আইডিইএ প্রকল্পের অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়ন করবে বিএমটিএফ
Published: 19th, February 2025 GMT
নির্বাচন কমিশনের আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) (২য় পর্যায়) প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর এনসিএস-২৭ ‘মার্ট কার্ড পার্সোনালাইজেশন, ও ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত লেখা ‘মুদ্রণ’ এর আওতায় এনসিএস-২৭ (লট-১) হালনাগাদ অগ্রগতি পেশ এবং এনসিএস-২৭ (লট-২) এর ‘সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি’ সংক্রান্ত প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ মেশিন টুলস্ ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ) লিমিটেড।
অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির পরবর্তী সভায় প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হবে। অর্থ উপদেষ্টা ড.
সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের বাস্তবায়নাধীন ‘আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) (২য় পর্যায়)’ প্রকল্পের ‘আরডিপিপি’তে প্যাকেজ এনসিএস-২৭ ‘স্মার্ট কার্ড পার্সোনালাইজেশন’, ও ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত লেখা ‘মুদ্রণ’ হিসেবে একটি প্যাকেজ রয়েছে। প্যাকেজ এনসিএস-২৭ এর আওতায় ১.৭৯ কোটি স্মার্ট কার্ডের পার্সোনালাইজেশন ও বিতরণের সংস্থান রয়েছে যার প্রাক্কলিত ব্যয় ৫৭.৬৯ কোটি টাকা। চুক্তি অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ নির্বাচন কমিশন সচিবালয় এবং ক্রয় পদ্ধতি হিসেবে ‘সরাসরি ক্রয়’ উল্লেখ রয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ২০১১-২০২২ সাল মেয়াদে বিশ্বব্যাংকের সহায়তাপুষ্ট মূল আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) প্রকল্পটি অধিক নিরাপত্তা সম্বলিত স্মার্ট আইডি সিস্টেম প্রবর্তনের কাজটি সম্পন্ন করে স্মার্ট কার্ড পার্সোনালাইজেন নাগরিকদের মাঝে বিতরণ কাজ অর্ধ সমাপ্ত অবস্থায় শেষ হওয়ার প্রেক্ষাপটে কাজটি চলমান রাখা ও চূড়ান্তভাবে নাগরিকদের স্মার্ট কার্ড প্রদানের লক্ষ্যে আইডিইএ (২য় পর্যায়) প্রকল্পটি গৃহীত হয়েছে এবং উক্ত প্রকল্পের বিভিন্ন কার্যক্রমসমূহ বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।
উল্লেখ্য, মূল আইডিইএ প্রকল্পের আওতায় ফ্রান্সের ওবাথুর টেকনোলজিস (ওটি)-এর সঙ্গে ২০১৫ সালে স্মার্ট কার্ড মুদ্রণ, বিতরণ ইত্যাদি কার্যক্রমের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও চুক্তির মেয়াদে মাত্র ১৪.৩৪ শতাংশ অগ্রগতি সাধিত হওয়ার পর চুক্তিটি বাতিল করা অনিবার্য হয়ে পড়ে। এর ফলে ব্ল্যাংক স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ, কার্ড মুদ্রণ, বিতরণ সাপ্লাই চেইনে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরি এ কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে আইডিইএ (২য় পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় জরুরি ভিত্তিতে তৎকালীন নির্বাচন কমিশনের অনুমোদনক্রমে বাংলাদেশ মেশিন টুলস্ ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ) এর সহায়তায় এ কার্যক্রম চলমান রাখা হয়।
সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় স্মার্ট কার্ড পার্সোনালাইজেশনের কারিগরি প্রযুক্তি অর্জন এবং আনুষাঙ্গিক সুবিধা স্থাপন সম্ভব হয়নি। কিন্তু স্মার্ট কার্ডের চাহিদা অব্যাহত থাকায় আইডিইএ (২য় পর্যায়) আরডিপিপি’র এনসিএস-২৭ প্যাকেজটিকে জরুরি প্রয়োজনে এনসিএস-২৭ (লট-১) ও এনসিএস-২৭ (লট-২) এ বিভাজন করা হয়। অতঃপর নির্বাচন কমিশনের অনুমোদনক্রমে বিএমটিএফ এর সহায়তায় সরাসরি চুক্তির মাধ্যমে ইতোমধ্যে দুই ধাপে মোট ১.৫৩৪১ (১.১৫+০.৩৮৪১) কোটি স্মার্ট কার্ড পার্সোনালাইজেশন করে মাঠ পর্যায়ে বিতরণ করা হয়েছে।
প্রথমত, ২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদে ১.১৫ কোটি এবং দ্বিতীয়ত, ২০২৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত মেয়াদে ৩৮.৪১ লাখ স্মার্ট কার্ড)। এ অংশটি প্যাকেজের এনসিএস-২৭ (লট-১) করা হয়েছে যা এডিপি’তে অন্তর্ভুক্ত আছে। এ বাবদ আরডিপিপি থেকে মোট ৪৯,০০৫৫ কোটি টাকা পরিশোধের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের অনুমোদনক্রমে একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে।
২০২৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচন কমিশনের ২৮তম সভায় ‘২০২৪ সালের জুন থেকে অবশিষ্ট যে সংখ্যক কার্ড পার্সোনালাইজেশন হবে তার জন্য নতুন করে বিএমটিএফ এর সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করা যেতে পারে’ মর্মে একটি সিদ্ধান্ত রয়েছে। ফলে মূল প্যাকেজ এনসিএস-২৭ এর অবশিষ্ট ২৫.৫০ লাখ (বীর মুক্তিযোদ্ধা খচিত ২,৫০ লাখ সহ) স্মার্ট কার্ড পার্সোনালাইজেশন কাজটি অনুমোদনক্রমে এনসিএস-২৭ (লট-২) হিসেবে বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা (২০২৪-২০২৫) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান রয়েছে। ‘সরাসরি ক্রয়’ পদ্ধতিতে ক্রয় কার্য সম্পাদনে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সুপারিশ প্রয়োজন রয়েছে বিধায় এ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে সূত্র জানায়।
অবশিষ্ট ২৫.৫৯ লাখ স্মার্ট কার্ড পার্সোনালাইজেশন ও ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত লেখা মুদ্রণ প্রাক্কলিত ব্যয় ৮৬৮.৪৫ লাখ টাকা। এ অবস্থায়, পিপিআর, ২০০৮ এর বিধি ৭৬ (২) অনুসারে যেহেতু এনসিএস-২৭ (লট-২) এর প্রাক্কলিত মূল্য ৮৬৮.৪৫ লাখ টাকা এবং ‘সরাসরি ক্রয়’ হিসেবে উল্লেখ রয়েছে, সেহেতু বাংলাদেশ মেশিন টুলস্ ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ) লিমিটেড এর সঙ্গে সরাসরি চুক্তি সম্পাদনে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সুপারিশ নেওয়ার জন্য প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হবে।
ঢাকা/হাসনাত/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ২০২৪ স ল র প রকল প র উপদ ষ ট র আওত য় কম ট র ব তরণ
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ