ছাড়পত্র না থাকা ও পরিবেশ দূষণসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে সিরাজগঞ্জ সদর এবং রায়গঞ্জের ৯টি ইট ভাটাকে ৪০ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় একটি ইট ভাটার চিমনি এক্সকাভেটর (খনন যন্ত্র) দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয় এবং একটি ভাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিরাজগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক তুহিন আলম এতথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

এর আগে, গতকাল সোমবার দিনব্যাপী সিরাজগঞ্জ সদর ও রায়গঞ্জ উপজেলায় অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। 

আরো পড়ুন:

সিলেটে কাচ্চি ডাইনকে লাখ টাকা জরিমানা

কুষ্টিয়ায় ২ ইন্টার্ন চি‌কিৎসক‌কে জরিমানা

পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক তুহিন আলম জানান, জেলার ৯টি ইটভাটাকে ৪০ লাখ টাকা জরিমানাম একটির চিমনি সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলা ও আরেকটি বন্ধ করা হয়েছে। ভ্রাম্যমান অভিযান পরিচালনা করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের সিনিয়র সহকারী সচিব আব্দুল্লাহ আল-মামুন।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কিছু ইট ভাটার মালিক পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না নিয়েই ইট পুড়াচ্ছিলেন। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, র‌্যাব-১২ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান চলাকালে রায়গঞ্জ উপজেলার এইচ এস ব্রিকসকে পাঁচ লাখ, এইচ আলী ব্রিকসকে পাঁচ লাখ, মেসার্স সুরমা ব্রিকসকে পাঁচ লাখ, এসএনবি ব্রিকসকে চার লাখ, সান ব্রিকসকে পাঁচ লাখ, হিরো ব্রিকসকে পাঁচ লাখ, সুপার ব্রিকসকে দুই লাখ ৫০ হাজার, রেজা ব্রিকস দুই লাখ ৫০ হাজার এবং সদর উপজেলার মেসার্স রাইন ব্রিকসকে ছয় লাখ টাকা জরিমানা ও আংশিক চিমনি ভেঙে ফেলা হয়। জেনিন ব্রিকসের চিমনি এক্সকাভেটর মেশিন দিয়ে সম্পূর্ণ ভেঙে দেওয়া হয়েছে ও আলফা ব্রিকস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ঢাকা/অদিত্য/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইট ভ ট স র জগঞ জ ইট ভ ট

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ

‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।

অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।

শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।

কর্মসূচি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ