স্কুলের বয়স এক শ পেরিয়েছে। স্কুলে যাঁরা পড়াশোনা করেছেন, তাঁদের কেউ এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কেউবা রাজনীতিবিদ। কেউ আবার শিক্ষক। স্কুলের শতবর্ষ উপলক্ষে প্রাক্তন এই শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা বসে। অনুষ্ঠান উপলক্ষে সাজানো হয় পুরো স্কুল। এতে অংশ নেন হাজারো শিক্ষার্থী ও শিক্ষক। তাঁদের গল্প-আড্ডায় জমে ওঠে মিলনমেলা।

‘রঙিন স্বপ্ন নিয়ে তারকার মেলায় চেতনায় দিয়ে যায় দুল, শতবর্ষে পা রেখেছে জে কে অ্যান্ড এইচ কে হাইস্কুল’ সূচনা গানের মাধ্যমে শনিবার হবিগঞ্জের যোগেন্দ্র কিশোর-হরেন্দ্র কিশোর হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের শতবর্ষ পুনর্মিলনী-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। হবিগঞ্জ শহরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২৪ সালে। গত বছর প্রতিষ্ঠানটি শতবর্ষ পূর্ণ করেছে।

যোগেন্দ্র কিশোর-হরেন্দ্র কিশোর হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে বেলা ১১টায় আকাশে বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী জি কে গউছ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন হবিগঞ্জের কৃতী সন্তান ও নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য খন্দকার মোহাম্মদ আশরাফুল মুনিম।

উদ্বোধন শেষে আলোচনা, স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন, স্মৃতিচারণা, খেলাধুলা, র‍্যাফল ড্র, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা অনুষ্ঠানে সাজানো হয় পুরো অনুষ্ঠান। স্মৃতিচারণা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, প্রতিটি মানুষ তার শৈশব জীবনকে ফিরে পেতে ভালোবাসে। কর্মময় জীবনের সব ব্যস্ততা ভুলে গিয়ে ছাত্রজীবনের সহপাঠীরা একে–অপরের সঙ্গে মিলতে জড়ো হন। সবার উপস্থিতিতে রঙিন হয়ে ওঠে প্রিয় স্কুলের মাঠ। সহপাঠী বন্ধুত্বের এ মিলন অন্য রকম সুখের বার্তা দেয়। সেই সোনালি দিনগুলো স্মরণ করতে তাঁদের এই পুনর্মিলন।

পুনর্মিলনীতে আসা প্রাক্তন শিক্ষার্থী হুসনে আখতার রুমি বলেন, ‘সহপাঠী ও একই স্কুলে পড়ুয়া বড় ভাই-বোনদের পেয়ে অন্য রকম একটা দিন কাটল আজ। পুরো আয়োজনটা ছিল বেশ সুখের। উপস্থিত হয়ে মনে হয়েছে, ছাত্রজীবনে আবারও ফিরে গেছি।’

শতবর্ষ পূর্তি ও শিক্ষক-শিক্ষার্থী পুনর্মিলনী উদ্‌যাপন পরিষদের আহ্বায়ক ও সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য মোহাম্মদ জহিরুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্য দেন হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফরিদুর রহমান, পুলিশ সুপার এ এন এম সাজেদুর রহমান, হবিগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো.

হারুন মিয়া, প্রাক্তন শিক্ষার্থী রাজনীতিবিদ সাখাওয়াত হাসান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ মো. আবুল হাসান প্রমুখ।

অনুষ্ঠান ঘিরে প্রায় এক মাস আগে থেকে বিদ্যালয়টিকে সাজানো হয় রঙিন রূপে। শহরের প্রধান সড়কসহ স্কুল প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকা রঙিন বাতির আলোয় সবার দৃষ্টি কাড়ে। রাতে গানের আসরে মুখরিত হয়ে ওঠে অনুষ্ঠানস্থল।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন শতবর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হিন্দু নেতাদের সাক্ষাৎ

আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিভিন্ন পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের নেতারা সাক্ষাৎ করেছেন। তাঁরা এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান।

আজ সোমবার বিকেলে হিন্দু নেতারা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যান। এ সময় তাঁদের কাছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি তাঁদের বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে সব সময় দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না। পূজা উপলক্ষে বছরে একবার সামনাসামনি দেখা হয়, কথা বলার সুযোগ হয়।’

হিন্দুধর্মীয় নেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর এক হাজারের বেশি পূজামণ্ডপ বেড়েছে। সারা দেশে পূজামণ্ডপ তৈরির কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।

নেতারা বলেন, ধর্ম উপদেষ্টা নিয়মিতভাবে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, মন্দির পরিদর্শন করেন। দুর্গাপূজা উৎসবমুখর করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হচ্ছে। গতবারের মতো এবারও নির্বিঘ্নে পূজা উদ্‌যাপন হবে বলে তাঁরা আশা করছি।

এ সময় স্থায়ী দুর্গামন্দিরের জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব। তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এ জন্য আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিয়মিত আমাদের খোঁজখবর রেখেছেন। গত বছরের মতো এ বছরও পূজায় আমরা দুই দিন ছুটি পেয়েছি। এ জন্যও আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। গত বছর ৮ আগস্ট দেশে ফেরার পরপরই আপনি ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করে বলেছিলেন, আমরা সবাই এক পরিবার। আপনার বক্তব্য আমাদের মনে গভীরভাবে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, ‘গত বছর দুর্গাপূজায় ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে আপনি বলেছিলেন, নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে কড়া পাহারা বসিয়ে পূজা হবে এমন দেশ আমরা চাই না। আমরা প্রথমবারের মতো কোনো সরকারপ্রধানের কাছে এমন বক্তব্য শুনেছি। আমরাও আপনার বক্তব্যের সঙ্গে একমত, আমরাও চাই এ আয়োজনে সবাই সহযোগিতা করুক, দেশের সবার মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকুক।’

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে বলেন, ‘আপনি দায়িত্বে থাকাকালীন দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করেছেন। আমরা লক্ষ করেছি, এক বছর ধরে, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর মিথ্যা কথা, ফেক নিউজ ছড়ানো হচ্ছে। আপনার নেতৃত্বে ধর্ম–বর্ণ–জাতিনির্বিশেষে বাংলাদেশের সব মানুষের কল্যাণ হবে, আমরা সেটাই কামনা করি।’

বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয় সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে। কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে আমরা কল্যাণকর কর্মসূচিগুলো নিশ্চিত করি।’ এ সময় তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।

প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও পূজার অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান এবং দুর্গাপূজা ঘিরে যাতে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের সুযোগ তৈরি না হয়, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।

বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার ও সচিব দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণানন্দ (একক), বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজসংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, শ্রীশ্রী গীতা হরি সংঘ দেব মন্দিরের সভাপতি বিমান বিহারী তালুকদার, বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় দাস, শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র দত্ত ও সিদ্ধেশ্বরী সর্বজনীন পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণীতা সরকার উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজকীয় ভোজে ট্রাম্প–মেলানিয়াকে কী কী খাওয়ালেন রাজা চার্লস
  • দুর্গাপূজায় নিরাপত্তায় সতর্ক অবস্থায় থাকবে পুলিশ: আইজিপি
  • শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে সিঙ্গাইরের ৭৭ মণ্ডপে অনুদান বিতরণ
  • শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন উপলক্ষে বন্দরে প্রস্তুুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত 
  • মোদির জন্মদিনে ট্রাম্পের ফোন, মেসির উপহার
  • বেনাপোল দিয়ে ইলিশের প্রথম চালান গেল ভারতে
  • সদর উপজেলায় শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা
  • ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেল ৩৭টি প্রতিষ্ঠান
  • ‘ওজোনস্তর ক্ষয়ে স্বাস্থ্য, কৃষি ও প্রাণিজগৎ ঝুঁকির মুখে’
  • দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হিন্দু নেতাদের সাক্ষাৎ