ভারতের বিপক্ষে হারের পর সেমিফাইনালে যাওয়ার আশা ‘খতম’ ঘোষণা দিয়েছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান। তবু কাগজে-কলমে ছিল আশা। নিউজিল্যান্ডকে নাজমুল শান্তরা হারাতে পারলে জমে যেত গ্রুপ ‘এ’র শেষ চারের লড়াই। তা পারেনি বাংলাদেশ। রাচিন রবীন্দ্রর সেঞ্চুরিতে হেরেছে ৫ উইকেটে। পাকিস্তানের সঙ্গে শেষ হয়ে গেছে টাইগারদের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন। ২৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ও পাকিস্তান নিয়ম রক্ষার ম্যাচ খেলতে নামবে।

রাওয়ালপিন্ডি বড় রানের উইকেট। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক মিশেল স্যান্টনার ও বাংলাদেশ কোচ ফিল সিমন্স ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে একমত হয়েছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশ ভালো ব্যাটিং করতে পারেনি। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৩৬ রানে থামেন শান্তরা। ওই রান নিউজিল্যান্ড ২৩ বল থাকতে তাড়া করেছে। তবে রাচিন রবীন্দ্র ছাড়া নির্ভার ব্যাটিং করতে পারেননি ব্ল্যাক ক্যাপসদের কেউ।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ৪৫ রানের ওপেনিং জুটি পায়। তানজিদ তামিম ২৪ বলে দুই ছক্কা ও এক চারে ২৪ রান করে আউট হন। কিউই স্পিনার ব্রেসওয়েলকে শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন তিনি। পরেই নির্ভার ব্যাটিংয়ে আশা দেওয়া মেহেদী মিরাজ ১৪ বলে এক চার ও এক ছক্কায় ১৩ রান করে আউট হন। পরে মাইকেল ব্রেসওয়েলকে উইকেট দেওয়ার ‘নেশায়’ ১১৮  রানে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

তাওহীদ হৃদয় ক্রিজে ধুঁকে ধুঁকে ২৪ বল খেলে ৭ রান করে ব্রেসওয়েলকে শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন। মুশফিকুর রহিম ক্রিজে এসেই স্লগ সুইপে বড় শট খেলে ২ রান সীমানায় আউট হন। ব্রেসওয়েলকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে উইকেট বিলিয়ে দেন মাহমদুউল্লাহও। তিনি ১৪ বলে ৪ রান যোগ করেন। ওপেনিংয়ে নামা নাজমুল শান্ত ১১০ বলে ৭৭ রানের ইনিংস খেলে এবং জাকের ৪৫ ও রিশাদ ২৬ রান করে সংগ্রহ দুইশ’ পার করেন।

জবাবে নামা কিউই শিবিরে শূন্য রানে প্রথম ধাক্কা দেন তাসকিন আহমেদ। ওপেনার উইল ইয়ংকে বোল্ড করেন তিনি। পরেই অভিজ্ঞ কেন উইলিয়ামসনকে আউট করেন নাহিদ রানা। নিউজিল্যান্ড তখন ১৫ রানে ২ উইকেট।  ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবীন্দ্রর সেট হওয়া জুটি ভেঙে দলকে ম্যাচে ফেরান মুস্তাফিজুর রহমান। কনওয়ে দলের ৭৩ রানে ব্যক্তিগত ৩০ রানে ফিরে যান।

কিন্তু রাচিন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করে ও টম ল্যাথামের সঙ্গে জুটি গড়ে ম্যাচ বের করে নেন। ইনজুরি কাটিয়ে বাংলাদেশ ম্যাচের একাদশে ফেরা রাচিন ১০৫ বলে ১১২ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন। ১২ চারের সঙ্গে একটি ছক্কা মারা এই ব্যাটার কোন সুযোগই দেননি বাংলাদেশকে। ল্যাথাম ৫৫ করে রান আউট হন।

নিউজিল্যান্ডের স্পিনার ব্রেসওয়েল ২৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন। ইনিংসের নবম ওভারে বোলিংয়ে এসে ২৭ ওভারের মধ্যে নিজের দশ ওভার শেষ করেন তিনি। বাংলাদেশের ইনিংসের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন। উইলিয়াম ও’রোর্কি নেন ২ উইকেট। এই জয়ে গ্রুপ ‘এ’ থেকে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের সেমিফাইনালে খেলা নিশ্চিত হয়েছে।  

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব র সওয় ল র ন কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

উত্তেজনার পারদ চড়ছে ওয়েলিংটন টেস্টে

ওয়েলিংটন টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ম্যাচের চিত্র দাঁড়িয়ে রোমাঞ্চের দারপ্রান্তে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসারদের ধারালো বোলিংয়ে মাঝে মাঝে চাপে পড়লেও ডেভন কনওয়ে ও অভিষিক্ত মিচেল হে-র জোড়া ফিফটিতে এগিয়ে থেকেই দিন শেষ করেছে নিউ জিল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে ৭৩ রানের লিড নেওয়ার পর দিনশেষে সফরকারীরা এখনও পিছিয়ে ৪১ রানে; হাতে রয়েছে ৮ উইকেট।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলাররা শুরুতে সুইং আর বাউন্সে কিউই ব্যাটারদের নানাভাবে কাঁপিয়েছে। আলগা শটে উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার ভুলও করেছে স্বাগতিকরা। তবে কনওয়ে ও হে সেই চাপ সামলে জুটি গড়ে ম্যাচে ফেরেন।

আরো পড়ুন:

অস্ট্রেলিয়ার দল ঘোষণা, অধিনায়ক কামিন্স

বিপিএলে খেলতে ১০ ক্রিকেটারকে ছাড়পত্র দিল পাকিস্তান

কনওয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম এবং ক্যারিয়ারের ১৩তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন, করেন ৬০ রান। অন্যদিকে, ব্যাট হাতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া মিচেল হে আত্মবিশ্বাসী ৬১ রানের ইনিংসে মুগ্ধ করেন। দুজনের মিলিত প্রচেষ্টায় নিউ জিল্যান্ড ৯ উইকেটে ২৭৮ রান তোলে। চোটের কারণে ব্লেয়ার টিকনার ব্যাট করেননি। তাতে ২৭৮ রানে থামে কিউইদের প্রথম ইনিংস।

দ্বিতীয় দিনের শুরুতে নতুন বলে কেমার রোচ, জেডেন সিলস, ওজে শিল্ডস এবং অ্যান্ডারসন ফিলিপ দারুণ ধারায় ছিলেন। বল দুদিকেই সুইং করছিল, মাঝে মাঝে বাউন্সেও চাপে ফেলছিল ব্যাটারদের। কনওয়ে অবশ্য সুযোগ পেলেই কাট-ফ্লিকে বাউন্ডারি আদায় করে নেন, মারেন আটটি চার।

টম ল্যাথাম (১১) রোচের নিপ–ব্যাক ডেলিভারিতে বোল্ড হন। পরে অ্যান্ডারসন ফিলিপের বলে চকিত হয়ে বোল্ড হন কেন উইলিয়ামসন (৩৭)। মধ্যাহ্নভোজের পর রোচের ওয়াইড বল তাড়া করে ক্যাচ দেন রাচিন রবীন্দ্র। এরপর কনওয়ে ফেরেন জাস্টিন গ্রিভসের তুলনামূলক সহজ ডেলিভারিতে; লেগ সাইডে দুর্দান্ত ডাইভে ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক তেভিন ইমলাচ। ১১৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে তখন কিছুটা বিপাকে নিউ জিল্যান্ড।

এই বিপদ কাটাতে ড্যারিল মিচেল (২৫) ও হে পঞ্চম উইকেটে ৭৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়ে দলকে লিডের কাছে নিয়ে যান। মিচেল ছিলেন সলিড, আর হে খেলেছেন সহজাত ভঙ্গিতে। তার খেলায় শট-কাট, পুল, সবই ছিল আত্মবিশ্বাসী।

তবে দুজনই শেষ পর্যন্ত লেগ সাইডে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন। মিচেল ফিলিপের বলে, হে শিল্ডসের শর্ট বলে পুল মিসটাইম করে। এরপর গ্লেন ফিলিপস (১৮) চেষ্টা করেছিলেন চাপ কমাতে। কিন্তু রোস্টন চেজের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দেন।

শেষদিকে জ্যাক ফাউকস (অপরাজিত ২৩) দৃঢ়তা দেখিয়ে পেসারদের ডিফ্লেকশন থেকে মূল্যবান রান যোগ করেন। ডাফি ও রে-ও কিছু বাউন্ডারি এনে স্কোর বাড়ান। রে তার প্রথম টেস্ট ইনিংসে ১৩ রান করে সিলসের বলে বোল্ড হন। এটা ছিল দ্বিতীয় দিনে সিলসের প্রথম উইকেট।

ব্যাটিংয়ে কিছুটা এলোমেলো হলেও বোলিংয়ে দিনের শেষ ভাগে আবার নিয়ন্ত্রণ নেয় নিউ জিল্যান্ড। মাত্র দশ ওভারেই দুই ওপেনারকে হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জন ক্যাম্পবেল রে-র ইনসুইংয়ে বোল্ড হন। পরের ওভারে নাইটওয়াচম্যান ফিলিপ প্রথমে ডিআরএসে বাঁচলেও পরের বলেই এলবিডব্লিউর শিকার হন।

শেষদিকে ব্র্যান্ডন কিং (১৫*) ও ক্যাভেম হজ (৩*) কোনো রকমে দিন পার করে দেন। তবে লিড কমাতে শুক্রবার সকালে তাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উত্তেজনার পারদ চড়ছে ওয়েলিংটন টেস্টে