Risingbd:
2025-11-02@11:46:44 GMT

অফিস-কমিটি-মাঠ আছে, খেলাধুলা নেই

Published: 17th, September 2025 GMT

অফিস-কমিটি-মাঠ আছে, খেলাধুলা নেই

গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত রাজা রাজেন্দ্র নারায়ণ (আরআরএন) পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিশাল খেলার মাঠ। মাঠের এক কোণায় উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার অফিস থাকলেও সেখানে নেই কার্যক্রম। কাগজে-কলমে ক্রীড়া সংস্থা ও কমিটি থাকলেও বাস্তবে খেলাধুলার আয়োজন না থাকায় স্থানীয় ক্রীড়াঙ্গন হয়ে পড়েছে প্রাণহীন।

কিশোর-তরুণদের বড় অংশ সময় কাটাচ্ছে স্মার্টফোনে কিংবা জড়িয়ে পড়ছে মাদক ও নানা অপকর্মে। এ অবস্থার দায় নিচ্ছে না কেউ। তবে হতাশার মধ্যেও স্থানীয় পাড়া-মহল্লার ক্রীড়াপ্রেমী তরুণরা নিজেদের দেওয়া চাঁদার টাকায় ব্যাট-বল কিনে কিছু খেলাধুলার আয়োজন করছে।

আরো পড়ুন:

নড়াইলে ষাঁড়ের লড়াই দেখলেন হাজারো দর্শক

ক্রীড়ায় প্রাণ ফিরতে শুরু করেছে: উপদেষ্টা

গত বছরের ৮ অক্টোবর তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে পদাধিকার বলে আহ্বায়ক এবং উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে ৭ সদস্যবিশিষ্ট উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটি গঠন করা হয়। এক বছরে কমিটির সভা হয়নি। দেওয়া হয়নি খেলার সামগ্রী। টুর্নামেন্টের আয়োজনও করা হয়নি। ফলে কমিটি ও সংস্থা কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় কয়েকজন তরুণ ফুটবলার ও ক্রিকেটার জানান, খেলাধুলার প্রতি তাদের প্রবল ভালোবাসা থাকলেও মাঠে নিয়মিত আয়োজন না থাকায় তারা হতাশ। এক তরুণ বলেন, “আমরা নিজেদের চাঁদা তুলে বল-ব্যাট কিনি, মাঝে মাঝে খেলি। এতে অন্তত খেলার চর্চাটা বেঁচে থাকে। ক্রীড়া সংস্থা যদি একটু সহায়তা করত, তাহলে নতুন প্রজন্ম আরো আগ্রহী হতো।”

স্থানীয় ক্রীড়াপ্রেমিদের দাবি, কালীগঞ্জের প্রতিটি খেলার মাঠের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। খেলাধুলার মাধ্যমে তরুণদের সুস্থ বিনোদনের সুযোগ দিতে হবে। অন্যথায় খেলাধুলার ঐতিহ্য হারানোর পাশাপাশি সমাজে মাদক ও অসামাজিক কার্যকলাপ বেড়ে যাবে।

ক্রিকেটপ্রেমী শাকিল হোসেন বলেন, “আমাদের কালীগঞ্জে মাঠ আছে, খেলোয়াড়ও আছে কিন্তু উদ্যোগ নেই। তাই অনেক তরুণ খেলাধুলা থেকে দূরে গিয়ে স্মার্টফোন ও মাদকে আসক্ত হচ্ছে। এতে করে জাতির ভবিষ্যৎ বিপথে যাচ্ছে।”

সাবেক ফুটবলার মামুন আকন্দ বলেন, “আমার বড় চাচা শারফুদ্দিন পাকিস্তান আমলে জাতীয় দলে খেলেছেন। সে সময় কালীগঞ্জে ফুটবলই ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। অথচ এখন ফুটবলে কোনো লিগই হয় না। গাজীপুরের অন্য উপজেলাগুলোতে নিয়মিত লিগ হয়, কিন্তু আমাদের কালীগঞ্জে নেই। ফলে আজ দ্বিতীয় বা তৃতীয় বিভাগের মতো খেলোয়াড়ও পাওয়া যাচ্ছে না। এ দায় পুরোপুরি ক্রীড়া সংস্থার।”

কালীগঞ্জ উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো.

মোশারফ হোসেন বলেন, “যখন আমি দায়িত্বে ছিলাম, তখন উদ্যোগ নিয়ে বিভিন্ন টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছি। এতে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলায় মনোযোগী হতো। তরুণদের খারাপ অভ্যাস থেকে দূরে রাখতে ক্রীড়া সংস্থা বা সরকারের উদ্যোগে নিয়মিত খেলার আয়োজনের বিকল্প নেই।”

কালীগঞ্জ উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সচিব ইসমাইল ভূঁইয়া বলেন, ‘‘বর্তমানে কালীগঞ্জ পাইলট স্কুল মাঠটি খেলাধুলার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাই মাঠটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং ক্রীড়া সংস্থার ব্যবস্থাপনায় শিগগিরই এখানে বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করা হবে।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘আগামী মাস থেকে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে খেলাধুলার কার্যক্রম শুরু হবে। পরে ধাপে ধাপে কেন্দ্রীয় এ মাঠে বৃহত্তর আয়োজন করা হবে।’’

নবনিযুক্ত কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ক্রীড়া সংস্থার আহ্বায়ক এটিএম কামরুল ইসলাম বলেন, ‘‘দুই সপ্তাহ আগে আমি এ উপজেলায় যোগ দিয়েছি। ইতোমধ্যে ক্রীড়া সংস্থার অফিস ও খেলার মাঠ পরিদর্শন করেছি। শিক্ষা অফিসারদের সঙ্গে আলোচনা করেছি।’’

তিনি আশাবাদী, দ্রুততম সময়ের মধ্যে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার মাধ্যমে উপজেলাজুড়ে খেলাধুলার কার্যক্রম চালু করা হবে। এতে করে উঠতি বয়সের তরুণরা খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকবে এবং সঠিক পথে এগিয়ে যাবে। 
 

ঢাকা/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত উদ য গ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

‘ফিরিয়ে দাও’ থেকে ‘ধূসর সময়’: সিডনিতে একই মঞ্চে মাইলস ও আর্টসেল

সিডনির বসন্তের সন্ধ্যা। লিভারপুলের হুইটল্যাম লেজার সেন্টারের বাইরে তখন লম্বা লাইন—হাতে পতাকা, কাঁধে ব্যাগ, চোখে প্রত্যাশা। সাউন্ডচেকের শব্দ ভেসে আসছে বাইরে। ভেতরে যেন উন্মুখ এক ‘সাগর’, যেখানে মিশে আছে দুই প্রজন্মের মুখ, কণ্ঠ আর স্মৃতি। শনিবার রাতটি হয়ে উঠেছিল প্রবাসী বাঙালিদের জন্য এক ব্যতিক্রমী উৎসব—বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের দুই যুগের দুই প্রতীক, মাইলস ও আর্টসেল; প্রথমবারের মতো একই মঞ্চে গান করল সিডনিতে।
‘গ্রিনফিল্ড এন্টারটেইনমেন্ট’ আয়োজিত এই ‘মিউজিক ফেস্ট’ ঘিরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে যে উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছিল, তা যেন উপচে পড়ল সেই রাতে। টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার পরপরই সব শেষ। অনুষ্ঠান শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে থেকেই সিডনির দক্ষিণ-পশ্চিম উপশহর লিভারপুলের রাস্তাগুলো ভরে গেল গানের ভক্তে।

আয়োজনের আগে ভিডিও বার্তায় মাইলস জানায় তাদের উচ্ছ্বাস। ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য হামিন আহমেদ বলেন, ‘সিডনি বরাবরই আমাদের কাছে বিশেষ কিছু। সম্ভবত ১৯৯৬ সালে আমরাই প্রথম বাংলাদেশি ব্যান্ড হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় পারফর্ম করি। এরপর এ নিয়ে অন্তত পঞ্চমবারের মতো সিডনিতে এলাম। এখানকার দর্শকদের ভালোবাসা সব সময়ই অবিশ্বাস্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতাম এটি স্মরণীয় একটি আয়োজন হতে যাচ্ছে। আমরা চেয়েছি সবাই একসঙ্গে গাইবে, চিৎকার করবে—ভক্তরা সেটাই করেছেন।’ গিটারিস্ট তুজো যোগ করেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার পাঁচটি শহরে ট্যুর করছি, কিন্তু সিডনির আবহ একেবারেই আলাদা। দর্শকেরা আমাদের রাতটিকে স্মরণীয় করে দিয়েছেন।’

মঞ্চে আর্টসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ