বাংলাদেশকে ১৬ হাজার ফুড বাস্কেট উপহার সৌদি আরবের
Published: 19th, February 2025 GMT
সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান মানবিক সহায়তা ও ত্রাণ কেন্দ্রের (কেএসরিলিফ) অর্থায়নে বাংলাদেশে দুস্থ ও দরিদ্রদের খাদ্য ঝুড়ি বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার সৌদি দূতাবাসে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ কর্মসূচির উদ্বোধন হয়।
আসন্ন রমজান মাস সামনে রেখে দেশের ২৩ জেলায় দুস্থ ও দরিদ্রদের মোট ১৫ হাজার ৮৬০টি খাদ্য ঝুড়ি (ফুড বাস্কেট) বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রতিটি খাদ্য ঝুড়িতে মোট ২৪ কেজি খাদ্য থাকবে। এর মধ্যে চাল ১০ কেজি, মসুর ডাল ৭ কেজি, ভোজ্য তেল তিন লিটার, লবণ এক কেজি ও চিনি তিন কেজি। সর্বমোট ১৫ হাজার ৮৬০ ফুড বাস্কেট ২৩ জেলায় বিতরণ করা হবে।
বাংলাদেশে এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহযোগিতা দেবে সুনবুলাহ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।
সৌদি দূতাবাসে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আলদুহাইলান ও সুনবুলাহ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী (সিইও) ড.
অনুষ্ঠানে সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের মানুষের প্রতি সৌদি আরবের সহমর্মিতা ও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। খাদ্য ঝুড়ি প্রকল্প বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগিতায় সৌদি সরকারের আগ্রহ ও সম্প্রীতির একটি দৃষ্টান্ত। বাংলাদেশের দরিদ্র ও দুস্থ পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর মাধ্যমে সৌদি আরব ও বাংলাদেশের জনগণের মধ্যকার সম্পর্ক আরো সৌহার্দ্যপূর্ণ ও ঘনিষ্ঠ হলো।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সৌদি আরব থেকে আগত অতিথি আহমাদ বিন সালেহ আররেমাহ, খালিদ বিন আব্দুর রাহমান রাযী, আব্দুর রাহমান আলযেবেন, আব্দুর রাহমান আলমিগ্রেন এবং নাসির আল সাঈদ।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।