আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। আগের আসরের সেমিফাইনালিস্ট দলটি এবারের আসরে প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ৬ উইকেটে হেরে যায়। দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ উইকেটে হেরে বিদায় নেয় টুর্নামেন্ট থেকে। দলের ব্যর্থতার বড় কারণ হিসেবে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বাজে পারফরম্যান্সকে দায়ী করেছেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার দীনেশ কার্তিক।

ক্রিকবাজের এক টকশোতে কার্তিক বলেন, 'আমি ভেবেছিলাম ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পরই মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ অবসর নেবে। কিন্তু তারা এখনো খেলছে, যা দেখে আমি অবাক হয়েছি। তারা ১৬-১৭ বছর ধরে জাতীয় দলে আছে, কিন্তু দেশের জন্য কোনো বড় শিরোপা জিততে পারেনি।'

বাংলাদেশের ক্রিকেটে নতুনদের সুযোগ না পাওয়া নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেছেন কার্তিক। তার মতে, সিনিয়র খেলোয়াড়দের দীর্ঘদিন ধরে খেলানোয় তরুণরা পর্যাপ্ত সুযোগ পাচ্ছে না। যদি ব্যর্থ খেলোয়াড়দেরই বারবার সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে জুনিয়রদের মনোবল ভাঙা ছাড়া আর কিছুই হবে না, বলেন তিনি।

বিসিবির ক্রিকেট নীতিরও কঠোর সমালোচনা করেছেন কার্তিক। বিশেষ করে দেশের মাটিতে স্পিন সহায়ক উইকেট বানিয়ে সাফল্য পাওয়ার প্রবণতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। নিউজিল্যান্ড কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে স্পিন নির্ভর উইকেট বানিয়ে জেতার চেষ্টা করে বাংলাদেশ। কিন্তু বিদেশে গেলেই তারা বিপদে পড়ে, বলেন সাবেক এই ভারতীয় ক্রিকেটার।

বিসিবির আর্থিক সক্ষমতার প্রসঙ্গ টেনে কার্তিক বলেন, 'ভারতের পর বাংলাদেশেরই একমাত্র বোর্ড, যারা ঋণমুক্ত। তাদের কোনো অর্থনৈতিক সমস্যা নেই। অথচ তারা আন্তর্জাতিক সাফল্য পাচ্ছে না, যা একদমই গ্রহণযোগ্য নয়।'

প্রসঙ্গত, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম ম্যাচে ইনজুরির কারণে মাহমুদউল্লাহ খেলতে পারেননি। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে একাদশে ফিরেও ভালো করতে পারেননি, ১৪ বলে মাত্র ৪ রান করে আউট হয়েছেন। অন্যদিকে, মুশফিক প্রথম ম্যাচে শূন্য রানে আউট হওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে করেছেন মাত্র ২ রান। সর্বশেষ তিন ওয়ানডেতে তার সংগ্রহ মাত্র ৩ রান।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর ছ ন উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের প্রস্তাব মাওবাদীদের
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত