নির্বাচন কমিশনের আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) (২য় পর্যায়) প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর এনসিএস-২৭ ‘মার্ট কার্ড পার্সোনালাইজেশন, ও ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত লেখা ‘মুদ্রণ’ এর আওতায় এনসিএস-২৭ (লট-১) হালনাগাদ অগ্রগতি পেশ এবং এনসিএস-২৭ (লট-২) এর ‘সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি’ সংক্রান্ত প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ মেশিন টুলস্ ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ) লিমিটেড।

অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির পরবর্তী সভায় প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হবে। অর্থ উপদেষ্টা ড.

সালেহউদ্দিন আহমেদ সভায় সভাপতিত্ব করবেন।

সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের বাস্তবায়নাধীন ‘আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) (২য় পর্যায়)’ প্রকল্পের ‘আরডিপিপি’তে প্যাকেজ এনসিএস-২৭ ‘স্মার্ট কার্ড পার্সোনালাইজেশন’, ও ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত লেখা ‘মুদ্রণ’ হিসেবে একটি প্যাকেজ রয়েছে। প্যাকেজ এনসিএস-২৭ এর আওতায় ১.৭৯ কোটি স্মার্ট কার্ডের পার্সোনালাইজেশন ও বিতরণের সংস্থান রয়েছে যার প্রাক্কলিত ব্যয় ৫৭.৬৯ কোটি টাকা। চুক্তি অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ নির্বাচন কমিশন সচিবালয় এবং ক্রয় পদ্ধতি হিসেবে ‘সরাসরি ক্রয়’ উল্লেখ রয়েছে।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ২০১১-২০২২ সাল মেয়াদে বিশ্বব্যাংকের সহায়তাপুষ্ট মূল আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) প্রকল্পটি অধিক নিরাপত্তা সম্বলিত স্মার্ট আইডি সিস্টেম প্রবর্তনের কাজটি সম্পন্ন করে স্মার্ট কার্ড পার্সোনালাইজেন নাগরিকদের মাঝে বিতরণ কাজ অর্ধ সমাপ্ত অবস্থায় শেষ হওয়ার প্রেক্ষাপটে কাজটি চলমান রাখা ও চূড়ান্তভাবে নাগরিকদের স্মার্ট কার্ড প্রদানের লক্ষ্যে আইডিইএ (২য় পর্যায়) প্রকল্পটি গৃহীত হয়েছে এবং উক্ত প্রকল্পের বিভিন্ন কার্যক্রমসমূহ বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।

উল্লেখ্য, মূল আইডিইএ প্রকল্পের আওতায় ফ্রান্সের ওবাথুর টেকনোলজিস (ওটি)-এর সঙ্গে ২০১৫ সালে স্মার্ট কার্ড মুদ্রণ, বিতরণ ইত্যাদি কার্যক্রমের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও চুক্তির মেয়াদে মাত্র ১৪.৩৪ শতাংশ অগ্রগতি সাধিত হওয়ার পর চুক্তিটি বাতিল করা অনিবার্য হয়ে পড়ে। এর ফলে ব্ল্যাংক স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ, কার্ড মুদ্রণ, বিতরণ সাপ্লাই চেইনে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরি এ কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে আইডিইএ (২য় পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় জরুরি ভিত্তিতে তৎকালীন নির্বাচন কমিশনের অনুমোদনক্রমে বাংলাদেশ মেশিন টুলস্ ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ) এর সহায়তায় এ কার্যক্রম চলমান রাখা হয়।

সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় স্মার্ট কার্ড পার্সোনালাইজেশনের কারিগরি প্রযুক্তি অর্জন এবং আনুষাঙ্গিক সুবিধা স্থাপন সম্ভব হয়নি। কিন্তু স্মার্ট কার্ডের চাহিদা অব্যাহত থাকায় আইডিইএ (২য় পর্যায়) আরডিপিপি’র এনসিএস-২৭ প্যাকেজটিকে জরুরি প্রয়োজনে এনসিএস-২৭ (লট-১) ও এনসিএস-২৭ (লট-২) এ বিভাজন করা হয়। অতঃপর নির্বাচন কমিশনের অনুমোদনক্রমে বিএমটিএফ এর সহায়তায় সরাসরি চুক্তির মাধ্যমে ইতোমধ্যে দুই ধাপে মোট ১.৫৩৪১ (১.১৫+০.৩৮৪১) কোটি স্মার্ট কার্ড পার্সোনালাইজেশন করে মাঠ পর্যায়ে বিতরণ করা হয়েছে।

প্রথমত, ২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদে ১.১৫ কোটি এবং দ্বিতীয়ত, ২০২৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত মেয়াদে ৩৮.৪১ লাখ স্মার্ট কার্ড)। এ অংশটি প্যাকেজের এনসিএস-২৭ (লট-১) করা হয়েছে যা এডিপি’তে অন্তর্ভুক্ত আছে। এ বাবদ আরডিপিপি থেকে মোট ৪৯,০০৫৫ কোটি টাকা পরিশোধের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের অনুমোদনক্রমে একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে।

২০২৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচন কমিশনের ২৮তম সভায় ‘২০২৪ সালের জুন থেকে অবশিষ্ট যে সংখ্যক কার্ড পার্সোনালাইজেশন হবে তার জন্য নতুন করে বিএমটিএফ এর সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করা যেতে পারে’ মর্মে একটি সিদ্ধান্ত রয়েছে। ফলে মূল প্যাকেজ এনসিএস-২৭ এর অবশিষ্ট ২৫.৫০ লাখ (বীর মুক্তিযোদ্ধা খচিত ২,৫০ লাখ সহ) স্মার্ট কার্ড পার্সোনালাইজেশন কাজটি অনুমোদনক্রমে এনসিএস-২৭ (লট-২) হিসেবে বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা (২০২৪-২০২৫) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান রয়েছে। ‘সরাসরি ক্রয়’ পদ্ধতিতে ক্রয় কার্য সম্পাদনে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সুপারিশ প্রয়োজন রয়েছে বিধায় এ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে সূত্র জানায়।

অবশিষ্ট ২৫.৫৯ লাখ স্মার্ট কার্ড পার্সোনালাইজেশন ও ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত লেখা মুদ্রণ প্রাক্কলিত ব্যয় ৮৬৮.৪৫ লাখ টাকা। এ অবস্থায়, পিপিআর, ২০০৮ এর বিধি ৭৬ (২) অনুসারে যেহেতু এনসিএস-২৭ (লট-২) এর প্রাক্কলিত মূল্য ৮৬৮.৪৫ লাখ টাকা এবং ‘সরাসরি ক্রয়’ হিসেবে উল্লেখ রয়েছে, সেহেতু বাংলাদেশ মেশিন টুলস্ ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ) লিমিটেড এর সঙ্গে সরাসরি চুক্তি সম্পাদনে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সুপারিশ নেওয়ার জন্য প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হবে।

ঢাকা/হাসনাত/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ২০২৪ স ল র প রকল প র উপদ ষ ট র আওত য় কম ট র ব তরণ

এছাড়াও পড়ুন:

সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে

সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।

পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।

অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ  ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।

একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের  প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। 

অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে,  মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে  ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।

বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খেলাপি ঋণ ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে
  • সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
  • সংশোধিত সাইবার অধ্যাদেশও আন্তর্জাতিক মানের হয়নি
  • জার্মানির ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা মূল্যে পড়াশোনা, জেনে নিন সব তথ্য
  • ২০২৪ সালে মেটার কাছে ৩৭৭১ অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়েছে সরকার
  • কয়েক দশকের ছায়াযুদ্ধ থেকে এবার প্রকাশ্য সংঘাতে ইরান-ইসরায়েল
  • তিন চ্যাম্পিয়ন দলসহ যেসব তারকাকে দেখা যাবে না ক্লাব বিশ্বকাপে
  • ৫ বছরে ঋণের স্থিতি বাড়বে ৫৩.৭৭ শতাংশ: অর্থবিভাগ