নোয়াখালীর সুবর্ণচরে আশ্রয়ণ কেন্দ্রের ঘর অবৈধভাবে বিক্রিতে বাধা দেওয়ায় ওয়ার্ড কৃষকদলের সভাপতিকে প্রকাশ্যে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে একই ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতির বিরুদ্ধে। 

হামলার শিকার কৃষকদল নেতা আব্দুল করিম (৫০) উপজেলার চর জুবলি ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ড কৃষকদলের সভাপতি। অপরদিকে, অভিযুক্ত মাহবুবুল হক চৌধুরী একই ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি। 

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে উপজেলার চর জুবলি ইউনিয়নের চরমহিউদ্দিন বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

হামলার শিকার কৃষকদল নেতা আব্দুল করিম অভিযোগ করে বলেন, “চর জুবলি ইউনিয়নে গৃহহীনদের জন্য সরকারিভাবে আশ্রয়ণ কেন্দ্রের প্রায় ৮০০ ঘর নির্মাণ করা হয়। গত ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে সেখান থেকে ৪১টি ঘর নামে বেনামে মানুষের কাছে বিক্রি করে দেয় বিএনপি নেতা মাহবুবুল হক চৌধুরী। প্রতিটি ঘর দখল স্বত্ত্বে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা হারে বিক্রি করেন তিনি। যখন ঘরগুলো বুঝিয়ে দেয়, তখন ঘটনাটি জানাজানি হয়। বিষয়টি জানতে পেরে আমি বাধা দিই এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তাকে জানাই।” 

এর জের ধরে মাহবুবুল হক ও তার সহযোগিরা শনিবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে স্থানীয় চরমহিউদ্দিন বাজারে আমার পথ আটকায়। এক পর্যায়ে আমাকে বেধড়ক মারধর করে আমার সঙ্গে থাকা ১লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাহবুবুল হক এ ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানেন না বলে মোবাইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। 

চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন মিয়া বলেন, “বিষয়টি থানায় কেউ অবহিত করেনি। তবে এ বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হবে।”

সুবর্ণচর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ছেনমং রাখাইন জানান, উপজেলার চর মহিউদ্দিন গ্রামে ভূমিহীনদের জন্য ৮২০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে ৪০টি ঘর খালি ছিল। ওই ঘর বন্দোবস্ত না পাওয়ায় সেগুলোতে কিছু লোক ঢুকে পড়ে। খবর পেয়ে ঘরগুলো পুনরায় দখলে নেওয়া হয়।

ঢাকা/সুজন/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ষকদল ব এনপ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের হামলায় ২০ ইসরায়েলি নিহত

ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা চারদিন ধরে চলছে। এসব হামলায় উভয় দেশের মধ্যে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। ইসরায়েলের জাতীয় পরিষেবা জানিয়েছে, আজ সোমবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত শুক্রবার থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা  ২০ জনে পৌঁছুল। আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

অন্যদিকে আল-জাজিরা বলছে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত ইরানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়া, তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

রোববার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ