নানা প্রজাতি ও নামের দেশি-বিদেশি বিড়ালের মেলা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে ময়মনসিংহ নগরের ব্রহ্মপুত্র নদের পারে জয়নুল আবেদিন বৈশাখী মঞ্চে এ মেলা হয়।
কোনোটির চোখে চশমা, কোনোটির মুখে মেকআপ; আবার কোনোটি কপালে টিপ, শরীরে রঙিন পোশাক পরে নানা ঢঙে হাঁটছিল মঞ্চের লাল গালিচায়। যা দেখতে ভিড় করেন দর্শকরা। এ মেলার আয়োজন করে প্রফেসরস পেট কেয়ার নামে একটি সংগঠন। তারা মেলার নাম দেয় ‘ক্যাট শো’।
প্রফেসরস পেট কেয়ারের পরিচালক ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক মাহমুদুল আলম সাংবাদিকদের জানান, দেশে বিড়ালের সংখ্যা বাড়ছে। বিড়াল শুধু প্রাণীই নয়, এটি পরিবারেরও সদস্য। এই সদস্যকে নিয়ে এখন মানুষ সময় কাটায়। বিড়ালপ্রেমিকদের এক ছাতার নিচে আনার জন্যই এই আয়োজন। তিনি বলেন, এখানে বিড়ালের ভেকসিনেশন, বিড়ালকে নিয়ে বিভিন্ন ইভেন্ট– যেমন ক্যাটওয়াক, বেস্ট ক্যাট সিলেকশন, বিড়ালের ফ্রি হেলথ চেকআপ, বিড়ালের লালন-পালন ও রোগবালাই সম্পর্কেও ধারণা দেওয়া হয়।
মাহমুদুল আলমের দাবি, বর্তমানে ময়মনসিংহ শহরে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ বিড়াল লালন-পালন করে। শুধু লালন-পালন করলেই হবে না, এর যত্ন, রোগবালাই ও ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে হবে।
২০২৩ সালে প্রথমবার একটি সংগঠন ক্যাট শো করেছিল এ স্থানে। দ্বিতীয়বারের এ আয়োজনে কোকো, মিমি, মুলু, প্রিটি, ব্রাউনি, সিম্বি, জ্যাকসো, জোজো, পরী, মারলী, মিঠি, ইমু, লিও, জলিসহ নানা নামের বিড়াল অংশ নেয়। যেমন খুশি তেমন সাজো, প্রদর্শনী ও র্যাম্প শোতে অংশ নেয় ১৩০টি বিড়াল।
নগরের নতুন বাজার এলাকার গৃহিণী শাহানাজ মাইফুল ছেলে আফিদ আমিন চৌধুরীকে নিয়ে মেলায় আসেন। পার্সিয়ান জাতের দুটি বিড়াল ছিল তাদের হাতে। বিড়ালের শরীরে ছিল বর্ণিল পোশাক, চোখে ছিল চশমা। একটির নাম মুলু, অন্যটি প্রিটি।
আফিদ আমিন চৌধুরী বলেন, ‘বাসায় বিড়ালগুলো আমাদের ভাইবোনের মতো। বাবা-মা আমাদের যেমন কেয়ার করে, তাদেরও তেমনি কেয়ার করে। পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে সময় কাটাই বিড়ালের সঙ্গে। মুঠোফোনে গেম খেলার চেয়ে বিড়ালের সঙ্গে খেলা অনেক ভালো।’
নগরীর কালীবাড়ী রোডের তরুণী আফরিন একটি সংকর জাতের বিড়াল ৯ মাস ধরে লালন-পালন করছেন। নাম দিয়েছেন লিও। তিনি বলেন, ‘বিড়াল কাছে থাকলে মন খারাপ হয় না। বিড়ালটা এখন পরিবারের অংশ হয়ে গেছে।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ক্ষমা পেয়ে কাজে যোগ দিলেন চিকিৎসক ধনদেব চন্দ্র বর্মণ
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে আসা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আবু জাফরের সঙ্গে তর্কে জড়ানো চিকিৎসক ধনদেব চন্দ্র বর্মণকে ক্ষমা করা হয়েছে। শোকজের জবাব সন্তোষজনক হওয়ায় তাঁকে ক্ষমা করে আগের পদ আবাসিক সার্জন (ক্যাজুয়ালটি) পদে বহাল করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তিনি কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে মুঠোফোনে ধনদেব চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ আমার জবাবে সন্তুষ্ট হয়ে পূর্বের পদে বহাল করেছেন। আমি কাজে যোগ দিয়েছি।’
গতকাল বুধবার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম ফেরদৌস স্বাক্ষরিত একটি পত্র জারি করা হয়। এতে বলা হয়েছে, ‘৬ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনকালে হাসপাতালের আবাসিক সার্জন (ক্যাজুয়ালটি) ও সহকারী অধ্যাপক (সার্জারি) ইনসিটু, ধনদেব চন্দ্র বর্মণকে মহাপরিচালকের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও অসৌজন্যমূলক আচরণের জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয় এবং সেই সঙ্গে ক্যাজুয়ালটি ওটি ইনচার্জের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। তিনি তাঁর অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের কারণে ক্ষমা চেয়ে এবং ভবিষ্যতে এরূপ অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ করবেন না বলে অঙ্গীকার করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে লিখিত জবাব দাখিল করেন। পরবর্তী সময়ে তাঁর দাখিলকৃত জবাব স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয় বরাবর প্রেরিত প্রতিবেদন সন্তোষজনক হওয়ায় মহাপরিচালকের উদারতা ও মহানুভবতায় ধনদেব চন্দ্র বর্মণকে ক্ষমা প্রদর্শন করেন এবং তাঁকে পূর্বের কর্মস্থল ক্যাজুয়ালটি ওটি ইনচার্জ পদে পুনর্বহাল রাখার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। সে মোতাবেক তাঁকে ক্যাজুয়ালটি ওটি ইনচার্জের দায়িত্বে পুনর্বহাল করা হলো। এই আদেশ পত্র জারির তারিখ থেকে কার্যকর হবে।’
আরও পড়ুনস্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কে জড়ালেন চিকিৎসক, বললেন ‘আমাকে সাসপেন্ড করেন, নো প্রবলেম’০৬ ডিসেম্বর ২০২৫৬ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আবু জাফর। এ সময় হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি অপারেশন থিয়েটার পরিদর্শনে গিয়ে ডিজি কক্ষের ভেতরে টেবিল থাকার কারণ জানতে চান চিকিৎসকদের কাছে। এ সময় জরুরি বিভাগের ক্যাজুয়ালটি ইনচার্জ ধনদেব চন্দ্র বর্মণ তাঁর সঙ্গে তর্কে জড়ান।