দেশবাসী আর বিজিবি সব সময় আমাদের পাশে ছিল। আজ আমার ছেলে মেধা ও যোগ্যতায় বিজিবিতে সুযোগ পেয়েছে। এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।’’
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় কিশোরী ফেলানী। তার নিথর দেহ কাঁটাতারের বেড়ায় দীর্ঘ সাড়ে চার ঘণ্টা ঝুলে ছিল। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে নিন্দার ঝড় উঠে।
ঢাকা/সৈকত/রাজীব