মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে ১৫ জনকে ঠেলে দিল বিএসএফ
Published: 26th, February 2025 GMT
মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর মাঝপাড়া সীমান্ত দিয়ে ১৫ জনকে ঠেলে (পুশব্যাক) বাংলাদেশে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
যাঁদের ঠেলে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে তাঁরা হলেন পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিশ্বনাথপুর গ্রামের শিবাস হালদার (৫০), তাঁর ছেলে হরিদাস হালদার (২৪), চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার হরিশপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম (২০), নরেন্দ্রপুর থানার আক্কাস আলী (২৮), রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সারেংপুর গ্রামের শাহিন আলী (২৭), চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের কাজীব আলী (২৩), হরিশপুর গ্রামের আবদুল্লাহ (২৭), পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার বালিয়াপাড়া গ্রামের ইসাহাক আলী, তাঁর ছেলে আজিল আলী (৪৫), কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা-১৬ নম্বর ক্যাম্পে বসবাস করা তরুণ রিয়াজ (২৪)। বাকি পাঁচজনের নাম প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি।
সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলো বলেন, ২০১৮ সালের শুরুর দিকে দালালের খপ্পরে পড়ে সংযুক্ত আরব-আমিরাতে যাওয়ার লক্ষ্যে ভারতে যান তিনি। ভারতের তামিলনাড়ুতে একটি বহুতল ভবন নির্মাণকাজে লাগিয়ে দালাল চক্র লাপাত্তা হয়ে যায়। এর পর থেকে সেখানে অল্প বেতনে কাজ করছিলেন। গত বছরে জুলাই মাসে ভারতীয় পুলিশ তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। এর পর থেকে তিনি ভারতে কারাবন্দী ছিলেন।
মুজিবনগর থানার পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভারতে অনুপ্রবেশের দায়ে ওই ব্যক্তিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছিল। সাজা ভোগ শেষে তাঁদের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর কারাগার থেকে নদিয়া জেলার হৃদয়পুর সীমান্ত দিয়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মুজিবনগরের নাজিরাকোনা সীমান্ত দিয়ে ঠেলে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। সীমান্ত পার হয়ে এসে তাঁরা মুজিবনগর উপজেলার কেদারগঞ্জ বাজারের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করেন। পরে আজ বুধবার সকালে বিভিন্ন পরিবহনের মাধ্যমে নিজ নিজ গন্তব্যের পথে রওনা হন তাঁরা। বিষয়টি পুলিশ টের পাওয়ার আগেই তাঁরা সীমান্ত এলাকা ছেড়ে চলে যান। তবে তাঁদের ধরতে পুলিশ এলাকায় তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে।
আজিল আলী বলেন, একটু ভালো বেতনের আশায় কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে ছেলেসহ ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজও করেছেন। হঠাৎ একদিন পুলিশ এসে তাঁদের গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এর পর থেকে তাঁরা কারাগারে ছিলেন।
মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ১৫ জনের একটি দলকে বিএসএফ সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে। এলাকায় তল্লাশি চলছে। যে কয়জনের নাম-ঠিকানা পাওয়া গেছে, তাঁদের এলাকার সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দুই সীমান্ত দিয়ে ২৮ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
পঞ্চগড় ও মৌলভীবাজার সীমান্ত দিয়ে ২৮ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল শুক্রবার গভীর রাত থেকে আজ শনিবার ভোর পর্যন্ত তাঁদের ঠেলে পাঠানো হয়। তাঁদের আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
পঞ্চগড়পঞ্চগড়ের দুটি সীমান্ত এলাকা দিয়ে ৪ জন ভারতীয় নাগরিকসহ মোট ১৬ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ। সদর উপজেলার মিস্ত্রিপাড়া সীমান্তে ১১ জন এবং তেঁতুলিয়া উপজেলার পেদিয়াগছ সীমান্তে ৫ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ।
সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশের মাধ্যমে আটক বাংলাদেশিদের পবিরারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। ভারতীয় পরিচয় দেওয়া চারজনের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ভারতে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা চালাচ্ছে বিজিবি।
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আটক ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে ভারতে ছিলেন। তাঁদের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিরা সেখানে বিভিন্ন কাজ করতেন। সম্প্রতি তাঁদের ভারতের মুম্বাই ও এর আশপাশের এলাকা থেকে ভারতীয় পুলিশ আটক করে উড়োজাহাজে করে কলকাতায় পাঠায়। পরে বাসে করে সীমান্তে এনে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়। ভারতীয়দের বিএসএফের মাধ্যমে ফেরত পাঠানো হবে। এ ঘটনায় বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠক ডাকা হয়েছে।
এর আগে গত ১৬ মে ১১ জন, ২১ মে ২১ জন, ২ জুন ২৬ জন ও ১৩ জুন সাতজনকে পঞ্চগড়ের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ঠেলে বাংলাদেশে পাঠায় বিএসএফ।
মৌলভীবাজারমৌলভীবাজারের বড়লেখার কুমারশাইল সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ আরও ১২ জনকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ। প্রাথমিক পরিচয় যাচাই-বাছাই শেষে তাদের বড়লেখা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে কুমারশাইল সীমান্ত এলাকা থেকে বিজিবি নারী-শিশুসহ ১২ জনকে আটক করে। আটক ব্যক্তিরা নিজেদের রোহিঙ্গা হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।
মৌলভীবাজার ৫২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আরিফুল হক চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কাশেম সরকার বলেন, যাচাই-বাছাই করে আটক ব্যক্তিদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।