কিংস পার্টি গঠন করে নির্বাচন দেবেন, এই সব ষড়যন্ত্র মানুষ বোঝে: আবদুল আউয়াল মিন্টু
Published: 20th, February 2025 GMT
সরকারের ব্যর্থতার কারণে দ্রব্যমূল্য দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। তিনি বলেন, ‘একই সঙ্গে আমরা দেখছি, নির্বাচনের নামে তালবাহানা চলছে। উপদেষ্টা বা প্রধান উপদেষ্টা একেক সময় একেক কথা বলেন। সরকারে বসে কিংস পার্টি গঠন করে তার পর নির্বাচন দেবেন, এই সব ষড়যন্ত্র দেশের মানুষ বোঝে।’
আজ বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহে এক সমাবেশে আবদুল আউয়াল মিন্টু এ কথা বলেন। নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো এবং দ্রুত নির্বাচনী রূপরেখা ঘোষণাসহ বিভিন্ন দাবিতে কেন্দ্রঘোষিত চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সমাবেশের আয়োজন করে ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপি। নগরের নতুন বাজার এলাকার হরিকিশোর রায় রোডের দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে সমাবেশ বেলা ৩টায় শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হয়।
আরও পড়ুনসংস্কার সংস্কার করে দেশে আর অরাজকতা করার চেষ্টা করবেন না: মির্জা ফখরুল ইসলাম১ ঘণ্টা আগেসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুল আউয়াল বলেন, ‘এই সরকারের (অন্তর্বর্তী সরকার) কিছু কিছু লোক সংস্কার সংস্কার করছে। ভাই, সংস্কার তো আমরাও চাই। এখন থেকে আট বছর আগে আপোসহীন নেত্রী সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছেন। আমরা ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিলাম।’
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সমাবেশের আয়োজন করে ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপি.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
‘দেশে ভালো-মন্দ দেখার কেউ নেই, প্রতিবাদ করলে অপমানিত হতে হয়’
ঈদের ছুটি শেষে গ্রাম থেকে শহরমুখী মানুষের ঢল নেমেছে। সবাই কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য উদগ্রীব। যে যেমন করে পারছেন গাড়িতে উঠছেন। কেউ বাসে, কেউ সিএনজিচালিত অটোরিকশায়, আবার অনেকে ট্রাক ভাড়া করেও রাজধানীর দিকে ছুটছেন। তিন চাকার যানে মহাসড়কে চলাচল নিষেধ থাকলেও দেদার চলছে শেরপুর-ময়মনসিংহ সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা। শুধু তাই নয়, ব্যাপক গতির সঙ্গে দ্বিগুণ ভাড়া নিচ্ছেন চালকরা। এমন পরিস্থিতিতে বেকায়দায় পড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলে ফিরছেন যাত্রীরা।
পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে গত শুক্রবার কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলা সদরের বাড়িতে যান পোশাকশ্রমিক আমিন মিয়া। বাস না পেয়ে তিনি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে প্রথমে ভালুকা পরে ময়মনসিংহ থেকে শেরপুর আসেন।
তার অভিযোগ– ময়মনসিংহ থেকে শেরপুরের ভাড়া ১৫০ টাকা। এবার তিনি এসেছেন ২৫০ টাকায়। ছুটি শেষে বৃহস্পতিবার কর্মস্থলে ফেরার সময় একই ভাড়া গুনতে হচ্ছে তাকে। এ নিয়ে বচসা শুরু হলে তাঁকে বেশ নাজেহাল হতে হয় শহরের সদর থানা এলাকার অটোস্ট্যান্ডে চালক ও সুবিধাভোগীদের হাতে।
এ সময় আমিন মিয়া দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘অটোরিকশা স্ট্যান্ডে এসে মনে হয়েছে দেশে ভালো-মন্দ দেখার কেউ নেই। যার যা খুশি তাই করছে। প্রতিবাদ করলেও অপমানিত হতে হয়। আমরা কম আয়ের মানুষ। কি আর করবো।’ নিরূপায় হয়ে ২৫০ টাকা দিয়েই রওনা দিতে হয় তাকে।
আমিন মিয়ার মতো অসংখ্য যাত্রী অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন। কিন্তু সবাই মুখেই কুলুপ আটা। কেউ কিছু বলছেন না। আকরামুজ্জামান নামে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এক যাত্রী এই প্রতিবেদককে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনাদের বলে কোনো লাভ নেই। ঈদুল ফিতরেও একই অবস্থা ছিল। পত্র- পত্রিকায় খবর দেখেছি। কিন্তু কিছুই তো হলো না।’
তার ভাষ্য, অটোরিকশার চালকরা ভাড়া তো বেশিই নিচ্ছে। তা ছাড়া যে গতিতে গাড়ি চালাচ্ছে তাতে জীবনাটা হাতের মুঠোয় নিয়ে কর্মস্থলে ফিরতে হচ্ছে। কিছু বললে কানে নেয় না চালকরা।
জেলা শহরের রঘুনাথ বাজার থানামোড় ও খোয়ারপাড় এলাকার স্ট্যান্ডগুলোতে গিয়ে দেখা যায় লোকে লোকারণ্য। এর সুযোগ নিচ্ছে চালক ও দালাল শ্রেণি।
জানা গেছে, থানামোড় থেকে জামালপুরের দূরত্ব মাত্র ১৫ কিলোমিটার। এ সড়কে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৫০ টাকা। খোয়ারপাড় শাপলা চত্বর এসে থামেন ৮টি উপজেলার যাত্রীরা। ঝিনাইগাতী থেকে শেরপুর সদরের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার, এখানে ৪০ টাকার ভাড়া দিনে ৬০ টাকা, রাতে ৮০ টাকা দিতে হচ্ছে। শ্রীবরদী শহর থেকে যারা আসছেন তাদের ১৭ কিলোমিটার দূরত্বের জন্য গুনতে হচ্ছে ৬০ টাকা। ৮০ টাকাও নিচ্ছেন কেউ কেউ। নালিতাবাড়ি উপজেলা সদর থেকে এসে অনেকেই ভাড়া দিয়েছেন ৮০ টাকা। অথচ বিআরটিএ ২৬ কিলোমিটার সড়কের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে ৫০ টাকা।
জেলা পরিষদ ডাকবাংলোর সামনে থেকে তারাকান্দার দূরত্ব মাত্র ৮ কিলোমিটার। ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৩০ টাকা। অটোরিকশার যাত্রী তৌফিকুর রহমান বলেন, আগে ভাড়া ছিল ২০ টাকা। এখন দিতে হচ্ছে ৩০ টাকা। অর্থাৎ কর্মস্থলমুখী যাত্রীরা ঈদের বোনাস ভাড়া দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন প্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করলেও কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না অটোচালক ও সুবিধাভোগীদের দৌরাত্ম্য।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় অটোরিকশা চালক আক্তার হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কি করতাম ভাই, গ্যাস পাম্পে গেলে ৩ ঘণ্টা বইসা থাইকা গ্যাস নিতে হয়। গ্যাসের চেয়ে হাওয়া থাকে বেশি। ১৯০ টাকার গ্যাস ২০০ টাকা দিলে টাকা আর ফেরত দেয় না। তাই ভাড়া বেশি না নিলে পুষে না।’
এ ব্যাপারে শেরপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, ঈদের শুরু থেকে প্রতিদিন বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ডে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনের উপস্থিতি যতক্ষণ থাকে ততক্ষণ সব কিছু ঠিকঠাক থাকে। চলে এলে ফের অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘নীতি, নৈতিকতার অবক্ষয় হয়েছে। আমাদের চেষ্টা আমরা করে যাচ্ছি। জরিমানা করা হচ্ছে।’