গাজার যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে ইসরায়েল-হামাস আলোচনা শুরু
Published: 28th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
অধিকৃত গাজায় যুদ্ধবিরতির পরবর্তী পর্যায় নিয়ে মিশরের রাজধানী কায়রোতে ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। মিশরীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, শনিবার যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ের মেয়াদ শেষ হবে। খবর আল জাজিরার।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সার বলেছেন, চুক্তির মেয়াদ আরও বাড়ানো প্রয়োজন কি না সে বিষয়ে আলোচনা করতে একটি ইসরায়েলি প্রতিনিধি দল মিশর সফর করছে।
এর আগে চার ইসরায়েলি বন্দির মরদেহ হস্তান্তর করে হামাস। এসব মৃতদেহ যাচাইয়ে বেশ সময় নিয়েছে ইসরায়েল। পরবর্তীতে ২৪ শিশুসহ ৪৬ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ চালায় ইসরায়েল।
এ বিষয়ে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে, এখন পর্যন্ত গাজায় ৪৮ হাজার ৩৬৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ১ লাখ ১১ হাজার ৭৮০ জন। গাজায় রীতিমত ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।
এদিকে গাজায় সামরিক অভিযানে ইসরায়েল মানবাধিকারের প্রতি নজিরবিহীন অবহেলা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান। হামাসও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে বলে মনে করেন তিনি।
জেনেভায় মানবাধিকার কাউন্সিলে গাজা, ইসরায়েল-অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করার সময় ভলকার তুর্ক এই মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেন, ইসরায়েল গাজায় ভয়াবহভাবে যে সামরিক অভিযান চালিয়েছে সেটি ধারাবাহিকভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে। তা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।
ইসরায়েল অবশ্য বরাবরই গাজা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে যুদ্ধাপরাধ ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করে এসেছে। ইসরায়েলের নেতাদের দাবি, তাদের অভিযান কেবল হামাসকে লক্ষ্য করে।
এনজে
.উৎস: SunBD 24
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা
মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমাই দেশে প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম দেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেন। একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এন লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
‘বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটি’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।
আলোচনা সভায় লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ১৯৫৫-৬৫ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘বাইনারি বিভাজন’ পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশে সরকার। ‘বাইনারি’ মনস্তত্ত্বকে এখনো এই দেশে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এম এন লারমা ‘বাঙালি হেজিমনি’র বিরুদ্ধে আত্মপরিচয়ের বয়ান বাঁচিয়ে রাখতে তৎকালে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন।
জেএসএসের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নকালেই এসব বিষয় নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।
দীপায়ন খীসা বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কখনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। আমরাও এই দেশের অংশ। তাহলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের কেন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হলো না?’ তিনি বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরও অংশীদারত্ব আছে। কিন্তু অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তাদেরই ভুলে গেল এই সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, ‘বাঙালি হয়ে যাও’ কথাটার পেছনে বাঙালি মুসলিমদের জাত্যভিমানের ব্যাপারটি রয়েছে। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা।
অনুষ্ঠানটি শুরু হয় এম এন লারমাকে সম্মান জানিয়ে কবিতা পাঠের মাধ্যমে। কবিতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেই চাকমা ও লাল নিকিম বম। কবিতা আবৃত্তির পর এম এন লারমার জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা, জেএসএসের কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা।