সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার তিনদিন পরও আতঙ্ক কাটেনি খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট)। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও খোলা রয়েছে সব হল। তবে, কিছু শিক্ষার্থী নিরাপত্তাহীনতার কারণে হল ত্যাগ করলেও অধিকাংশই হলে অবস্থান করছেন। যদিও পাঁচ দফা দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের লাগিয়ে দেওয়া তালা ঝুলছে কুয়েটের একাডেমিক এবং প্রশাসনিক ভবনগুলোতে। নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে ক্যাম্পাসে।  

হামলার নেপথ্যের ঘটনা ও জড়িতদের চিহ্নিত করতে গঠিত চার সদস্যের তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে কাজ করতে শুরু করেছে। 

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহেদুজ্জামান শেখ উল্লিখিত বিষয়গুলো নিশ্চিত করে বলেন, “শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য বিভাগীয় কমিশনারের তত্ত্বাবধায়নে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ভিসি ঢাকায় অবস্থান করায় প্রোভিসি দায়িত্ব পালন করছেন।” 

আরো পড়ুন:

ফুল দেওয়া নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের হাতাহাতি, আহত ২

বাগেরহাটে বিএনপির দু’গ্রুপে সংঘর্ষে আহত নেতার মৃত্যু

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করেছে। এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে- ‌‘ছবিতে প্রতিবাদ, দাবিতে ঐক্য’। কর্মসূচি ঘোষণা করেছে রক্তাক্ত কুয়েট কর্নার। আজ বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। 

এদিকে, কুয়েটের ভিসি, প্রোভিসি এবং ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে বর্জন করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা নতুন ভিসি নিয়োগের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। 

শিক্ষার্থীরা জানান, গত মঙ্গলবার কুয়েটের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ৫ দফা দাবি দেওয়া হলেও কুয়েট প্রশাসন সেটা পূর্ণাঙ্গ রূপে মানেনি। এ ঘটনায় কুয়েটের ভিসি, প্রোভিসি এবং ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে বর্জন করা হয়েছে।

তারা আরো জানান, কুয়েট প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। যার কারণে তারা নতুন প্রশাসন চায়। শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি দিয়েছে। সেখানে নতুন ভিসি নিয়োগ দিয়ে ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য বলা হয়েছে।

কুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম বলেন, “আমাদের যে দাবিগুলো ছিল, তা মেনে নেওয়া হয়নি। আমরা চাই, ছাত্র রাজনীতি বন্ধের যে অধ্যাদেশ আছে সেটাকে পরিবর্তন করে অর্ডিন্যান্স করে হবে। আমাদের ছাত্রশিবির বলে যে ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে তা মিথ্যা ও ফেভরিকেটেড। প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমাদের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব নতুন ভিসি নিয়োগ দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে হবে।”

কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড.

এম এ হাশেম বলেন, “বৃহস্পতিবার থেকে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছি। কিছু তথ্য প্রমাণ পেয়েছি। তদন্তের জন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলব। তবে প্রশাসনিক ভবন এবং একাডেমিক ভবনগুলো তালাবদ্ধ থাকায় কার্যক্রম কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে।” 

বৃহস্পতিবার কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ বলেন, “শিক্ষার্থীদের সব দাবি পূরণ করা হয়েছে। আশা করি, তারা শিগগিরই ক্লাসে ফিরবেন। তাদের সব দাবি তো পূরণ করেছি, এ কারণে আমি পদত্যাগ করছি না। শিক্ষার্থীদের ধাক্কাধাক্কিতে আমি আঘাতপ্রাপ্ত হই। এছাড়া একদিন অবরুদ্ধ ছিলাম। চিকিৎসার জন্য আমি ঢাকায় অবস্থান করছি।” 

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ র জন য র ঘটন তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

মেয়াদোত্তীর্ণ অগ্নিনির্বাপকে চলছে বেরোবি

১ মাস আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র। অথচ এসব যন্ত্রগুলো বিভিন্ন দপ্তর, অফিস ও ক্লাস রুমের দেয়ালে ঝুলছে। ফলে যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

‎বুধবার (৩০ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।

‎সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একাডেমিক ভবনগুলোতে নেই পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার। আবারে যেখানে, সেগুলোর বেশিরভাগই মেয়াদোত্তীর্ণ। চলতি বছরের ২৯ জুন এগুলোর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।

আরো পড়ুন:

তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন

‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’

‎ইতিহাস ও প্রত্নতত্ন বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান হাবিব রকি বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনগুলোতে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র থাকলেও সেগুলোর মেয়াদ নেই। ঘটনাক্রমে আগুন লাগার ঘটনা ঘটলে এই মেয়াদোত্তীর্ণ অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের রাসায়নিক পদার্থ ঠিকভাবে কাজ না করলে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যাবে। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আতঙ্ক সৃষ্টি করবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এগুলো দ্রুত পরিবর্তন করার আহ্বান জানাচ্ছি।”

‎মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী রুদ্র সূত্রধর বলেন, “মেয়াদোত্তীর্ণ ফায়ার এক্সটিংগুইশার প্রায়ই কাজ করে না বা অল্প সময়ে গ্যাস শেষ হয়ে যায়। ফলে জরুরি অবস্থায় আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা ঘটতে পারে। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জীবন সরাসরি ঝুঁকির মুখে পড়ে। এ অবস্থায় নিরাপত্তার ঘাটতি একটি বড় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।”

‎‎এ বিষয়ে নিরাপত্তা শাখার উপ-রেজিস্ট্রার লোকমান হাকিম বলেন, “এ বিষয়ে টেন্ডার হয়ে গেছে। টেন্ডার কেউ পেয়েছে। কাজের অনুমতি পেলে তারা কাজ শুরু করবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. হারুন অর রশিদ বলেন, “যারা কাজটা পেয়েছে। তারা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রগুলো লাগাবে। কিন্তু এখনো লাগায়নি। আর এটা নিয়মিত কাজের অন্তর্ভুক্ত।”

ঢাকা/‎সাজ্জাদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মেয়াদোত্তীর্ণ অগ্নিনির্বাপকে চলছে বেরোবি